বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সোনালী অধ্যায় চলছে

58

ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এখন সোনালী অধ্যায় চলছে। বাংলাদেশে হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারত। ভবিষ্যতে আরো উন্নয়ন কাজে অংশ নিতে আগ্রহী। ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণেই তা সম্ভব হচ্ছে।
গতকাল রবিবার পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার রামগড়ে নির্মিতব্য স্থলবন্দর ও ফেনী নদীর উপর ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু পরিদর্শনে আসেন ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী। পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভাÐার দরবার শরীফে ফটিকছড়ির সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাÐারীর সাথে এক মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
রীভা গাঙ্গুলী দাশ বলেন, মানুষের সাথে উন্নত সম্পর্কের উদাহরণ হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত। এ সম্পর্ক ভবিষতেও অটুট থাকবে।
বাংলাদেশে স্থলবন্দর সড়ক প্রকল্পের কাজ অনেক এগিয়েছে। যোগাযোগের ক্ষেত্রে দুদেশের সম্পর্ক অনেক মজবুত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মাইজভাÐার দরবার শরীফ ৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশেষ অবদান রেখেছে। সেটি জেনে আমি খুব খুশি হয়েছি। ভারতও মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের পক্ষে এগিয়ে এসেছিল। এটি বাংলাদেশ মনে রেখেছে।
সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাÐারীর সভাপতিত্বে এবং বক্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম সোলায়মানের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার অনিন্দ ব্যানার্জী, ফটিকছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান এইচ এম আবু তৈয়ব, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম তৈহিদুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সায়েদুল আরেফীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ মুজিবুল হক চৌধুরী, তরিকত ফেডারেশনের উপদেষ্টা সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভাÐারী প্রমুখ।
পরে তিনি মাইজভাÐার দরবার শরীফ জেয়ারত করেন এবং বিকালে ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে ফটিকছড়ি ত্যাগ করেন।
রামগড় স্থলবন্দরের
কাজ পরিদর্শন :
রামগড় প্রতিনিধি জানান, রামগড় ও ভারতের সাব্রæম এলাকায় ফেনী নদীতে নির্মাণাধীন ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু-১ এর নির্মাণ কাজ, স্থলবন্দর এলাকা এবং মহামুনি বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলী। গতকাল রবিবার বেলা ১১ টার সময় রিভা গাঙ্গুলী তাঁর সফর সঙ্গীদের নিয়ে রামগড় স্থলবন্দর এলাকায় পৌঁছলে তাঁকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী ও জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৪৩ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল তারিকুল হাকিম, খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম সালাউদ্দিন, জেলা পরিষদ সদস্য মংসুইপ্রæ চৌধুরী অপু ও জুয়েল চাকমা, পার্থ ত্রিপুরা, উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে ইসরাত, অফিসার ইনচার্জ তারেক মো. আব্দুল হান্নানসহ বিভাগীয় কর্মকর্তাবৃন্দ।
পরিদর্শন শেষে ভারতীয় হাইকমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ ও স্থলবন্দর কার্যক্রমের মাধ্যমে দুই দেশের বাণিজ্যিক সুবিধাসহ ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন তৈরি হবে।
এসময় ভারতীয় হাই কমিশনারের সাথে ছিলেন ডেপুটি হাই কমিশনার (চট্টগ্রাম) অনিন্দ্য ব্যানার্জি, ভারতীয় জাতীয় হাইওয়ের প্রজেক্ট প্রধান দিল ভাকসিংসহ পদস্থ কর্মকর্তাগণ। পরে রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে রামগড় পাহাড়ঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের রেস্ট হাউজে ভারতীয় হাই কমিশনারকে বাংলাদেশ পুলিশের চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। পরে মধ্যাহ্ন ভোজ ও বিশ্রাম শেষে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে তিনি রামগড় ত্যাগ করেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ-ভারত এর বিভিন্ন বিভাগের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাসহ জেলা ও উপজেলার স্থানীয় প্রিন্ট মিডিয়ার স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী ঢাকাতে সেতুটির ভিক্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ৮২.৫৭ কোটি ভারতীয় রুপি ব্যয়ে ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৪.৮০ মিটার প্রস্তের ব্রিজের কাজটি ২৭ অক্টোবর ২০১৭ হতে ২৭ এপ্রিল ২০২০ সাল পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।