‘বাংলাদেশ’ এখন বিশ্ব দরবারে মর্যাদাবান এক স্বাধীন দেশের নাম

105

সত্যি, শতভাগ সত্যি; বাংলাদেশ এখন বিশ্ব দরবারে মর্যাদাবান এক আন্তর্জাতিক ব্যক্তি। তবে এই শিরোনামে এই কথা দেখে অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, দেশ কিভাবে ব্যক্তি হয়? অনেকে হাস্যকর বিষয় মনে করে পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন; আবার অনেকে অতি উৎসাহী ও কৌতুহলী হয়ে এক নিমিষেই পড়ে ফেলতে পারেন। যাই হোকনা কেন, লেখার গৌরচন্দ্রিকায় শিরোনামের ব্যাখ্যা না দিলে, শুরুতেই পাঠকের একাংশ হোঁচট খাবার সম্ভাবনা থাকবে বা থাকতে পারে বলে আমার বিশ্বাস। তাই এই প্রসঙ্গে বলতে হয়, যারা আইন পেশায় নিয়োজিত বা যারা আইন বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট, তারা নিশ্চয় ‘আন্তর্জাতিক ব্যক্তি’ সম্পর্কে অবগত আছেন। আন্তর্জাতিক আইনে ‘আন্তর্জাতিক ব্যক্তি’ বলতে কোন ব্যক্তি বা মানুষকে বুঝানো হয়না। আন্তর্জাতিক ব্যক্তি বলতে কোন স্বাধীন রাষ্ট্রের বা দেশের এমন এক স্বত্বাধিকারকে বুঝানো হয়, যার বলে ঐ দেশ, বিভিন্ন দেশের সুযোগ অর্জনে, চুক্তি সম্পাদনে, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে, রাষ্ট্রীয়ভাবে সম মর্যাদা ও অধিকার পাবার যোগ্যতা অর্জন করে থাকে। সাধারণত স্বাধীন সার্বভৌম ও সভ্যরাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃতি পেলে এবং রাষ্ট্রসংঘ বা জাতিসংঘের সদস্য লাভ করতে পারলে আন্তর্জাতিক ব্যক্তির মর্যাদা লাভ করা যায়। আবার স্বীকৃতি পেলে বা জাতিসংঘের সদস্য হলেই কেবল আন্তর্জাতিক ব্যক্তি হওয়া যায়না। আর এই জন্যে ভূটান, প্যালেষ্টাইন ইত্যাদি রাষ্ট্র এখনও আন্তর্জাতিক ব্যক্তি হতে পারেনি। তবে মূলকথা হচ্ছে, স্বাধীন বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জন এবং আন্তর্জাতিক আইনের সুনির্দ্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে, ‘বাংলাদেশ’ অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে, ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্য লাভের মধ্যদিয়ে আন্তর্জাতিক ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে। এই হচ্ছে আন্তর্জাতিক ব্যক্তির ধারণা বা সংজ্ঞা এবং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ব্যক্তি হিসাবে স্বীকৃতি পাবার বিষয়। এই অবস্থায় আবারও শিরোনামে আসি; শিরোনামে আন্তর্জাতিক ব্যক্তির পূর্বে একটা ‘মর্যাদাবান’ বিশেষণ যুক্ত করলাম। সেই বিশেষণ মর্যাদাবান শব্দটির প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করায় হচ্ছে আজকের লেখার উপজীব্য।
প্রথমে বলতে হয় কয়দিন আগে জনৈক বৃদ্ধের সাথে আমার কথোপকথনের ঘটনার কথা। সেই দিন সকালে কালুরঘাটের এক প্রান্তে লাইনের অপেক্ষায় আমাদের গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। পাশে বসা ছিল জনৈক বৃদ্ধ যাত্রী। আনুমানিক বয়স ৬৫ ঊর্ধ্বে। তিনি গাড়িতে বসে কালুরঘাট সেতু না হওয়ার কারণে, লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষারোপ করতে থাকেন একই সাথে মুখ দিয়ে যাচ্ছেতাই গালি দিয়ে যাচ্ছিলেন। আর এই সরকারের আমলে চট্টগ্রামে বা দেশে কোন উন্নয়ন হয়নি বলে উল্লেখ করেন। বৃদ্ধের সাথে বেশ কয়েকজন সংহতি ও সম্মতি প্রকাশ করে কথা বলে যাচ্ছেন। এই অবস্থায় আমি ঐ বৃদ্ধ লোকটিকে চাচা সম্বোধন করে যথাযথ ভক্তিশ্রদ্ধা প্রদর্শন করে