বাঁশখালীতে সাংবাদিকের উপর হামলা আটক ১

53

বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিনিধি হিমেল বড়ুয়া। গতকাল সোমবার বিকাল ৪ টার দিকে হাসপাতাল গেইটের ভেতরে চিকিৎসক ডরমেটরির সামনে কয়েকজন যুবক তার উপর হামলা চালায়। ঘটনার পরপরই বাঁশখালী থানার ওসি কামাল হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ত্রাসী আব্দুল অদুদ লেদুকে আটক করেন। লেদু নিজেকে পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বেড়ান।
সাংবাদিক হিমেল বড়ুয়া বলেন, আমি প্রতিদিনের মতো হাসপাতালে তথ্য সংগ্রহের জন্য যাওয়ার সময় হাসপাতাল ডরমেটরির সামনে দাঁড়ানো সন্ত্রাসী লেদু ও রাসেদের নেতৃত্বে আরো কয়েকজন আমার পথরোধ করে। তারা আমাকে হাসপাতালে কেন যাচ্ছি জিজ্ঞাসা করেন এবং হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তৌহিদুল আনোয়ারের সাথে বেয়াদবি করেছি অজুহাত তুলে শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। এসময় লেদুসহ সাথে থাকা কয়েকজন আমাকে কিলঘুষি মেরে হাসপাতালের গেইটের সম্মুখে নিয়ে আসেন। আমি এ ঘটনায় মামলা করবো।
বাঁশখালী থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি উত্তেজনা বিরাজ করছে। হাতাহাতির ঘটনায় লেদুকে আটক করেছি। লিখিত অভিযোগ দিলেই আইনগত ব্যবস্থা নিব’।
বাঁশখালী থানার ইউএনও মোমেনা আক্তার বলেন, ‘আমি খবর পেয়েই ওসিকে ফোন করে হামলাকারীকে ধরতে বলেছি। দোষী ব্যক্তিকে ছাড় দেয়া হবে না’।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরেই কোনো চিকিৎসকের ইন্ধন পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর। তিনি বলেন, বিষয়টি সিভিল সার্জনকে জানিয়ে রাখেন। আমি চট্টগ্রামের বাইরে আছি। সিভিল সার্জনের সাথে আমি কথা বলেই ব্যবস্থা নিব।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, ‘ঘটনার বিষয়টি শুনলাম। স্যার চট্টগ্রামে আসলেই আমি কথা বলে প্রকৃত ঘটনার বিষয়ে জেনে ব্যবস্থা নিব’।
এদিকে সাংবাদিক হিমেল বড়ুয়ার উপর হামলার ঘটনায় পৃথক বিবৃতি দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাঁশখালী বৌদ্ধ সমিতিসহ সেখানে কর্মরত সাংবাদিকরা। বৌদ্ধ সমিতির পক্ষে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক কল্যাণ বড়ুয়া এক বিবৃতিতে বলেন, বাঁশখালী বৌদ্ধ সমিতির কার্যকরী নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দৈনিক প্রথম আলোর বাঁশখালী প্রতিনিধি হিমেল বড়ুয়া বাপ্পা পেশাগত দায়িত্বপালন কালে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হওয়ার ঘটনা দুঃখজনক। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণসহ সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহবান জানান।
বিবৃতিদাতারা হলেন বাঁশখালী বৌদ্ধ সমিতির উপদেষ্টা ভদন্ত ধর্মপাল মহাস্থবির, বাঁশখালী বৌদ্ধ সমিতির সভাপতি ভদন্ত রাহুলপ্রিয় মহাস্থবির, দক্ষিণ জলদী বিবেকারাম বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত তিলোকানন্দ মহাস্থবির, বাঁশখালী কেন্দ্রীয় শীলকুপ চৈত্য বিহারের অধ্যক্ষ দেবমিত্র মহাস্থবির, পুঁইছড়ি চন্দ্রজ্যোতি বিহারের অধ্যক্ষ ধর্মপাল স্থবির, সংঘরাজ অভয়তিষ্য পারিজাত আরাম বিহারের অধ্যক্ষ মৈত্রীজিৎ স্থবির, বাঁশখালী বৌদ্ধ সমিতির সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ বড়ুয়া, বাঁশখালী বৌদ্ধ সমিতির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক প্রকাশ বড়ুয়াসহ সমিতির সকল সদস্যবৃন্দ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।