বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আসুন

42

সারাদেশ বন্যার পানিতে ভাসছে। রাজধানী ঢাকা, বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম এবং আশেপাশের সকল উপজেলা, পর্যটন নগরী কক্সবাজার, বান্দরবান পার্বত্য জেলা এখন বন্যা ও জোয়ারের পানিতে ভাসছে। প্রতিদিন হাজার হাজার পরিবার বন্যা ও বৃষ্টির পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অঝোর বৃষ্টির ফলে দেশের কৃষি ক্ষেত ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গ্রামের কৃষক এখন কর্মহীনভাবে অলস সময় পার করছে। বৃষ্টির পানির ব্যাপকতায় গ্রামের জমি, কৃষি, ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনের তালিকা তৈরি করতে হবে। সারাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বিষয় চিহ্নিত করে ক্ষতি নিরূপন করে প্রকৃত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বাঁচাতে হবে। তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন তালিকা করে তা থান ও জেলা প্রশাসনে পাঠাতে হবে। ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত ত্রাণ সঠিকভাবে বন্টণ করতে হবে। প্রতিটি শহর ও গ্রামে বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতির সংবাদ পত্রিকার মাধ্যমে জানা গেছে। সঠিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে। সম্পূর্ণভাবে রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে সার্বজনীনভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আসতে হবে। কৃষী জমির আবাদের জন্য বীজ সার দিয়ে কৃষকের পাশে যেতে হবে। কৃষকদের ব্যাংক ঋণ মওকুফ করতে হবে। সুধী মহাজন ও গ্রামীণ ব্যাংকের মতো অসাধু আর্থিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে কৃষক ও দিন মজুর মানুষদের রক্ষা করতে হবে। সহজ শর্ত ও সুদবিহীন কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। সারাদেশের গ্রামের কৃষকদের ক্ষতি নিরুপণ করার দায়িত্ব দিতে হবে। ইতিমধ্যে শহর গ্রামের রাস্তার বেহাল দশা দেখছি। কোথাও একটি সড়কও ভালো নেই। অতিবৃষ্টির ফলে রাস্তার ধুলা উঠে বড় বড় গর্তের তৈরি হয়েছে। যান চলাচলে জীবন ঝুঁকি নিয়ে গণ ও পণ্য পরিবহণ চলছে। প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটার সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। শত শত শহর গ্রামের এসব সড়ক খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামতের ব্যবস্থা করতে হবে। রাস্তা কালভার্ট নির্মাণে কী পরিমাণ দুর্নীতি ও অর্থ লুটপাট হয়েছে তা বৃষ্টির পর রাস্তা দেখলেই বুঝা যায়। কোনো রাস্তায় বিটুমিন নেই। রাস্তার বিটুমিন উঠে গিয়ে কংকর দেখা যাচ্ছে। পরিবহণের চাপে কংকর উঠে যাচ্ছে ফলে গর্তের তৈরি হয়েছে। গাড়ি চলাচলের জন্য মারাত্মকভাবে হুমকী হচ্ছে। পথে পথে যাত্রীবাহী গাড়ি উল্টে যাচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল কলেজ যাচ্ছে। টেকসইভাবে রাস্তার সংস্কার চাই। জনগণের সঠিক উন্নয়ন কর্মকান্ড টেকসইভাবে যেনো করা হয়। মানসম্পন্নভাবে রাস্তাগুলোর মেরামত চায় জনগণ। রাস্তার মনিটরিং এর যারা দায়িত্বে থাকেন, তারা যেনো সঠিকভাবে মনিটরিং করেন। কংকর, সিমেন্ট বিটুমিন যেনো সঠিকভাবে মনিটরিং করেন। কংকর, সিমেন্ট বিটুমিন যেনো সঠিক মাত্রায় রাস্তায় ব্যবহার করা হয় তা দেখতে হবে। ছয় মাস যেতে না যেতেই রাস্তার এ পরিণতি। জনগণ বলছে মানহীন কাজের ফলে রাস্তার এ করুণ পরিণতি। যেভাবেই হউক খুব সহসা রাস্তাসমূহের সংস্কার ও মেরামত করতে হবে। রাস্তার খোঁড়াখুঁড়ির ফলে শহরের অনেকগুলো রাস্তার এখনো কাজ সমাপ্ত করা হয়নি। এক সংস্থা রাস্তার কাজ শেষ করে গেলে অপর সংস্থা সেখানে কাজ শুরু করে এভাবে যান চলাচলের রাস্তার কোনো সঠিক ব্যবস্থাপন নেই। প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন ও যাত্রী সাধারণ চরমভাবে ভোগান্তিতে পড়ছে। এসব উন্নয়ন কর্মকান্ড অবশ্যই নির্দিষ্ট সময় ও তারিখের মধ্যে শেষ করতে হবে। সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।
সেবা সংস্থাসমূহকে এলাকার রাস্তা ঘাটের খোঁড়াখুঁড়ির পূর্বে সমন্বয় করতে হবে। মান ঠিক রেখে সড়কের কাজ করতে হবে। ঠিকাদারদের সঠিকভাবে তদারকী ও তাদের বিল যথাসময়ে পরিশোধ করা চায়। কেননা নির্দিষ্ট সময়ে তারা বিল না পেলে শ্রমিকদের বেতনভাতা পরিশোধ করতে তারা ও ভোগান্তিতে পড়ে। এসব কারণেও অনেক সময় কাজের গতি মন্থর হয়। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় স্থানীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই কাজের মান ঠিক রেখে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ঠিক করতে হবে। হাজার হাজার কোটি টাকার সড়কের কাজ ছয়মাস তিনমাস যেতে না যেতেই রাস্তার এসব করুণ অবস্থা দেখলে মনে হয় এখানে শুভ অঙ্কের ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। এসব নিম্নমানের কাজ কোনো অবস্থায় মেনে নেয়া যায়না। এসব বিষয়ে জনমনে ব্যাপকভাবে রাষ্ট্রের পরিচালকদের দোষারোপ করতে শুনা যায়। দলীয় ও রাজনৈতিক ঠিকাদারদের মাধ্যমে শাসকদল কাজ করছে বলে কাজের এতো দুর্বল মান বলে মন্তব্য করছে জনগণ। দলীয় ক্যাডারদের পকেট তাজা হচ্ছে আর অন্যদিকে জনগণের উন্নয়নের সঠিক মানসম্পন্ন কাজ হচ্ছে। জনগণের দাবি কাজের মান ঠিক রেখে সড়কের উন্নয়ন করতে হবে। সংস্কার করতে হবে, উন্নয়ন ও কাজ সবকিছুই সঠিক মান নির্ণয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে কাজ বুঝে নিতে হবে। দুর্নীতিগ্রস্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। স্বচ্ছ ও আদর্শবান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে উন্নয়নের কাজ দিয়ে কাজের মান ঠিক রাখতে হবে। দুর্নীতির মাধ্যমে যারা সড়কের অর্থ আত্মসাৎ করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। অব্যাহত দুর্যোগ বন্যার মতো বৈশ্বিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
অর্থ ও কাজ দুটোর মধ্যে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা থাকতে হবে। রাজনীতির ঊর্ধ্বে ওঠে লাখ লাখ বন্যার্ত পরিবারের পাশে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

লেখক : প্রাবন্ধিক