বাংলাকাব্যে রাসূল (সা.) এবং জাতীয় কবির ‘মরু-ভাস্কর’

306

পলাশীর প্রান্তরে সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর উপমহাদেশে মুসলমানদের আকাশে নেমে আসা ঘোর অমানিশায় তাদের হৃদবীর্য-হৃতশক্তি এবং গৌরবময় ঐতিহ্য স্মরণ করিয়ে আত্মমর্যাদায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার মহান দায়িত্ব নিয়ে যে দু’জন কবির আবির্ভাব ঘটে তাঁদের মধ্যে একজন আল্লামা ইকবাল এবং অন্যজন কাজী নজরুল ইসলাম। এই দুই যুগন্ধর কবির লেখনীর মাধ্যমেই উপমহাদেশের মুসলমানেরা পুনরুজ্জীবিত হয়। সঞ্চয় করে ঠিকে থাকার শক্তি। আত্মপরিচয়ে বলিয়ান- কৃষ্টিসচেতন শক্তিমান জাতিতে পরিণত হয়। কাজী নজরুলের জিঞ্জিরসহ অন্যান্য অসংখ্য কবিতায় রয়েছে তার রুদ্র প্রকাশ। তিনি ‘বাঙালি জনগোষ্ঠীর জীবনে নতুনতর সাহিত্যবোধ, সাহিত্যদৃষ্টি এবং সাহিত্য-স্বরূপ-আদর্শ উপস্থাপন করেছেন। তিনি সত্যিকারভাবে বাঙালির চেতনার কবি। মানবতাবাদ, সাম্যবাদ, দেশপ্রেম ও নিবিড় ধর্মবোধের পরিচয় মেলে তাঁর সমগ্র সৃষ্টিকর্মে। বৃহৎ অর্থে নজরুল বিশ্বমানবতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চিন্তা ও সমগ্র কর্ম-পরিসরকে নিবেদন করেছেন’। রবীন্দ্র বলয় ভাঙ্গার এই বংশীবাদকের কলম থেকে বাদ যায়নি প্রকৃতি আর রোমান্টিকতার শৈল্পিক প্রকাশও।
মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর প্রেরিত সর্বশেষ নবী ও রাসূল। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। একমাত্র অনুকরণীয় এবং অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। সম্মোহনী ব্যক্তিত্বের কারণে সহজেই মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারতেন। মৃত্যুর প্রায় সাড়ে চৌদ্দশত বছর পরও তার ব্যক্তিত্ব মানুষকে চুম্বকের মত টানে। এখন শুধুমাত্র তাঁর অনুসারীরাই নয় অনেক বিধর্মীও তাঁর প্রতি অনুরক্ত। তাঁকে নিয়ে আগ্রহের কমতি নেই। হাজার বছরের পুরোনো বাংলা কাব্যের ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে আছে প্রিয় নবি (সা.)। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে তাও আবার এক অমুসলিম কবির কলম থেকে বেরিয়ে আসে এই ঝিলিক। ড. এস এম লুতফুর রহমান এ তথ্য পরিবেশন করতে গিয়ে বলেন: “আনুমানিক নয়, নিশ্চিতরূপেই ১০০০ থেকে ১০২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই বৌদ্ধ কবি রামাই পÐিত রচিত ‘কলিমা জাল্লাল’ নামক রচনায় পহেলা রাসুলে করিম (সা.)-এর তারিফ করা হয়েছে”। তাঁকে অমুসলিমদের ইলাহ (প্রভু বা উপাস্য) ব্রহ্মার সঙ্গে তুলনা কওে গৌড়ে মুসলিম বিজয় অভিযানকে বেহেশতি রহমতরূপে বয়ান করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে :
ব্রহ্মা হৈল মুহাম্মদ বিষ্ণু হৈল পেকাম্বর
আদম্ব হৈল মূল পানি
গণেশ হৈল গাজী কার্ত্তিকা হৈল কাজী
ফকীর হৈল যত মুনি।
[‘নিরঞ্জনের রুষ্ণা’, শূন্য পুরান]
আধুনিক ‘নিরঞ্জনের রুষ্ণা’ কবিতার মূল নামই ‘কলিমা জল্লাল’। মুসলিম কবি হিসেবে মধ্যযুগে প্রথম নবি (সা.) বন্দনা করেন শাহ মুহাম্মদ ছগীর। সে যুগেই হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দিগি¦জয়ের কাহিনী অবলম্বনে কবি জৈনুদ্দীন ‘রাছ‚ল বিজয়’ কাব্য রচনা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় মধ্যযুগের অন্যান্য কবি এবং আধুনিক যুগের কবিরা রাসুলের শৌর্য-বীর্য-মাহাত্ম্য প্রমাণ করে কবিতা লিখেছেন এবং এখনও লিখে যাচ্ছেন। চতুর্দশ শতাব্দী থেকে শুরু করে উনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ছ’শ বছরে মুসলিম কবিরা রাসূল (সা.) এর উপর প্রায় পঁয়তাল্লিশটার মত কাব্য রচনা করেন। আধুনিক যুগে মোজাম্মেল হক (হযরত মোহাম্মদ), মীর মশাররফ হোসেন (মদিনার গৌরব), আবুল হোসেন ভট্টাচার্য (মরুর ফুল), ফররুখ আহমদ (সিরাজাম মুনীরা), শ্যামাপদ বর্মন কবিরতœ (রসূলনামা), সৈয়দ শামসুল হুদা (আলোর আলো) সহ আরও অনেক কবি নবি (সা.) কে নিয়ে কাব্য রচনা করেছেন। এক্ষেত্রে কাজী নজরুল ইসলামের ‘মরু-ভাস্কর’ নবি (সা.) এর অস¤পূর্ণ (জীবনী) কিন্তু সাহিত্যমানে ভরপুর একটি কাব্য।
