বাঘ পাষাণ তো বাপ পিশাচ

188

জামাই হারামহোর বিলাই হারামহোর চাটগাঁইয়া প্রবাদ, অর্থ- বিড়াল যেমন বিশ্বাসঘাতক জামাইও তেমন বিশ্বাসঘাতক হয়। তবে তাই বলে বাঘ যেমন হিংস্র, বাপও কি তেমন হিংস্র হতে পারে? হিংস্র নয় শুধু দস্তুরমত পিশাচ! বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করার পূর্বে আমি এখানে দুটি পৌরাণিক গাঁথা তুলে ধরতে চাই। এক হল ইডিপাসের কাহিনী বড় দুঃখজনক এক গল্প, হাজার বছর পূর্বের একটি কল্প কাহিনী আজও মানুষকে পীড়া দেয়। তা তো দেবে কারণ কেউ কখনো ভাবতে পারেনা বাবাকে হত্যা করে মাকে বিয়ে করার এমন একটি জঘন্য কাহিনী। আচ্ছা ইডিপাসের ঘটনা কি নিছকই এক কল্পনা, না তেমন কিছু তৎকালে ঘটে ছিল? মানুষ যেহেতু পৃথিবীকে দেখেই সব শেখে, হতে পারে এমন কিছু তখন সে দেখেছিল। হতে পারে ঘটে ছিল কিংবা নিছক কল্পনা, তবে তা ছিল সম্পূর্ণ নিয়তির খেলা ইডিপাসের তাতে কোন হাতই ছিল না। সেখানে ইডিপাস ছিল বরাবরই নিয়তির হাতের পুতুল, তাকে বারবার দেখা গিয়েছে নিয়তির হাত থেকে পালিয়ে বাঁচতে। কিন্তু নিয়তি বারবারই তাকে এনে ফেলেছে, তার না চাওয়া কর্মের যজ্ঞক্ষেত্রে। ফলে ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস নিজের সম্পূর্ণ অজ্ঞাতে ইডিপাসকে করতে হয়েছে জগতের ঘৃণ্যতম অপকর্ম পিতাকে হত্যা করে নিজের মাকে বিয়ে! চিন্তা নয় শুধু মনে আনতেও চরম ঘৃণা হয় এমন একটি ঘটনা, যা ইডিপাসকে করতে হয়েছে নিবৃত্ত থাকার শত চেষ্টা করে যাওয়া সত্তে¡ও। অতএব এ ঘটনায় ইডিপাসকে মোটেও দায়ী করা যায় না, সব দোষ নিয়তির তথাপি সে চরম প্রায়শ্চিত্ত করেছে। নিজেকে তিলে তিলে শেষ করেছে কারণ সে মানুষ, মানুষ হয়ে অজান্তে ঘটলেও এমন একটি ঘটনার দায়ভার কখনো সারাজীবন বয়ে বেড়ানো সম্ভব নয়। তাই ইডিপাস হয়তো নিজেকে শেষ করে ভাগ্যের উপর প্রতিশোধ নিয়েছে।
এবার আরেকটি পৌরাণিক ট্রাজেডি বলি, এক বৃদ্ধ রাজা, ছিলেন ভীষণ লোভী। এত সম্পদ তথাপি তার সন্তুষ্টি নাই, ফলে একদিন তার নিকট এক স্বর্গীয় দূত এলেন। দূত তাকে জিজ্ঞেস করলেন; তুমি কি চাও? রাজা দূতকে বললেন; আমি যা স্পর্শ করি তা’ই যেন স্বর্ণ হয়ে যায় আপনি তেমন এক বর আমাকে দিন দয়া করে। স্বর্গীয় দূত তাই করলেন রাজার মানস্কামনা তিনি পূর্ণ করলেন, দেখে তো রাজা ভীষণ খুশী যা স্পর্শ করছেন তিনি সবই স্বর্ণ হয়ে যাচ্ছে। চরম উত্তেজনা তার মধ্যে একে একে চেয়ার, টেবিল, লোহালক্কড় সব স্বর্ণ হয়ে গেছে, আনন্দের আতিশয্যে খাওয়ার কথা পর্যন্ত ভুলে গেলেন, স্বর্ণ বানাতে বানাতে ক্লান্ত হয়ে অবশেষে এক সময় খাবার খেতে এলেন রাজা। দেখেন খাবার তিনি গ্রহণ করতে পারছেন না, কারণ তার হাতের ছোঁয়া লাগার সাথে সাথে খাবারগুলো সব স্বর্ণ হয়ে যাচ্ছে। স্বর্ণ দেখা যায়, ছোঁয়া যায়, উপভোগ করা যায় কিন্তু ভোগ তো কখনো করা যায়না ফলে স্বর্ণ তিনি খাবেন কি করে? অতএব রাজা পড়লেন এবার সঠিক ঝামেলায়, হাতের ছোঁয়া লাগলেই সব স্বর্ণ হয়ে যায়, ফলে ঘরের দ্রব্যসামগ্রীর পাশাপাশি দাসী-বাঁদিদেরও তিনি স্বর্ণ বানিয়ে ফেলেছেন। বাকী আছে শুধু একমাত্র মেয়েটি, যাকে তিনি অত্যধিক স্নেহ করেন, ফলে ভুলেও তিনি মেয়েকে স্পর্শ করেন না ভয়ে। কিন্তু রাজা তো দিনে দিনে দুর্বল হয়ে পড়ছেন, দেখে মেয়েটি তার আর স্থির থাকতে পারেনা। বাপের এমন দুরবস্থা আর সহ্য করতে না পেরে মেয়ে, বাপকে সাহায্য করতে গেলে ভুলে রাজা প্রাণপ্রিয় মেয়েটি স্পর্শ করে বসেন। সাথে সাথে রাজার প্রাণাধিক প্রিয় কন্যাটি একটি স্বর্ণের মূর্তি হয়ে গেল, হায়রে রাজার সেকি কান্না! নীরব, নিথর, নিস্তব্ধ কন্যাটিকে রাজা বুকে জড়িয়ে ধরে অঝোরধারে অশ্রু বিসর্জন করে যাচ্ছেন, আকুল আকুতি তার; হে দেবরাজ আমার সব নিয়ে যাও বিনিময়ে শুধু আমার মেয়েটিকে তুমি ফিরিয়ে দাও।
অসহায় বৃদ্ধ রাজার করুণ আর্তনাদে ভগবানের কৃপা হল তার প্রতি ফলে সেই দেবদূত যিনি রাজাকে বর (প্রকারান্তরে শাপ) দিয়েছিলেন, আসলেন রাজার গৃহে। পূর্বে দেওয়া বর ফিরিয়ে নিয়ে তিনি রাজাকে নতুন একটি বর দিলেন, ফলে স্বর্ণ হয়ে যাওয়া বস্তুগুলো রাজার হাতের ছোঁয়ায় পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে আসতে লাগল। স্বর্ণ হয়ে যাওয়া কন্যার মূর্তিটি তখন রাজা স্পর্শ করলেন, সাথে সাথে কন্যা জীবন ফিরে পেল। কন্যাকে ফিরে পেয়ে রাজা ভীষণ খুশী আর কিছু তার দরকার নেই, একে একে রাজা স্বর্ণ হয়ে যাওয়া সব বস্তুকে স্পর্শ করে করে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনলেন আবার। সত্যিকার সুখ তিনি খুঁজে পেয়েছেন, তার কন্যাটিই হচ্ছে আসলে তার সকল সুখের উৎস, এতদিন পর তিনি তা বুঝতে পারলেন। কন্যাকে ফিরে পেয়েছেন সব সুখ সব শান্তি তার ফিরে এসেছে, এখন আর কোন দুঃখ নেই, কোন লোভ নেই। আসলে কন্যা হচ্ছে পৃথিবীতে স্রষ্টার এক অনন্য উপহার, অপার কৃপা, স্বর্গীয় রত্ন। পিতার জন্য কন্যা অনেক আদরের ধন, অনেক স্নেহময়ী, মমতাময়ী, অন্তর জুড়ানো আলোকবর্তিকা। কন্যা নাই যার সে বুঝতে পারে শুধুমাত্র কন্যার মর্ম, আর কন্যাকে পেয়ে যে হারিয়েছে তার মত দুখী মনে হয় জগৎ সংসারে কেউ নাই। বাহির হতে ঘরে আসলে মেয়েটি হাত দিয়ে আমার মাথাটি যখন বুলিয়ে দিত, মনে হত তার মত সুখ আর নাই। আমার মেয়ের হাতের ছোঁয়ায় আমি স্বর্গীয় শান্তি খুঁজে পেতাম, মেয়ে হচ্ছে তেমনই একটি খোদার দেওয়া পরম নেয়ামত। মেয়ে নাই যার সে কখনো এ সুখ বুঝতে পারবেনা, আসুন এবার আলোচ্য কথায় আসা যাক।
সেদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ভিডিও দেখলাম, একজন মহিলা, তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের অনেক সাংবাদিক মাইক্রোফোন হাতে আগ্রহ ভরে খেয়াল করলাম সেটি। মহিলার চেহারা দেখানো হয়নি শরীরের পেছন দিক দেখানো হয়েছে, প্রায় দশ মিনিটের ভিডিও শেষের দিকে আবছায়া দেখা গেছে মুখটা, চেনা যায়নি। মহিলা বেশ স্মার্ট, শিক্ষিতা, নিজেকে স্থপতি পরিচয় দিয়েছে বিবাহিতা, এক মেয়ে ও এক ছেলের জননী, স্বামী তার বেশ স্পর্শকাতর সংস্থার উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। মহিলার বর্ণনা মতে স্বামীর অসদাচরণের কারণে সে ডিভোর্স নিয়েছে, সন্তান দু’টি ছ’মাস স্বামীর কাছে ছিল পরে সে তাদের নিজের কাস্টোডিতে নিয়েছে। মেয়েটি বড় বয়স সাত বছর একদিন মেয়ের বাবা এসে গাড়িটি বিক্রি করে দেবে তাই শেষ বারের মত মেয়েকে গাড়িতে করে স্কুলে পৌঁছে দিতে চায় বলে মেয়েকে তার মা’র কাছ থেকে নিয়েগেল। তারপর অনেক কথা, জানাগেল মেয়েটি ধর্ষিতা হয়েছে এবং আগেও তার সাথে এমন আরো ঘটেছে বলে ডাক্তার নিশ্চিত করেছে। সন্তানদের নিজের কাস্টোডিতে এনে মহিলা মেয়েকে আদর করে জিজ্ঞেস করছে, মা’র জন্য তোমার কষ্ট লাগেনি? মেয়ে; রাতে পেটে ব্যথা করত আমি কাঁদতাম, একদিন স্কুলে বমি করেছি। মা; কেন, পাপা কি করত তখন, পাপা দেখেনি? মেয়েটি কান্না করে মাকে; পাপাকে কিছু করবে না তো, পাপাকে কিছু করবে না তো? মহিলা কান্না করে; পাপাকে কেন কিছু করব? মেয়ের ছোট ভাইটি সব ঘটনার নাকি সাক্ষী। সাংবাদিকগণ মহিলাকে; আপনার স্বামীর বিষয় এখন কি করতে চান? মহিলা রেগে; সে আমার স্বামী নয় শুধু আমার সন্তানদের পিতা, পিতা হওয়ারও যোগ্য সে নয়, সে মানুষ নয় আমি পারলে তাকে হত্যা করতাম এখন আইনের কাছে আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবনা ভিডিওটি দেখে আমার কেমন যে লাগছিল, ইচ্ছে করছিল গিয়ে লোকটিকে সোজা গুলি করে দি। আমার স্ত্রীকে দেখালাম এবং বললাম এমন একটি জঘন্য ঘটনা পেপার-পত্রিকায় দেখছিনা যে? সে বলল; এখন কেমনে দেখবে এটি তো আরো আগের ঘটনা, ভিডিওটি আমি কিছুদিন আগে দেখেছি। বিস্মিত হলাম এমন একটি সংবাদ আমার দৃষ্টি এড়াল কিভাবে? ভাবলাম ক’মাস তো বড় টেনশন যাচ্ছে হয়তো সেই ফাঁকে গলে গেছে। জানিনা ঘটনাটি দৈনিকে সংবাদ হয়েছিল কিনা,তবে মহিলা বলেছে সে খিলগাঁও থানায় ও হাতিরঝিল থানাতে মামলা করেছে এবং ভিডিওতে সব পরিচিত টিভি চ্যানেলগুলোর মাইক্রোফোন দেখেছি। তাই ধরে নিচ্ছি ঘটনা সত্যি, তাছাড়া এমন ঘটনা ইতিপূর্বে দেশে-বিদেশে অনেক ঘটেছে, প্রমাণ আছে। মহিলার কথা শুনে আমার নিজেকে নিজের ঘৃণা হচ্ছিল, হায় খোদা, মানুষ এমন পাষন্ড ঘৃণ্য পিশাচ হতে পারে কেমন করে? সে মানুষ নয় নরকের কীট, কন্যা হচ্ছে বেহেশতের ফুল, আল্লাহর কাছ থেকে পাওয়া মহা মূল্যবান হীরক খন্ড। আমি কথা খুঁজে পাচ্ছিনা কি বলব, লজ্জা, ঘৃণা আর ক্ষোভে ভাষা হারিয়ে ফেলছি। এই নরাধমদের শাস্তি কি হওয়া উচিৎ?
