বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে ৫৫ শতাংশ

17

বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি ছুটিকালীন কনটেইনার জট নিরসনে নানা উদ্যোগের সুফল মিলেছে। এপ্রিল মাসের চেয়ে মে মাসে চট্টগ্রাম বন্দর, ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো ও ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনাল মিলে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে ৫৪ দশমিক ০৯ শতাংশ।
বন্দরের পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মে মাসে হ্যান্ডলিং হয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার ৮০১ টিইইউ’স (২০ প্তটের কনটেইনার)। এর মধ্যে আমদানি পণ্যভর্তি কনটেইনার ১ লাখ ২ হাজার ১৭৮ এবং রপ্তানির ১ লাখ ২ হাজার ৬২৩ টিইইউ’স। আগের মাসে ৭৩ হাজার ৩১৭ টিইইউ’স আমদানি ও ৫৯ হাজার ৬০৪ টিইইউ’স রপ্তানি কনটেইনার মিলে মোট হ্যান্ডলিং হয়েছিলো ১ লাখ ৩২ হাজার ৯২১ টিইইউ’স। যা মার্চের চেয়ে ৪৬ দশমিক ৭৬ শতাংশ কম ছিলো।
মে মাসে কনটেইনারে বন্দরে ১৩ লাখ ৯০ হাজার ৯৪৬ টন আমদানি পণ্য এবং ৪ লাখ ৭৭১ টন রপ্তানি পণ্য পরিবহন হয়েছে।
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন জানান, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি সাধারণ ছুটির শেষ পর্যায়ে সীমিত আকারে তৈরি পোশাক কারখানা চালু হওয়ায় কাঁচামালের কনটেইনার ডেলিভারি বেড়েছে। পাশাপাশি রমজানের অত্যাবশ্যকীয় কিছু পণ্যের কনটেইনার ডেলিভারিও হয়েছে মে মাসে। এ ছাড়া এবার ঈদে কলকারখানায় ছুটি বেশি দিন দেওয়া হয়নি। এর ফলে দ্রুত খুলেছে কারখানাগুলো। খবর বাংলানিউজের
কনটেইনার হ্যান্ডলিং বাড়লেও জাহাজ হ্যান্ডলিং কমার প্রবণতা অব্যাহত ছিলো মে মাসেও। মার্চে যেখানে ৩৬৬টি জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছিলো এপ্রিলে তা কমে দাঁড়ায় ২৫৭টিতে। মে মাসে তা আরও কমে দাঁড়ায় ২২৩টিতে। অর্থাৎ এপ্রিলের চেয়ে মে মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আসা কমেছে ১৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। যা চলতি অর্থবছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
মে মাসে চট্টগ্রাম বন্দর বাল্ক কার্গো বা খোলা পণ্য হ্যান্ডলিং করেছে ৩২ লাখ ২ হাজার ৯৬৩ টন। এপ্রিলে যা ছিলো ৫২ লাখ ২০ হাজার ৭৬৬ টন। কমেছে ৩৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। মে মাসে ইনল্যান্ড কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২৩৫ টন। মোট বাল্ক কার্গো দাঁড়ায় ৩৫ লাখ ৫২ হাজার ১৯৮ টন। যা এপ্রিল মাসের চেয়ে ৩৮ দশমিক ৫১ শতাংশ কম।
সূত্র জানায়, করোনাকালে সরকারি ছুটির ৫৬ দিনে গত ২৬ মার্চ থেকে শুরু করে ২০ মে পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার কনটেইনার (টিইইউ’স)।
একই সময়ে বন্দরে ১ কোটি ৩৭ লাখ ২৮ হাজার ৬৪২ মেট্রিকটন পণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে। এর মধ্যে পেঁয়াজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ৮৭ হাজার ৩৯৭ মেট্রিকটন, আদা ৮ হাজার ২৭৫ মেট্রিকটন এবং রসুন ৬ হাজার ৬৫০ মেট্রিকটন।
৫৬ দিনে বন্দরে খাদ্যপণ্য হ্যান্ডলিং হয়েছে ২২ লাখ ৯৮ হাজার ৪২৪ মেট্রিকটন। এ ছাড়াও রমজান উপলক্ষে আমদানি করা ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, ডাল, খেজুর ইত্যাদি হ্যান্ডলিং হয়েছে ৮৬ হাজার ৯১২ মেট্রিক টন।
বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, করোনাকালেও জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থে ২৪ ঘণ্টা ৭ দিন বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সচল ছিলো। বন্দরের ডেলিভারি নির্ভর করছে আমদানিকারকদের ওপর। যত বেশি পণ্য আমদানি হবে, ডেলিভারি নেবে তত বেশি হ্যান্ডলিং হবে।