বাঁশীওয়ালার দিস্তান

98

হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার জগৎবিখ্যাত গল্পটি আমরা সবাই কম বেশি জানি। প্রায় হাজার বছর আগে জার্মানির ছোট শহর হ্যামিলনে এই বিয়োগান্তক ঘটনাটি ঘটেছিল। শহরের গির্জার দেয়ালে আঁকা ছবি থেকে মানুষ প্রথম ঘটনাটি জানতে পারে। হ্যামিলন শহরের মানুষ ইঁদুরের অত্যাচারে অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। তাই শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ইদুঁরের হাত থেকে বাঁচার জন্য পৌরসভায় এক সমাবেশে বসে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইদুঁরের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য মোটা অংকের পুরষ্কার ঘোষণা করা হয়। রহস্যময় এক বাশিঁওয়ালা শহরের সমস্ত ইদুঁরগুলোকে তাঁর মোহনীয় বাঁশির সুরে নদীতে নিয়ে হত্যা করে। কিন্তু পৌর মেয়র ও নগরবাসী তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করে তাকে পুরস্কার থেকে বঞ্চিত করে। ক্ষুদ্ধ বাঁশিওয়ালা শহরের শিশুদের নিয়ে তার মোহনীয় বাঁশি বাজাতে বাজাতে পাহাড়ের গুহায় শিশুদেরসহ চিরতরে হারিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছিল ১২৮৪ সালের ২২ জুলাই। এটি একটি প্রতীকী ঘটনা। আজও হ্যামিলন বাসী প্রতি বছর ঐ ঘটনার স্মৃতি চারণ করে থাকে।
চট্টগ্রাম দুই হাজার বছরের একটি ঐতিহ্য সমৃদ্ধ শহর। যার নামের পেছনে গ্রাম শব্দটি থাকলেও আসলে এটি কোন গ্রাম নয়। এর সংস্কৃতিও গ্রাম্য নয়। আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক ও ব্যবসা বাণিজ্য এবং তার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে চট্টগ্রাম একটি কসমোপলিটন নগর। এখানে আরব, ইংরেজ, মগ, পূর্তগীজরা এসেছিল। কেউ ব্যবসা বাণিজ্য, কেউ ধর্ম প্রচার, কেউ শাসন ও শোষন করার মানসে। আবার কেউ এসেছিল দস্যুতা ও লুন্ঠনের জন্য। বিচিত্র মানুষের উপস্থিতি ও অপরূপ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণে এখানে গড়ে উঠে মিশ্র সংস্কৃতি ও সামাজিক বৈশিষ্টাবলি। যার সাথে বাংলাদেশের অন্য কোন জেলার মিল নেই। বৈশ্বিক উন্নয়নের সাথে সাথে চট্টগ্রামের উন্নয়ন হলেও কায়েমী স্বার্থবাদীরা চট্টগ্রামকে পরিকল্পিত নগর হিসাবে গড়ে উঠতে দেয়নি। চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানে পরিকল্পনার ছোঁয়া লাগেনি। যে যার মতো করেছে। ফলে চরম বিশৃংখলতার মাঝে চট্টগ্রাম শহর আকারে বড় হয়েছে। নান্দনিকতায় নয়; তার অনন্য প্রাকৃতিক সম্পদ হারিয়ে হয়েছে রুগ্ন । অধ্যাপক আলী আশরাফ সেই বাঁশিওয়ালা যিনি সভা, সমিতি, সেমিনার ও পরামর্শ সভায় পরিকল্পিত চট্টগ্রাম উন্নয়নের দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন দৈনিকে কলামের বাঁশি বাজানো অব্যাহত রেখেছেন। দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত তিনি শুধু চট্টগ্রামের পরিকল্পিত উন্নয়নের বাঁশি বাজিয়ে চলছেন। কিন্তু নীতি নির্ধারক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রামবাসীর সাথে বিশ্বাস ভঙ্গঁ করে চলেছেন। তাঁর প্রস্তাবিত অপার সম্ভাবনার সুর কারো কানে পৌঁছায় নি। হয়ত তাই অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে চট্টগ্রামের বর্তমান দুরবস্থা। তিনি তাঁর লেখালেখি ও সাক্ষাতকার ইত্যাদি নিয়ে রচনা করেন “চট্টগ্রাম নগরীর পরিকল্পিত উন্নয়ন সমস্যা ও সম্ভাবনা” নামে গ্রন্থটি।
