বাংলাদেশের উন্নয়ন তুলে ধরুন

34

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত দশ বছরে বাংলাদেশ যে বিস্ময়কর উন্নয়ন করেছে তা বিশ্ব গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহবান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল সোমবার বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সরকারের আমন্ত্রণে এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ও উত্তর আমেরিকা থেকে আগত ২৫টি দেশের ৪৭ জন গণমাধ্যম প্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এ আহবান জানান।
বিদেশি গণমাধ্যমের কাছে বাংলাদেশের পরিচিতি তুলে ধরতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও সংগ্রামের মধ্যদিয়ে ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ত্রিশ লাখ প্রাণ ও দুই লাখ মা-বোনের চরম ত্যাগের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনকারী বাংলাদেশ আয়তনে ছোট হলেও ১৬০ মিলিয়ন জনসংখ্যায় বিশ্বের একটি বৃহৎ দেশ। তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। আমরা বিশ্বে মিঠা পানির মাছ ও সবজি উৎপাদনে ৪র্থ এবং আলু উৎপাদনে ৭ম। শুধু তাই নয়, পঞ্চাশের দশকে ৪৭ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে খাদ্য ঘাটতির দেশ, যার ভূমি একটুও বাড়েনি, সেই দেশ আজ খাদ্যশস্যে উদ্বৃত্ত ও রপ্তানিকারক। কৃষিখাতে এ অভূতপূর্ব ঘটনা আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থারও গবেষণার বিষয়’।
আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, আপনারা জেনে আরো খুশি হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য গতিশীল নেতৃত্বে ২০০৮ সালের ৬০০ ডলারের মাথাপিছু আয় তিনগুণ বেড়ে এখন প্রায় ২ হাজার ডলার, রপ্তানি ১০ মিলিয়ন থেকে আজ ৪২ মিলিয়ন ডলার, মানুষের গড় আয়ু ৬৫ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২.৮ বছর। মানবিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সব সূচকে আমরা পাকিস্তানসহ বিশ্বের অনেক দেশ থেকে এগিয়ে আছি।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, গণমাধ্যমের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদারনীতি গ্রহণ করেছেন। ১৯৯৬ সালে দেশ পরিচালনায় এসে শেখ হাসিনা প্রথম বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশনের অনুমতি দেন। বাংলাদেশে গত দশ বছরে গণমাধ্যম স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি প্রসারিত হয়েছে। সরকারি ৪টি টেলিভিশনসহ দেশে অনুমোদিত ৪৪টি বেসরকারি টেলিভিশনের ৩৩টি এখন স¤প্রচারে রয়েছে। ২৮টি অনুমোদিত এফএম বেতারের ২২টি এবং অনুমোদিত ৩২টি কমিউনিটি বেতারের ১৭টির স¤প্রচার চলছে। ২০০৮ সালে বছরে যেখানে ৬০০ দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ হতো, তা এখন প্রায় ১২০০। তখনকার হাতে গোনা অনলাইন নিউজপোর্টালের সংখ্যা এখন প্রায় ৩ হাজার।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু গণমাধ্যমের প্রসারই নয়, গণমাধ্যমের কল্যাণেও বর্তমান সরকারের ভূমিকা সর্বত্র প্রশংসিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারই দেশে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট এবং তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা ও জাতীয় স¤প্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। জাতীয় প্রেস কাবে ৩১তলা বিশিষ্ট ভবন এবং বহুমুখী তথ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের কাজে হাত দিয়েছে, প্রেস ইনস্টিটিউটে পেশাগত প্রশিক্ষণের সঙ্গে চালু করেছে সাংবাদিকতায় মাস্টার্স ডিগ্রি। খবর বাংলানিউজের
শ্রীলংকা, যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, নাইজেরিয়া, মিশর, ভুটান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, গ্রিস, বাহরাইন, জাপান, ব্রাজিল, নেদারল্যান্ডস, উজবেকিস্তান, থাইল্যান্ড, ইথিওপিয়া, তুরস্ক, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, ফ্রান্স, হংকং ও ইতালির বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৪৭জন প্রতিনিধি ১৩-১৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করছে। সভায় বিদেশি সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নেরও জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্যসচিব আবদুল মালেক, প্রধান তথ্য অফিসার জয়নাল আবেদীন, সফর সমন্বয়ক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মাসুদুর রহমান এবং তথ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।