সম্ভবত ২০১২ সালের ঘটনা ইতালির আদালত সে দেশের এক নাগরিককে ৩৮৮ বছরের কারাদন্ড দিয়েছিল। আমাদের দেশের সকল প্রধান প্রধান পত্রিকায় সংবাদটি তখন এসেছিল, পত্রিকা অফিসে খোঁজ করলে অবশ্যই পাওয়া যাবে তা। সেই ব্যক্তির অপরাধ তার দুটি কন্যা সন্তান ছিল, তার স্ত্রী তথা কন্যা দুটির মা মারা গেলে সে তার ঔরসজাত ঐ কন্যা দুটিকে নিজের রক্ষিতা বানিয়ে ছিল! বলতে আমার ঘৃণা হচ্ছে মেয়ে দুটিকে সে এমন টর্চার করেছে ভয়ে তারা তার সামনে টু শব্দটি পর্যন্ত করতে পারত না। তাকে দেখা মাত্র তারা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট রোগীর ন্যায় জ্ঞান হারাত, ফলে যা ইচ্ছা তা করত সে তাদের সাথে, কোন বাধা তাকে তারা দিতে পারতনা। এভাবে দিনের পর দিন অত্যাচারের ফলে, তার নরককুন্ডে মেয়ে দুটি গর্ভবতী হয়ে গিয়েছিল। একদিন এক যুবক মেয়ে দুটিকে সেই নরক থেকে উদ্ধার করল এবং আদালতের দ্বারস্থ করল। বিজ্ঞ আদালত সবকিছু শোনে ঐ পশুধর্ম পশুর চাইতেও অধম, পিশাচ, হায়েনার ৩৮৮ বছরের কারাদন্ড দিলেন। জানি অত বছর কেউ বাঁচে না, যেহেতু আদালতের রায় আমাদের কোনই মন্তব্য নাই। সাংবাদিকরা মেয়ে দুটিকে জিজ্ঞেস করল; তোমাদের পিতার রায়ে তোমাদের প্রতিক্রিয়া কি? সাথে সাথে মেয়ে দুটি হিংস্র সিংহীর ন্যায় গর্জন করে উঠে; ‘খবরদার ঐ পাষণ্কেড কোন দিন আপনারা পিতা বলবেন না। তাকে পিতা বললে দুনিয়ার সব পিতাকে অপমান করা হবে, সে নরাধম, পিশাচ। ঐ পশুধম যে পাপ করেছে, তার জন্যে তার গায়ের চামড়া হাজার বার টেনে তুলে নিলেও তার অপরাধের সামান্যতম মার্জনা হবেনা।’ সাংবাদিকরা বলল যে ব্যক্তি তোমাদের উদ্ধার করেছে তার সম্পর্কে কিছু বলো। মেয়েরা বলল; তিনি আমাদের অবতার মহান পুরুষ, আমাদের গায়ের চামড়া দিয়ে হাজার বার তাঁর পায়ের জুতা বানিয়ে দিয়েও তাঁর ঋণ আমরা কখনো শোধ করতে পারবো না।
যেদিন স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়া হল, গাড়িতে মেয়েটি নাকি এক পর্যায়ে ঐ নরাধমের সাথে প্রচÐ রেগে গিয়েছিলো, ফলে রাস্তায় ফেলে দিয়ে তাকে পশুটি চলে গেল। তারপর মেয়ের মা রক্তাক্ত মেয়েটিকে তার ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়ে জঘন্য রিপোর্টটি পেল। ইসলাম ধর্মে এমন অপরাধীর শাস্তি বুক সমান মাটিতে গেড়ে পাথর ছুঁড়ে হত্যা করা। মেয়ের মাকে এখন যদি এপ্রস্তাব করা হয় সাথে সাথে সে রাজি হয়ে যাবে। অথচ প্রগতিশীলগণ এবং নারীবাদীগণ অতি আধুনিকতার ধোঁয়া তুলে ইসলামের সমালোচনা করে। কিন্তু নিজের গায়ে পড়লে তখন ইসলামকে স্বাগত জানায় যা ইতালির মেয়ে দুটির কথাতেও প্রকাশ পেয়েছে। তাদের রায় তো ছিল আরো বেশি কঠোর। অতি আধুনিকতা পাশবিকতার জন্ম দেয়, বাপ হয় তখন বাঘ, বাঘ নিজের বাচ্চাকেও খেয়ে ফেলে নৈতিকতার মানদন্ডে এটি অনেক ভালো আগেরটির থেকে। প্রবন্ধের শিরোনাম; বাঘ পাষাণ তো বাপ পিশাচ ভক্ষক অনেক ভালো ধর্ষকের চাইতে। আল্লাহ তোমার কাছে সাহায্য চাই আমাদের তুমি রহম করো, সিরাতুলমুস্তাকিমের পথে থাকার তৌফিক দাও আমিন।

লেখক : কলামিস্ট