বাকলিয়ায় যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ

151

দশ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে নগরীর বাকলিয়ায় এক গৃহবধূর ওপর র্মিম নির্যাতন চালানো হয়েছে। স্বামীর বেদম প্রহারে মুখমন্ডলসহ সারা শরীরে অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন নিয়ে কানিজ ফাতেমা (৩০) নামের ওই গৃহবধূকে চমেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ভোর রাতে বাকলিয়ায় শাহ আমানত হাউজিং সোসাইটিতে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর ভগ্নিপতি জিয়াউর রহমান পূর্বদেশকে জানান, পটিয়ার বুধপুরা ইউনিয়নের দক্ষিণ হরিণখাইন গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মো. মাসুদ রানা চৌধুরীর সাথে ২০০৭ সালে ফাতেমার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। দশ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে কানিজ ফাতেমাকে বিয়ের পর থেকেই মানসিকভাবে নানা কায়দায় নির্যাতন করে আসছিলেন তার স্বামী মাসুদ রানা। মাঝে-মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হলেও লোকলজ্জার ভয়ে গৃহবধূ ফাতেমা তা চেপে গেছেন। এরই মধ্যে মাসুদ রানা তার স্ত্রীকে না জানিয়ে আরেকটি বিয়েও করেন। এরপর থেকে ফাতেমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাসুদ রানা কাউকে কিছু না জানিয়ে তার নতুন স্ত্রীকে নগরীর বাকলিয়ায় শাহ আমানত হাউজিং সোসাইটির বাসায় নিয়ে আসেন। এ নিয়ে প্রথম স্ত্রী কানিজ ফাতেমার সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। এরই একপর্যায়ে ভোর রাতে ফাতেমাকে বেধড়ক পিটুনি দেন স্বামী মাসুদ রানা। কিল-ঘুষি ও রডের আঘাতে তার মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। পিটুনিতে ফাতেমা সংজ্ঞা হারিয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়লে মাসুদ তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। খবর পেয়ে ফাতেমার ছোট ভাই আরাফাত ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসার দারোয়ান ও অটোরিকশা চালকের সহায়তায় সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ফাতেমাকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে তাকে প্রথমে ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর দুপুরের দিকে তাকে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় ওসিসিতে স্থানান্তর করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে ওসিসির কর্তব্যরত কর্মকর্তা পূর্বদেশকে বলেন, ‘ভিকটিমকে এখানে ভর্তি করিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি তার কাছ থেকে ঘটনার বিবরণসহ বিস্তারিত বিষয়ে জানার চেষ্টা চলছে। সবকিছু জানার পর এখানকার আইনজীবী ও পুলিশ কর্মকর্তার পরামর্শ মোতাবেক এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ভিকটিমের শারীরিক সুস্থতাসহ সবমিলিয়ে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।’