মহৎ কবি-সাহিত্যিকদের মত কাজী নজরুল ইসলামও স্ব-জাতি তথা মুসলমানদের জন্য তাঁর জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভেবেছেন। কাজ করেছেন। বিশেষ করে বাঙালি মুসলিম সমাজের জন্য তাঁর কলম ছিল তী²-ক্ষুরধার। আর এ জন্যই তিনি নিজের পরিচয়ে ‘খাদেমুল ইসলাম নজরুল ইসলাম’ লিখতেও একটুও কুণ্ঠাবোধ করেননি। তিনি তাঁর লেখনীতে বিশ্ব মানবুার মুক্তিদূত, স্বাধীনতার মুক্তির সনদ ও করুণার মূর্ত প্রতীক আখেরি নবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতি যে বর্ণনাতীত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন তা হয়তো আর কোন বাঙালি সাহিত্যিক দেখিয়ে যাননি। গান-কবিতা সব জায়গায় তিনি রাসূল (সা.) প্রেমের এক দ্যুতি ছড়িয়েছেন। যা আজও কোটি মুসলমানদের মুখের কথা, প্রাণের কথা। রাসূল প্রেমে এমন এক মহান সাধক ও বাধ্য শিষ্য বাংলাসাহিত্যে সত্যিই বিরল।
ঊসন্ত রোগে কাজী নজরুল ইসলামের পুত্র বুলবুল মারা গেলে কবি খুবই শোকাহত হয়ে পড়েন এবং আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকে পড়েন। অনেকটা সেই সময়ই অর্থাৎ ১৯৩০ সালে কবি ‘মরু-ভাস্কর’ লেখা শুরু করেন বলে জানান আবদুল মান্নান সৈয়দ। পরের বছর ডি. এম. লাইব্রেরির মালিক গোপালদাস মজুমদারের সাথে শিলঙে যাওয়ার কথা থাকলেও মনোরঞ্জন চক্রবর্তী বিশ্বনবি (সা.) এর জীবনী লেখার জন্য কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে যান দার্জিলিঙে। এখন ‘মরু-ভাস্কর’ এর যে অনগশটুকু আমরা পাই তা অনেকটাই দার্জিলিঙে বসে লেখা। বর্ণনা ভঙ্গি দেখে এটা সহজেই অনুমেয় যে লেখাটি একটানা-ই লিখে শেষ করেছেন কবি। তবে পূর্ণ জীবনী লিখে যেতে পারেননি। কবি ‘মরু-ভাস্কর’ লেখা শুরু করেন ১৯৩০ সালে আর কবি অসুস্থ হন ১৯৪২ সালে। এই সময়ের মধ্যে তিনি প্রায় পঞ্চাশটির মত গ্রন্থ রচনা করলেও প্রবল আগ্রহ থাকা সত্তে¡ও কেনো নবি (সা.)’র জীবনী শেষ করতে পারেননি তা রীতিমত যেমন বিষ্ময়কর ব্যাপার ঠিক তেমনি গবেষণার বিষয়ও বটে। এই বিষয়ে ‘মরু-ভাস্কর’ গ্রন্থের ভ‚মিকায় কবি-পতœী প্রমীলা নজরুল উল্লেখ করেন- “ অনেকদিন আগে দার্জিলিঙে ব’সে কবি এই কাব্য গ্রন্থখানি রচনা আরম্ভ করেন। তিনি তখন আধ্যাত্মিকতায় নিমগ্ন। বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ-(স.) এর জীবনী নিয়ে একখানি বৃহৎ কাব্যগ্রন্থ রচনার কথা তিনি প্রায়-ই ব’লতেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তাড়াহুড়া ক’রে বইটি শেষ করেন”। উল্লেখ্য তিনি এই গ্রন্থে নবি (সা.)’র প্রথম জীবনের ২৫ বছর পর্যন্ত রূপায়িত করেন। অর্থাৎ তিনি এই গ্রন্থে নবিজী (সা.)’র জন্ম থেকে বিয়ে পর্যন্ত আলোচনা করেছেন।
‘মরু-ভাস্কর’ মোট চারটি সর্গে বিভক্ত। সর্বমোট কবিতা ১৮টি। প্রথম সর্গে নবিজী (সা.)’র আবির্ভাবকাল, দ্বিতীয় সর্গে তাঁর শৈশব, তৃতীয় সর্গে কৈশোর এবং চতুর্থ অর্থাৎ শেষ সর্গে বিয়ে-সংসার এবং বিশ্ব-মানবুার জন্য সংগ্রামের প্রারম্ভকথা স্থান পেয়েছে।
জন্মিলে মেয়ে পিতা তারে লয়ে ফেলিতেন অন্ধ ক‚পে,
হত্যা করিত, কিম্বা মারিত আছাড়ি পাষাণ-স্তুপে!