তাঁর পরিকল্পনার কথা সংশ্লিষ্টদের কেউ শুনেছেন কেউ শুনেননি কিন্তু আলী আশরাফ একজন দেশ প্রেমিক প্রকৌশলী হিসাবে। নিজের জন্মস্থান চট্টগ্রামের উন্নয়নের কথা বলা অব্যাহত রেখেছেন। তিনি মনে করেন, চট্টগ্রামের উন্নয়ন মানে বৃহত্তর অর্থে বাংলা দেশের উন্নয়ন। তিনি তাঁর একটি লেখায় সে কথাই বলেছেন। উদাহরণত: “দেশের স্বার্থে, চট্টগ্রামের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিনিয়োগ দাবী করে সভা-সমিতি হয়েছে, লেখালেখি হয়েছে প্রচুর। এখন মনে হয় সেই সব দাবি, যুক্তিতর্ক যারা টাকা বরাদ্দ দেন, যারা পলিসি প্রনয়ন করেন, কিংবা নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁদের কাছে পৌঁছায়নি। এই ব্যর্থতা আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের। অবস্থাদৃষ্ঠে মনে হয়, দীর্ঘ আটত্রিশ বছরের পরিকল্পনা প্রনয়ন, বাস্তবায়ন এবং অগ্রাধিকার নিরুপনের লড়াইয়ে চট্টগ্রাম হেরে গেছে, মনে হয় ভুল বললাম, আসলে হেরে গেছে বাংলাদেশ”। “চট্টগ্রামের পরিকল্পিত উন্নয়ন, পৃষ্ঠা -২৩”।
চট্টগ্রাম বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর শুধু নয়। ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন শহর। ঢাকার বয়স ৪০০ বছরের আর চট্টগ্রামের বয়স ২০০০ বছরের। দেশের প্রধান ও প্রাচীন বন্দরও চট্টগ্রাম। রাজনৈতিক কারণে চট্টগ্রামকে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হলেও আসলে সেভাবে চট্টগ্রামের পরিকল্পিত উন্নয়ন হয়নি। অধ্যাপক প্রকৌশলী এম আলী আশরাফ সমকালীন উন্নয়ন ও সমস্যাদি নিয়ে নিজেকে আন্দোলনে যুক্ত রেখেছেন। নগরবিদ ও ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ও প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন “ চট্টগ্রাম নগরীর পরিকল্পিত উন্নয়ন সমস্যা ও সম্ভাবনা” শিরোনামে গ্রন্থটি এই বিষয়ে আলী আশরাফের এই বিষয়ে আলী আশরাফের নির্বাচিত রচনা, সাক্ষাতকার, প্রস্তাব ইত্যাদির সংকলন। এখানে তাঁর নির্বাচিত ২৭টি লেখা ও সাক্ষাতকার রয়েছে। বক্ষমান গ্রন্থের নিবন্ধসমূহ হচ্ছে চট্টগ্রামের উন্নয়ন, নগর পরিকল্পনা, অবকাঠামো, পরিবহন, জলাবদ্ধতা, পাহাড় কাটা, পাহাড় ধস, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ সংকট ও পরিবেশ দূষণ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পর্যটন, পাবলিক টয়লেট, পোষ্টার সংস্কৃতি ইত্যাদি। আমরা জানি বিশ্বের উন্নত প্রতিটি নগরী একটি পরিকল্পনার মাধ্যমে গড়ে উঠে। কবি জেমস জয়েস তার বিখ্যাত কবিতা “দ্য ডাবলিনাস” কবিতায় শহরটির গড়ে উঠার বর্ণনা দেন। বিশ্ব সাহ্যিতে এই ধরণের অনেক উদাহরণ আছে। ইতিহাসে আবার এও জানা যায় অপরিকল্পিত নগরের মানুষগুলোর জীবনাচরন ও অর্থনৈতিক কাজকর্মে দুরাবস্থার কথা। বাংলাদেশের প্রায় শহরে বিভিন্ন সময়ে যথাযথ নগর পরিকল্পনা রচিত হয়েছে এবং অনুমোদিত হচ্ছে। যেমন রাজউক, চউক, কউক ইত্যাদি। তারপর ও শোনা যায় অপরিকল্পিত নগরায়নই সকল দুরবস্থার জন্য দায়ী। বস্তত পরিকল্পনার অভাব নয় বরং পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের অভাবই এর মূল কারণ। রাজনৈতিক অঙ্গীকারের অভাব। প্রভাবশালী ও কায়েমী স্বার্থবাদীদের দৌরাত্ব ও সরকারী সংস্থাসমূহের সীমাহীন দূর্নীতি কারচুপির পেছনের ছায়া শত্রæ। আলী আশরাফ তাঁর রচনায় পরিকল্পনার দুর্বলতা এবং বাস্তবায়নের সমস্যা নিয়ে বিশ্লেষণ ও মন্তব্য তুলে ধরেছেন বক্ষমান গ্রন্থে। অধ্যাপক আলী আশরাফ তাঁর অধীত জ্ঞানও বিচার বুদ্ধি দিয়ে উন্নয়নের সমস্যা ও তার সম্ভাবনার কথা বিশ্লেষণ করে গোটা জাতিকে পরিকল্পিত পথে সুশৃঙ্খল ভাবে অগ্রসর হওয়ার জন্য তাড়িত করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে যেমন ষ্পষ্ঠভাষী তেমনি মতামত প্রকাশেও নির্ভীক ও সৎ। তাঁর চিন্তা চেতনার একটি বড় অংশ জুড়েই আছে চট্টগ্রাম বিশেষত চট্টগ্রাম নগরী। তিনি নিরন্তর লিখে গেছেন, শুধু তাই নয় বলেও গেছেন। তিনি মনে করেন, শুধু বাণিজ্যিক কারণে নয় ভৌগলিক অবস্থানের কারণে ঐতিহাসিক কাল থেকেই এ নগরী সব সময় বিশেষ নগরের মর্যাদা পেয়েছে। তিনি লেখেন, “চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরেই চট্টগ্রাম নগরীর গোড়া পত্তন এবং দীর্ঘ দুই হাজার বছরের নিরবিচ্ছিন্ন বেড়ে ওঠা”। আগেই বলেছি চট্টগ্রামের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জীবনাচরণকে সমৃদ্ধ করেছে তার প্রকৃতি যা বিশ্বের অন্য কোথাও সহজ লভ্য নয়। চট্টগ্রাম পর্যটন নগরী হিসেবে অনন্য বৈশিষ্ট্যের কথাও তিনি তাঁর লেখায় প্রকাশ করেছেন।
এ প্রসঙ্গেঁ একুশেপদক প্রাপ্ত কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, “সত্যি বলতে কি বিদেশী পর্যটকরাও প্রাকৃতিক সম্পদের এই অপূর্ব সমাহার দেখে চমৎকৃত হন। আর যাদের স্মৃতিতে পাহাড় আর উপত্যাকা অধিত্যকায় গড়া এই বৃক্ষ তরু-লতা শোভিত ছিমছাম নগরীর ছবি আঁকা রয়েছে তাদের জন্য বর্তমান রূপান্তর মেনে নেওয়া কঠিন। এ বইয়ের লেখকের এ নগরীকে নিয়ে কিছু পূর্ব স্মৃতি যেমন আছে তেমনি নানা প্রস্তাব ও পরিকল্পনা রয়েছে। তাঁর ভাবনার গুরুত্ব এখানে যে এর পেছনে রয়েছে নগরীর প্রতি এক দায়বদ্ধ নাগরিকের গভীর ভালোবাসা এবং বিষয় অর্থাৎ নগর উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনায় দক্ষ বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির উদ্বেগ উৎকন্ঠা থেকে সৃষ্ট তাগিদ। ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ থেকে প্রকৌশলী আলী আশরাফ এ বইয়ের লেখা গুলো লিখেছেন”। তিনি আরও লেখেন “চট্টগ্রাম নগরী আমাদের চোখের সামনেই তার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারাচ্ছে যা তার সম্পদ। তাই যদি হয়ে দাঁড়ায় সমস্যা তাহলে তো বুঝতে হবে গলদ থাকছে উন্নয়ন ভাবনায়”।
এক সময় ৬০ থেকে ৭০ বছর আগে চট্টগ্রামের খাল ও নদীর মাধ্যমে বৃষ্টির পানি সহজেই নিষ্কাশন হত। প্রাচীন কাল থেকে বাণিজ্য তরীগুলো শহরের কেন্দ্রস্থলে পৌঁছে যেত। ইতিহাসের পাতা থেকে জানা যায়, চকবাজার ছিল চট্টগ্রামের অন্যতম বাজার। খালের মাধ্যমে মালামাল নিয়ে নৌকাগুলো সেখানে পৌঁছে যেত। অথচ অপরিকল্পিত নগর বিকাশের ফলে জলাবদ্ধতা আজ খাতুনগঞ্জ, চাকতাইয়ের মত বাণিজ্যকেন্দ্রের প্রকট সমস্যা সৃষ্টি করছে। শুধু তাই নয় আগ্রাবাদ, হালিশহর, বাকলিয়া, মোহরাসহ নি¤œাঞ্চলের আবাসিক এলাকায় বর্ষার মওসুম ছাড়া ও জোয়ারের পানিতে সয়লাব। সেখানে তখন নৌকায় জনগন যাতায়াত করে। চট্টগ্রামে যে কয়টা পাহাড় এখনো ন্যাড়া হয়ে বেঁচে আছে তার সৌন্দর্যের চেয়ে ধংসের আতংক হয়ে বেশি মুর্তমান। বর্ষা এলেই লোকজন সরানোর জন্য তৎপর হয় প্রশাসন।
আলী আশরাফ চট্টগ্রামের এই দীন দশা দেখে ব্যথিত হন। তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়ন, পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থা, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, অসংগতি, এর প্রতিকার, স্বপ্নের ড্রিমসিটি, পরিবেশ বান্ধব নগরী নির্মাণ, বাকলিয়ার সমস্যা, জলবন্দী নগরী, জলজট, যোগাযোগ ব্যবস্থা, দূষণ, কর্ণফূলী নদীর সেতু, পাহাড় কাটা, পাহাড় ধস নিয়ে যেমন বলেছেন তেমনি মাতার বাড়ি, কুতুদিয়াসহ নানা সম্ভাবনার স্বপ্নও দেখেছেন।
