বাংলাদেশের প্রত্যাশিত জয়

49

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয় পেলো বাংলাদেশ। সাউদাম্পটনে সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে এই বিশ্বকাপে তৃতীয় জয় পেয়েছে তারা। আফগানদের বিপক্ষে ৬২ রানে জিতে সেমিফাইনাল খেলার আশাও বাঁচিয়ে রাখলো মাশরাফির দল।
সোমবার টস হেরে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। মুশফিক ও সাকিবের হাফসেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে ২৬২ রান করে তারা। মুশফিক করেন ৮৩ রান। সাকিব ৫১ রানে আউট হন। এছাড়া তামিমের ৩৬ ও মোসাদ্দেক হোসেনের ৩৫ রান কার্যকরী অবদান রাখে। জবাবে ৪৭ ওভারে ২০০ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। এই জয়ে সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা আরেকটু উজ্জ্বল হলো বাংলাদেশের। সাত ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে মাশরাফিরা এখন উঠে গেছে পঞ্চম স্থানে। তাদের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলা ইংল্যান্ড ৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে চতুর্থ স্থানে।
আফগানদের আটকানোর লক্ষ্যে নেমে তিন পেসার মাশরাফি মুর্তজা, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম ১০ ওভারে সুবিধা করতে পারেননি। দুই ওপেনার গুলবাদিন নাইব ও রহমত শাহের উদ্বোধনী জুটি সতর্ক হয়ে খেলেছে প্রথম পাওয়ার প্লে। তবে সাকিব বল হাতে নিতেই ঘুরে গেলো ম্যাচ। ১১তম ওভারে বল হাতে নিয়েই বাজিমাত করেন তিনি। পঞ্চম বলে রহমত শাহকে (২৪) মিড অনে তামিম ইকবালের ক্যাচ বানান। ভাঙে ৪৯ রানের উদ্বোধনী জুটি।
এরপর প্রতিরোধ গড়েন নাইব ও হাসমতউল্লাহ শহীদী। তাদের জুটি অবশ্য লম্বা হয়নি। ঠিক ১০ ওভার পর তাদের বিচ্ছিন্ন করেন মোসাদ্দেক হোসেন। ২১তম ওভারের পঞ্চম বলে হাসমতের (১১) বিদায় হয় মুশফিকুর রহিমের কাছে স্টাম্পিং হয়ে। এই জুটি ছিল ৩০ রানের।
দুই উইকেট হারালেও আফগানিস্তান লড়াইয়ে টিকে থাকে অধিনায়ক নাইবের ব্যাটে। কিন্তু সাকিবের ঘূর্ণিতে এলোমেলো হয়ে যায় তারা। বাঁহাতি স্পিনারের পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে আউট হন নাইব। হাফসেঞ্চুরির পথে ছুটতে থাকা অধিনায়কের চমৎকার ক্যাচ নেন লিটন দাস। ৭৫ বলে ৩ চারে ৪৭ রান করেন নাইব।
ক্রিজে নেমে দুই বল পর কিছু বুঝে ওঠার আগেই সাকিবের কাছে বোল্ড হন মোহাম্মদ নবী। রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। সাকিব এখানেই থামেননি। তার চতুর্থ শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন আজগর
আফগান। ২০ রান করে ডিপ স্কয়ার লেগে সাব্বির রহমানের ক্যাচ হন তিনি।
আফগানিস্তান ১৩ রানের ব্যবধানে সাকিবের কাছে হারায় তিন ব্যাটসম্যানকে। এরপর লিটনের দুর্দান্ত থ্রোতে ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে। ৩৬তম ওভারের প্রথম বলে রান আউট হন ইকরাম আলী খিল (১১)।
ওই ওভারে সামিউল্লাহ শিনওয়ারির বিরুদ্ধে মেহেদী হাসান মিরাজের এলবিডাবিøউর আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি। এই সুযোগে রান নিতে চেষ্টা করেন ইকরাম। কিন্তু সামনে এগিয়ে গিয়ে নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে ফিরে আসতে হয় তাকে। সীমানায় ঢোকার আগেই লিটন সরাসরি তার স্টাম্প ভাঙেন।
নাজিবউল্লাহ জাদরানকে ফিরিয়ে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন সাকিব আল হাসান। একই আসরে সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট নেওয়া এলিট ক্লাবে যোগ দেন তিনি, যেখানে আছেন যুবরাজ সিং ও কপিল দেবের মতো খেলোয়াড়রা। ২৩ বলে দুটি চারে ২৩ রান করে স্টাম্পিং হন নাজিব।
পরের ওভারে রশিদ খানকে (২) মাশরাফির ক্যাচ বানান মোস্তাফিজ। পরের ওভারে এই বাঁহাতি পেসার দৌলত জাদরানকে রানের খাতা না খুলতে দিয়ে মুশফিকের ক্যাচ বানান। মুজিব উর রহমানকে বোল্ড করে জয় নিশ্চিত করেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৫১ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ৪৯ রানে অপরাজিত ছিলেন শিনওয়ারি।
১০ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন সাকিব। এটাই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। দুটি উইকেট নেন মোস্তাফিজ, একটি করে পান সাইফ ও মোসাদ্দেক। এ ম্যাচেও সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন সাকিব। এনিয়ে তিনটি জয়েই বাঁহাতি অলরাউন্ডার হয়েছেন ম্যাচসেরা।
ক্যাপশন: আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে তাদের ব্যাটিং লাইন একাই ধ্বসিয়ে দিয়েছেন সাকিব, অভিনন্দন জানাচ্ছেন সতীর্থরা।