[‘অভ্যুদ্বয়’, প্রথম সর্গ]
সরাব, নারী আর যুদ্ধের বৈশিষ্ট্যমÐিত আরব জাতি শুধু কন্যা সন্তান হত্যা করতো তা নয়, গোত্রে গোত্রে মারামারি-হানাহানি, লুটপাট, ব্যভিচার-অযাচারসহ নানা অসামাজাকি এবং অশ্লীলতায় ডুবে ছিল। আলো থেকে অনেক দূরেই তাদের বসবাস। কা’বা ঘরে ৩৬০টি মুর্তি তো ছিলোই। তাছাড়া উলঙ্গ হয়ে কা’বা ঘর তাওয়াফও করতো। মহানবি (সা.)’র আগে পৃথিবীতে অনেক নবিই (আ.) পৃথিবীতে আগমন করেছেন। কিন্তু তাঁদের শিক্ষা ও দেখানো পথ মানুষ ভুলে গেছে। উদয় হল আইয়্যামে জাহেলিয়াত। এরকমই পরিবেশ-পরিস্থিতে প্রেরিত হয় বিশ্বনবি (সা.)। কবির ভাষায়-
ফুলের গন্ধ পাখির গান ¯পর্শসুখ ভোরের হাওয়ার,
জানিল বিশ্ব সেই সেদিন, সেই প্রথম; আজ আবার
আঁধার নিখিলে এল আবার আদি প্রাতের সে স¤পদ
নূতন সূর্য উদিল ঐ —মোহাম্মদ! মোহাম্মদ!
[‘অবুরণিকা’, প্রথম সর্গ]
অন্ধকারে ছেঁয়ে যাওয়া তৎকালীন আরব বিশ্বে ‘আজ আবার’ আলো হয়ে ‘নূতন সূর্য’ উদয় হয়েছে। নাম তাঁর ‘মোহাম্মদ! মোহাম্মদ!’।
মা আমেনার কোল আলো করে প্রিয়নবি (সা.) আসলেও আরবের প্রথা অনুযায়ী তিনি লালিত-পালিত হন দুধ মা হালিমার গৃহে। মহানবি (সা.)’র এর আগমনে হালিমার অভাবী সংসার আল্লাহর রহমতে ভরপূর হয়ে যায়। যিনি ভবিষ্যতে বিশ্ব জাহানের নেতা হবেন, আদর্শ মডেল হবেন, আল্লাহর বার্তা বাহক হবেন, মানবতার শিক্ষক হবেন, শান্তির দূত হবেন, সাম্যের অগ্রপথিক হবেন, ন্যায় বিচারকের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হবেন তাঁকে তো সমস্ত পঙ্কিল পথ থেকে আল্লাহ-ই হেফাজত করবেন। শৈশব থেকেই তাঁকে সেভাবে গড়ে > ৪র্থ পৃষ্ঠায় দেখুন
> ৩য় পৃষ্ঠার পর
তুলেছেন আল্লাহ তায়ালা। মনের সমস্ত কালিমা দূর করেছেন ‘শাককুস সাদর’ এর মাধ্যমে। কবির ভাষায়-
আলোর অঙ্গ, আলোকের পাখা, জ্যোতিদীপ্ত তনু তাহার,
কহিল সে, “আমি খুলিতে এসেছি তোমার হৃদয়-স্বর্গদ্বার।
খোদার হাবিব,— জ্যোতির অংশ ধরার ধূলির পাপ-ছোঁওয়ায়
হয়েছে মলিন, খোদার আদেশে শুচি করে যাব পুন তোমায়।

তারপর মোরে শোয়াইল ক্রোড়ে, বক্ষ চিরিয়া মোর হৃদয়
করিল বাহির! হল না আমার কোনো যন্ত্রণা কোনো সে ভয়।
[‘শাককুস সাদর’, দ্বিতীয় সর্গ]
‘আলোর অঙ্গ, আলোর পাখা’ জিব্রাইল ফেরেশতা আল্লাহর আদেশে বেহেশত থেকে পানি নিয়ে এসেছে দয়ার নবি (সা.) কে ‘শুচি’ করে দেয়ার জন্য।‘বক্ষ চিরিয়া’ এমন কুদরতি অপারেশন করার সময় তিনি ভয় পেলেও কোনো ব্যথা পাননি-“হল না আমার কোনো যন্ত্রণা কোনো সে ভয়”।

