বাঁশখালীর ১৬ জেলে পরিবারে আহাজারি

101

বাঁশখালী উপকূলের ১৬ জেলে পরিবারের আহজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। স্বজনদের কান্না থামছে না জেলে পরিবারগুলোতে। জীবন জীবিকার তাগিদে পরিবার পরিজন ছেড়ে জীবনের মায়া ত্যাগ করে জেলেরা গভীর সাগরে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে গিয়েছিল। বাশঁখালী উপকূলের শেখেরখীল এলাকার ১৬ জেলে নিয়ে এফ.বি খাজা আজমীর ফিশিং ট্রলারটি গভীর সাগরে মাছ ধরতে যায়। জেলে এবং কোস্ট গার্ডের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে ১৬ জেলে বর্তমানে কারাগারে।
রবিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে বাশঁখালী উপজেলার শেখেরখীল ইউনিয়নের এ ঘটনার বিষয়ে সরেজমিনে এসব জেলে পরিবারের অবস্থা দেখার জন্য গেলে শেখেরখীল এলাকায় আহাজারির দৃশ্য চোখে পড়ে।
জেলেদের অনেক পরিবার আছে উপার্জনকারী ব্যক্তিই আটক জেলে। বর্তমানে ঐ পরিবারের সদস্যদের কান্না ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তাদের এমন অর্থ নেই যাতে বাশঁখালী থেকে কুতুবদিয়া আদালতে গিয়ে মামলার ব্যাপারে খবরা খবর নিতে পারে। জেলেদের জামিনে বিষয়ে তারা কিছু জানে না।
শেখেরখীলের বিধাব জহুরা বেগম (৬০) কাঁদতে কাঁদতে বলেন তিনি অসুস্থ। তার একমাত্র ছেলে ইলিয়াছ ঔষধপত্র কিনে দেয়। দুই সপ্তাহ ধরে টাকার অভাবে অ্যাজমা ও হৃদ রোগের ঔষধ খেতে পারছেন না।
বাশঁখালী উপজেলা শেখেরখীল ইউপির মুহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, নিতান্ত দরিদ্র পরিবারের লোকজন সাগরে গিয়ে মাছ ধরে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। কোস্ট গার্ড কুতুবদিয়া স্টেশনের ইনচার্জ বাশঁখালী উপজেলার শেখেরখীল ইউনিয়নের ১৬ জেলের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক দুটি মামলা দিয়ে জেল হাজতে পাঠান। ঐসব জেলেদের জেল হাজতে নেওয়ার পর থেকেই এসব জেলে পরিবারের আহাজারি থামছে না।
গত ১৯ এপ্রিল এফ.বি খাজা আজমীর ফিশিং ট্রলারটি ১৬ জেলে নিয়ে গভীর সাগর থেকে মাছ ধরে উপকূলে ফিরে আসার পথে কুতুবদিয়া দ্বীপের অদূরে পোষাকবিহীন টহলরত কোস্ট গার্ড জেলেদের ট্রলারটি ধাওয়া করে। কোস্ট গার্ডের লোকজনকে জেলেরা ডাকাত ভেবে তাদের ট্রলারে গতিবেগ বাড়িয়ে কুতুবদিয়া দ্বীপের উপকূলে চলে আসে। কোস্ট গার্ড কুতুবদিয়া স্টেশনের ইনচার্জ জেলেদের বিরুদ্ধে কুতুবদিয়া থানায় ৬/৩৫ ও ৭/৩৬ নং পৃথক পৃথক দুটি মামলা রুজু করে। ঐ ট্রলারটি কোস্ট গার্ড দুই দিন পর থানায় জিম্মায় দেয়।
গত ১৫এপ্রিল বাশঁখালী উপকূল শেখেরখীল এলাকা থেকে ১৬ জেলে নিয়ে এফ.বি খাজা আজমীর নামক ফিশিং ট্রলারটি গভীর সাগরে মাছ ধরতে যায়। গত ১৯ এপ্রিল মাছ ধরে উপকূলে ফিরে আসার পথে কুতুবদিয়া দ্বীপের অদূরে কাঠের একটি বোটে অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করে। এমনকি ১৫/২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। গুলির শব্দ শুনে জেলেরা ডাকাত মনে করে ট্রলারটি সাগরে ফেলে উপকূলে নেমে পড়ে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি কুতুবদিয়া থানায় জানায়।