নমনীয়ভাবে বিভিন্ন কথার মাধ্যমে তাঁর কথার ভিতর প্রবেশ করলাম। এক পর্যায়ে স্বাভাবিক অবস্থায় এনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, এই নদীটির নাম কি? উনি বলেন কর্ণফুলী। আমি বললাম, দেশে কোন উন্নয়ন হয়নি যে বলছেন, এবার শুনুন; এই কর্ণফুলীর নদীর পানির নীচে যে মাটি আছে এই মাটির ভিতরে ট্যানেল হচ্ছে। আগামী বছর দুয়েক পরে বড় বড় গাড়ি নদীর ভিতর দিয়ে যাবে। বৃদ্ধ লোকটি হেসে বললেন, ‘এই রকম কাজ বৃটিশ আমেরিকাও করতে পারবেনা; তবে সিঙ্গাপুরে নাকি নদীর নীচে সুরঙ্গ দিয়ে গাড়ি চলে শুনেছি।’ আমি দেখলাম লোকটা বেশ কিছু উন্নত দেশের নামও জানে। আমি জিজ্ঞাস করলাম, এই সকল দেশে কখনো গিয়েছে কিনা? বৃদ্ধ বলে ‘যায়নি তবে মানুষ থেকে শুনেছি’। আমি বললাম, হঁ.. মানুষ থেকে যা শুনেছেন, সেই রকম সিঙ্গাপুর হতে চলেছে বাংলাদেশ, এবং তা এই সরকারের আমলেই। আরো জানতে চাইলাম, এই যে কালুরঘাট পুলের উপর যে রেললাইন দেখা যাচ্ছে, এটি দক্ষিণ দিকে কত দূর পর্যন্ত গেছে? বুড়ো লোকটা বলে, ‘দোহাজারী পর্যন্ত’। আমি বললাম, এটি এখন কক্সবাজার পর্যন্ত সম্প্রসারিত হচ্ছে। আপনিসহ দেশের সকল মানুষ রেললাইন দিয়ে কক্সবাজার সাগর (সমুদ্র সৈকত) দেখতে যেতে পারবে। বৃদ্ধকে পদ্মা সেতুর উদাহরণ দিয়ে বললাম, কারো সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া, একেবারে আমাদের দেশের টাকা দিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১ হাজার কোটি ব্যয়ে এই সেতু হচ্ছে। অর্থাৎ এই টাকা দিয়ে এই কালুরঘাট সেতুর মত, বিশেষ করে নতুন ব্রীজের (শাহআমানত ব্রীজ) মত মোটামুটি ১৫০টির বেশী সেতু বানানো যাবে। এরপর রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কে বুঝিয়ে দেবার চেষ্টা করলাম এবং বললাম, এটি হলে দেশে আর লোডশেডিং শব্দটি থাকবেনা। কোন সময় কোন কারণে যদি বিদ্যুৎ চলে যাবার সম্ভাবনা থাকে, তবে এক সপ্তাহ আগে নোটিশ দিয়ে বা ঘোষণা দিয়ে জানিয়ে দিবে, আগামী এত তারিখ দশ মিনিটের জন্যে এই এলাকায় কারেন্ট থাকবেনা। এই প্রকল্পের ১লক্ষ ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় অর্থাৎ টাকার পরিমাণ সম্পর্কে বুঝিয়ে দিলাম, বললাম এই টাকা দিয়ে দেশের সকল মানুষকে প্রায় বছর আধেক প্রতিদিন মাছে ভাতে খাওয়ানো যাবে। এরপর বললাম, চট্টগ্রামে কয়টা দোতলা রাস্তা (ফ্লাই ওভার) আছে জানেন, বহদ্দার হাট ফ্লাইওভার দেখেছেন? এই রকম বিভিন্ন জেলায় ডজনে ডজনে দোতলা রাস্তা নির্মাণ করেছে সরকার। আরো বললাম এই যে কালুরঘাট, কর্ণফুলীর নদীর পশ্চিম তীর দেখছেন, সেখানে হচ্ছে রিং রোড। কালুরঘাট থেকে নদীর তীর দিয়ে বাসে করে সরাসরি চাক্তায় চলে যেতে পারবেন। আর যে কালুরঘাটের কথা বলছেন, এই জায়গায় আগামী দুয়েক বছরের মধ্যে হতে যাচ্ছে মাল্টি-ওয়ে ব্রীজ, যেখান দিয়ে রেল বাস মানুষ এক সাথে চলাচল বা আসা যাওয়া করতে পারবে।
আমি এসব কথা বলে গেলেও বেশীর ভাগ যাত্রী আমার বিপক্ষে অবস্থান নেয়। তাই ভাবলাম, দেশ ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে পরিবর্তন হলেও, মানুষের মন জ্ঞানের মাধ্যমে উন্নয়ন বা পরিবর্তন হয়নি। মানুষের মন ও চেতনা পরিবর্তন করতে না পারলে এই সব উন্নয়ন চোখে দেখেও দেখবেনা, কানে শুনেও শুনবেনা; উন্নয়নের সুফল উপভোগ করতে পারলেও অনুভব করতে পারবেনা। তাই মানুষ যাতে সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে বা বুঝতে পারে, তার জন্যে মানসিক পরিবর্তনের পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় দেশের উন্নয়নের সুফল স্থায়ী ও টেকসই হবেনা।