জন্মের আগে পিতা আর শৈশবে মা’কে হারিয়ে কৈশোরে প্রিয়নবি (সা.) এর আশ্রয়স্থল হয় চাচা আবু তালেব। বাল্যকালে তিনি ছাগল ছড়িয়েছেন। এরপরে চাচার ব্যবসায় সহযোগিতা করার কাজে লেগে যান। চাচার সাথে বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে তিনি ছুটে বেড়ান বসরা-সিরিয়া। একবার বসরায় বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে গেলে আবু তালেবের সাথে অপূর্ব এই ছোট্ট শিশুকে দেখার জন্য সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ে।
অপরূপ এক রূপের কিশোর এসেছে ‘শ্যাম’, উঠল রোল,
মুখর যেমন হয় গো বিহগ আসলে রবি গগন-কোল।
পালিয়ে হুরীস্থান সুদূর
এসেছে এই কিশোর হুর,
[‘কৈশোর’, তৃতীয় সর্গ]
রাসূল (সা.) এর দৈহিক সৌন্দর্য বর্ণনার সারসংক্ষেপ যেন “এই কিশোর হুর”। তিনি যখন বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে যেতেন সূর্যের আলো স্থিমিু হয়ে যেত, মেঘ ছাঁয়া দিত। এসব লক্ষণ দেখে সিরিয়ায় বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে যাওয়ার সময় বোহায়রা পাদ্রী তাঁকে ‘কিশোর নবী’ বলেই সম্বোধন করেন।
কবির ভাষায়-
কিশোর নবীর দস্ত চুমি, ‘বোহায়রা’ কয়, এই তো সেই-
শেষের নবী-বিশ্ব নিখিল ঘুরছে যাঁহার উদ্দেশ্যেই।
আল্লার এই শেষ ‘রসুল’
পাপের ধরায় পুণ্যফুল,
[‘কৈশোর’, তৃতীয় সর্গ]
সুতার কারণে রাসূল (সা.) এর সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। চারিত্রিক মাধুর্যে মুগ্ধ হয়ে বাল্যকালেই পেয়ে যান ‘আল আমিন’ উপাধি। পীড়িতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য গঠন করেন ‘হিলফুল ফুজুল’। এক যুবকের মধ্যে এত গুণের সমাহার সত্যিই বিস্মিত করে তৎকালীন আরবদের। এমন সুনাম আরবের বিখ্যাত ব্যবসায়ি মহিলা খাদিজা (রা.)’র কানে যায়। তিনি মুহাম্মদ (সা.) কে তাঁর বাণিজ্য কাফেলার নেতৃত্ব দেয়ার অনুরোধ করেন। তিনি রাজি হয়ে যান। অধিক মুনাফার সাথে প্রিয়নবি (সা.) খাদিজা (রা.)’র বাণিজ্য কাফেলা নিয়ে ফিরে আসেন। এতে খাদিজা (রা.) মুগ্ধ হয়ে রাসূল (সা.) কে বিয়ের প্রস্তাব দেন। অবশেষে পঁচিশ বছরের যুবক নবি (সা.)’র সাথে রূপে-গুণে অনন্যা চল্লিশ বছরের খাদিজা (রা.)’র বিয়ে হয়। কবির ভাষায়-
কহিল আসাদ বীর করে মুছি অশ্রæ-নীর
“হে সাদিক, হে আমিন, হেজাজের মণি!
পিতৃহীন খদিজায় দিলাম তোমার পায়,
তোমারে জামাতা পেয়ে ভাগ্য বলে গণি।
[‘স¤প্রদান’, চতুর্থ সর্গ]
কবিরা নাকি খুব আবেগ প্রবণ হয়। কল্পনায় ভেসে বেড়ায়। এই যেনো কবিরই ফিতরাত। কিন্তু ‘মরু-ভাস্কর’ কাব্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এমন কোনো দৃষ্টান্ত দেখাননি। সহি সনদের বাইরে নবি (সা.)’র শানে কল্পনা প্রসূত তেমন কোনো কথা বলেননি। এতেই কাব্যে স্বার্থকতা। এতেই পূর্ণতা।