বরাদ্দের চাল পায়নি সাড়ে ৫ হাজার জেলে

45

মৎস্য অধিদপ্তরের ঘোষণা অনুযায়ী গত ২০ মে হতে আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন নদ/নদীতে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। মৎস্য কাজে নিয়োজিত জেলেদের দরিদ্র পরিবারে দারিদ্রতা বিবেচনা করে নিবন্ধিত প্রতিটি জেলেকে ৮৬ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। তারই ধারাবাহিকতা কুতুবদিয়া উপজেলার ৬ ইউনিয়নে নিবন্ধিত ৮হাজার ৫১৩ জেলে রয়েছে। প্রতিটি জেলের জন্য কুতুবদিয়া মৎস্য অফিস থেকে প্রথম কিস্তি জুন মাসে প্রতি জেলেকে ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে। গত মে মাসে জেলেদের চাল দেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ জেলে বরাদ্দকৃত চাল পায়নি।
কুতুবদিয়া মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, কুতুবদিয়া উপকূলে ৮ হাজার ৫১৩ জেলের নাম নিবন্ধিত আছে। প্রতিটি জেলের নামে চাল বরাদ্দ থাকলেও খাদ্য গুদামে চাল না থাকায় তিন ইউনিয়ন অর্থাৎ আলী আকবর ড়েইল ইউনিয়নে ১৯৮৬ জেলে, উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে ২৫২৭ জেলে, দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে ১২০২ জেলে এখনো বরাদ্দকৃত চাল পায়নি বলে মৎস্য অফিসার নাসিম আল মাহমুদ জানান।
তিনি আরো জানান, দ্বীপের ৬ ইউনিয়নের ৮হাজার ৫১৩ জেলে পরিবারে প্রথম কিস্তিতে ৪০ কেজি ও দ্বিতীয় কিস্তিতে ৪৫ কেজি চাল বিতরণের জন্য কুতুবদিয়া খাদ্য অফিসকে চিঠি দেয়া হয়েছে। প্রথম কিস্তিতে ৩৪০.৫২০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। বর্তমানে উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের দুই হাজার ৫২৭ জেলে ১০১.০৮০ মেট্রিকটন,দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের এক হাজার ২০২ জেলের জন্য ৪৮.০৮০ মেট্রিকটন এবং আলী আকবর ডেইল ইউনয়নের এক হাজার ৯৬৮ জেলের জন্য ৭৮.৭২০ মেট্রিকটন । বর্তমানে তিন ইউনিয়নের ৫হাজার ৬৯৭ জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত ২২৭.৮৮০মেট্রিকটন চাল জেলেরা পায়নি।
কুতুবদিয়া ফিশিং ট্রলার মাঝি সমিতির সভাপতি সত্য রজ্ঞন দাশ জানান, জেলেদের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত চাল বিতরণে অনিয়ম হচ্ছে। দরিদ্র জেলে পরিবারে অভাব অনটন লেগেই আছে। এ অবস্থায় বরাদ্দকৃত চাল বিতরণে অনিয়ম হলে জেলেরা উপজেলা সদরে মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছে।
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার রায়ের সাথে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি জানান, সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সরকার জেলে পরিবারের জন্য প্রতি জেলেকে ৮৬ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে। এ চাল বিতরণে অনিয়ম হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে কুতুবদিয়া উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা পলাশ পাল চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, খাদ্য গুদামে চাল না থাকায় জেলেদের চাল বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলা খাদ্য গুদাম থেকে চাল এনে আগামী বুধ, বৃহস্পতিবারের মধ্যে জেলেদের নিকট চাল বিতরণ করা হবে বলে জানান।
কুতুবদিয়া উপকূলের ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন জানান, বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করায় জেলে পরিবারে অভাব অনটন লেগে আছে। জেলে পরিবারে দারিদ্রতা নিরসনের জন্য প্রতি জেলের জন্য ৮৬ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। বর্তমানে বরাদ্দকৃত চাল পাচ্ছে না জেলেরা। যথা সময়ে বরাদ্দকৃত চাল বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ জানান।