যাই হোক, আমার এই সব কথা শুনে বিভিন্ন জনের বিরোধিতার মধ্যে কেবল পাশের একজন লোক বা যাত্রী আমাকে উদ্দেশ্যে করে বললেন, আপনার থেকে অনেক যৌক্তিক কথা ও সঠিক তথ্য শুনলাম, কিন্তু হবেনা। আমি বললাম কি হবেনা? তিনি বললেন, বুঝলেন না! ওরা সবাই ‘ভোট দিবেনা নৌকাতে, নৌকা যাবে ভারতে’ এই শ্লোগানের লোক। আমি বললাম ভাই, এখানে কোন পক্ষ বিপক্ষ শ্লোগানের বিষয় নয়, আমিতো রাজনৈতিক কথা বলছিনা। নৌকার পক্ষে সাফাই গাচ্ছিনা। বৃদ্ধলোকটি এই সরকারের আমলে দেশে কিছুই হয়নি বলাতে, এর প্রেক্ষাপটে কিছু উদাহরণ দিলাম মাত্র। আগামী সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, তাই অনেকের মনে হতে পারে আমার এই সব প্রচারণমূলক কথা বার্তা। সত্যিকথা হচ্ছে, এই লেখা আমার নির্বাচনী প্রচার নয়। আওয়ামী লীগের পক্ষের ভোট চাওয়া নয়। জ্ঞান বুদ্ধি বিবেক দিয়ে দেশের সার্বিক অবস্থা দেখে শুনে বুঝে নিরপেক্ষ ব্যক্তি হিসাবে সাদাকে সাদা বলছি। এই সরকারের আমলে দেশের উন্নয়নের কথা বিশ্লেষণ করে বলতে গেলে লেখা শেষ হবেনা। সাধারণভাবে যা চোখে পড়ে- শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, স্বাস্থ্য, কৃষি, লিঙ্গ সমতা, দারিদ্র্য সীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রপ্তানীমুখী শিল্পায়ন, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, পোশাক শিল্প, শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধি, ঔষধ শিল্পের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্বাচন, নারীর ক্ষমতায়ন, বিভিন্ন ধরণের ভাতা যেমন- বয়স্কভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা; বিভিন্ন ধরণে চুক্তি যেমন- গঙ্গার পানি চুক্তি, পার্বত্য শান্তি চুক্তি, ছিটমহল বিনিময় চুক্তি ইত্যাদির মত অসংখ্য সাফল্য যা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে।
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। এই বিষয়ে বিস্ময়কর চূড়ান্ত সফলতার কথা না বললে নয়। জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ননীতি সংক্রান্ত কমিটি (সিডিপি) কোন একটি দেশকে এলডিসি (স্বল্পোন্নত) থেকে উত্তরণের যোগ্যতা নির্ধারণ করে তিনটি সূচকের মানদন্ডের ভিত্তিতে। যেমন- ১)মাথাপিছু আয়, ২)মানব সম্পদ সূচক, ৩)অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা। এই তিন সূচকের যে কোন দুটি অর্জন করে নিতে পারলেই ঐ দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়। কিন্তু বাংলাদেশ তিনটিতে নির্ধারিত স্কোর থেকে আরো অনেক বেশী স্কোর নিয়ে এই যোগ্যতা অর্জন করে এলডিসি থেকে উত্তরণে সক্ষম হয়েছে। বিষয়টি এই রকম, ক্লাস ওয়ানে পড়া কোন শিক্ষার্থী; বাংলা, ইংরেজী, গণিত এই তিনটি বিষয়ে যে কোন দুটিতে পাশ (৩৩% নম্বর) করতে পারলেই দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে পারবে। কিন্তু এক শিক্ষার্থী দেখা গেল প্রতি বিষয়ে ৫০/৬০ নম্বর পেয়ে, একেবারে তিনটি বিষয়ে পাশ করে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। এই শিক্ষার্থীর কি সুন্দর চমৎকার ফলাফল! শিক্ষক শিক্ষার্থী সবাই প্রশংসা করছে। আর সেই শিক্ষার্থীই হচ্ছে বাংলাদেশ।