তিনি মনে করেন, চট্টগ্রাম হতে পারে স্বতন্ত্র বৈশিষ্টের অপরুপ এক পর্যটন নগরী। তাঁর লেখায় সিডর, সাইক্লোন, দূর্যোগ মোকাবেলা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, শব্দ দূষণ, পাবলিক টয়লেট, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছাস প্রতিরোধক বাড়ির প্রস্তাবও রয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়নের স্বার্থে অত্যন্ত মমত্ব দিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন চট্টগ্রাম নগরের সমস্যা। একজন প্রকৌশলী হিসাবে তিনি চট্টগ্রামের সমস্যা পর্যবেক্ষণ করেছেন তা নয়। প্রকৃত চট্টগ্রাম দরদি এবং সৎ নাগরিক হিসেবে তার পর্যবেক্ষণ। চট্টগ্রামকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় সেটাই তাঁর লেখনিতে প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর লেখায় শুধু সমস্যার কথা ছিল না তিনি উন্নয়নের স্বপ্ন ও দেখিয়েছেন। বলা যায় তিনি উন্নয়ন স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। তাঁর ভাবনা চিন্তা, মতামত, মন্তব্য, প্রস্তাব, পরিকল্পনায় যে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন তা চিন্তাশীল নাগরিক, গবেষক, সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহায়ক হবে। এই গ্রন্থটি শুধু চট্টগ্রাম নয়, দেশের বিভিন্ন নগরীর উন্নয়ন গাইড বুক হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। গ্রন্থের শেষে চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তথ্য ও চিত্র সংযোজন করেছেন। যা উৎসাহী পাঠকের তৃষ্ণা মেটাতে পারে।
সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে উন্নয়ন জোয়ার বইছে। সরকার ও এক্ষেত্রে মনযোগী এবং প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। চট্টগ্রামকে ঘিরে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। মেগা প্রকল্পের বেলুন বাতাসে উড়ছে। তারপর ও চট্টগ্রাম নগরী নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর চিন্তা ও দুশ্চিন্তার কারণ। উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্প নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। হাজার হাজার কোটি টাকার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে সরকার এবং উন্নয়ন সহযোগীদের উচিত হবে অধ্যাপক প্রকৌশলী আলী আশরাফদের মতো দেশ প্রেমিক ও বিশেষজ্ঞদের মতামত ও পরামর্শ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা। এতে করে চট্টগ্রাম যেমন উপকৃত হবে তেমনি বাংলাদেশ উপকৃত হবে। চট্টগ্রামকে অবহেলিত রেখে বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তোলা সম্ভব নয়, একথা পলিসি মেকারদের বুঝতে হবে।
অধ্যাপক প্রকৌশলী এম আলী আশরাফ প্রণীত “চট্টগ্রাম নগরীর পরিকল্পিত উন্নয়ন সমস্যা ও সমাধান” গ্রন্থটি অত্যন্ত বাস্তব ও যুগোপযোগী। গ্রন্থটি সাধারণ নাগরিক, ছাত্র-তরুণ সর্বোপরি গবেষক ও সরকারের পলিসি মেকারদের চট্টগ্রাম নিয়ে চিন্তায় গতিশীলতা আনবে এছাড়াও গ্রন্থটি উন্নয়ন পরিকল্পনায় সংশ্লিষ্টদের বাস্তব জ্ঞান দিয়ে পথের আলো ছড়াবে। গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে সার্দান ইউনিভার্সিটি প্রেস, প্রচ্ছদ একেঁছেন স্থপতি গৌরব দে। প্রথম প্রকাশ নভেম্বর ২০১৮। মূল্য ২৫০ টাকা মাত্র। চমৎকার বাঁধাই ঝকঝকে একটি নান্দনিক বই উপহার দেওয়ার জন্য সার্দান ইউনিভার্সিটি প্রেসের প্রকাশক প্রফেসর সরওয়ার জাহানকে ধন্যবাদ। গ্রন্থটি বহুল প্রচার কামনা করি।