একটু মুক্তমনে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে অবলোকন করলে অনুধাবন করা যায়, ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্্র বন্দর নির্মাণ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, পদ্মা সেতুনির্মাণ, কর্ণফুলী ট্যানেল, অ্যালিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, এশিয়ান হাইওয়ে রোড প্রকল্প ইত্যাদি যেন কোন যাদুকরের যাদু কাঠির স্পর্শে হয়ে যাচ্ছে। তাও অনেকগুলো আবার নিজেদের অর্থায়নে। ‘উন্নয়ন’ নামক গাড়িটি মহাসড়ক দিয়ে দ্রæত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন কথা হচ্ছে এত টাকা আসে কোথা হতে? সাধারণ অর্থে এটাই হচ্ছে সুযোগ্য নেতার সর্বোত্তম নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য। এখন আমরা মহাকাশ থেকে শুরু করে মহাসাগর পর্যন্ত জয় করতে সক্ষম হয়েছি। আজ বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপন করে মহাকাশে বাংলাদেশের সক্ষমতা বিশ্ববাসীকে প্রদর্শন করেছে বা জানিয়ে দিয়েছি। ভারত ও মায়ানমার সাথে আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইনে লড়াই করে প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার ছিনিয়ে এনেছে। এখন ঐ এলাকার জলজ প্রাণিজ খনিজ সম্পদ এক চেটিয়া অধিকার আমাদের। মানবিকভাবে প্রায় দশ লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে।
প্রতিক্ষেত্রে পার্শ্ববতী বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ৩০-৩৫ বছর আগে উন্নত দেশ হিসাবে আমরা কথায় কথায় জাপান সুইজারল্যান্ডের নাম শুনতাম, ঐ রাষ্ট্রসমূহের উদাহরণ দিতাম। সেই রকম ভাবে এখন বিশ্বের অনেক দেশ আমাদের বাংলাদেশকে উদাহরণ দিয়ে আসছে। অনেক দেশ এখন বাংলাদেশ হতে চাই। গত মাসকয়েক আগে পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলে, অনুষ্ঠিত টকশোতে আলোচকগণ বলেছে, পাকিস্তানকে আগে বাংলাদেশ হতে স্বপ্ন দেখতে হবে। আর এই ‘বাংলাদেশ’ হতে গেলে পাকিস্তানকে এখন থেকে আরো ১৫-২০ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, তখন বাংলাদেশ হয়ত আরো বহুদুর এগিয়ে যাবে। এই হচ্ছে তাদের অভিমত, যারা আমাদের শত্রু ভাবে। বাধ্য হয়ে শত্রুর প্রশংসা করতে হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দেখার সুযোগ হলেও কথা বলার সুযোগ হয়নি। কিন্তু যারা প্রধানমন্ত্রীর সাথে সামনাসামনি বসে কথা বলেছেন, তাদের থেকে সরাসরি শুনেছি। অবাক হয়েছি তাঁর জ্ঞান বুদ্ধি চিন্তা চেতনা ও দুরদর্শিতার কথা শুনে। সৃজনে মননে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তিনি এক চৌকস নেত্রী। এই জাতীয় নেতা কোন একটি দেশে প্রতি একশ বছরে কেবল একজনই জন্মে। যেমনই জন্মেছিলেন মহাত্মা গান্ধী, নেলসন ম্যান্ডেলা, ওয়াশিংটন, শেখ মুজিবুর রহমান প্রমুখ রাজনীতিবিদ। তবে এক্ষেত্রে আমাদের ভাগ্য ভালো, আমরা কম সময়ের মধ্যে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে পেয়েছি, একই সাথে পেয়েছি তাঁরই সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। পরিশেষে এই লেখার শিরোনামের প্রতি সমর্থন রেখে বলতে চাই, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক ব্যক্তির রূপ দিয়েছেন। আর ‘মর্যাদাবান’ আন্তর্জাতিক ব্যক্তিতে পরিণত করেছেন তাঁরই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা। তাই এক বাক্যে শেষ কথা ‘সাবাস বাংলাদেশ, সাবাস শেখ হাসিনা’।
লেখক : শিক্ষক