বদলে যাওয়ার গল্প শোনালেন আফিফ

69

কিছু দিন আগেও বাংলাদেশকে মনে হচ্ছিল ভেঙে পড়া এক দল। শরীরী ভাষায় ছিল হতাশার বিজ্ঞাপন। ঝুলে পড়া কাঁধ দেখে প্রতিপক্ষ বুঝে নিতো সবটা। সেই দলকেই ভারতের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে দেখা গেল অন্য চেহারায়। মাঠে দেখা গেল আত্মবিশ্বাসে ভরপুর এক দলকে। এই বদলে যাওয়ার পেছনের গল্পটা শোনালেন তরুণ অলরাউন্ডার আফিফ হোসেন।
দিল্লিতে বাংলাদেশের ফিল্ডারদের শরীরী ভাষায় ছিল যেন বারুদ। প্রায় প্রতিটি বলের পিছনে ছুটছিলেন তিন-চার জন করে ফিল্ডার। ব্যাটিং-বোলিংয়েও ছিল হাল না ছাড়া মানসিকতা। উজ্জ্বীবিত বাংলাদেশকে ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি দেশের মাটিতে শক্তিশালী ভারত। মঙ্গলবার রাজকোটে দলের অনুশীলন শেষে আফিফ জানালেন, আগ্রাসী ফিল্ডিং দিয়ে শুরুতেই ভারতকে চমকে দেওয়া ছিল তাদের পরিকল্পনার অংশ। “দলের পরিকল্পনা ছিল, ফিল্ডিংয়ে সবাই আগ্রাসী থাকব। মাঠে সেটাই করার চেষ্টা করেছি। ফিল্ডিংয়ের ব্যাপারে অনেক জোর দেওয়া হচ্ছে, যেন প্রত্যেকটা সুযোগ কাজে লাগাতে পারি।”
সা¤প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যে অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে তাতে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার কাজটা সহজ ছিল না অধিনায়ক ও কোচের জন্য। ভগ্ন মনোবলের দলকে মাহমুদউল্লাহ ও রাসেল ডমিঙ্গো কিভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন, জানালেন আফিফ। “আমাদের অধিনায়কের বার্তা ছিল, যে যেটা সবচেয়ে ভালো পারে, সেটাই করতে হবে। একটা দল হিসেবে খেলতে হবে। এটাই ছিল আমাদের প্রতি তার বার্তা।”
“কোচ আমাদের বলেছেন, সব সময় মন খুলে খেলতে। যে যেভাবে খেলতে পছন্দ করে, তাকে সেভাবে খেলার স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে বলেই এভাবে খেলতে পারছে।” কোচ-অধিনায়কের আন্তরিক প্রচেষ্টার সঙ্গে মিলেছে খেলোয়াড়দের নিজের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালনের চেষ্টা। “সবাই নিজের জায়গা থেকে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই পরিকল্পনাই ছিল দলের। আমরা অনুশীলনে এভাবেই চেষ্টা করেছি।সবাই এক সঙ্গে থেকেছি।” দলকে এক হয়ে খেলতে সাহায্য করেছে তারুণ্যও। মাশরাফি বিন মুর্তজা বেশ আগেই ছেড়েছেন টি-টোয়েন্টি। নিষেধাজ্ঞার জন্য নেই সাকিব আল হাসান। পারিবারিক কারণে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তামিম ইকবাল। দলে তরুণ ক্রিকেটারের ছড়াছড়ি। আফিফ জানান, সিনিয়র খেলোয়াড়রা দারুণভাবে আগলে রেখেছেন তাদের। “আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড়রা জুনিয়রদের অনেক সহায়তা করছেন। এটা আমাদের চাপহীন ও ভীতিহীন ক্রিকেট খেলতে অনেক সাহায্য করেছে। তারা সব সময় সহায়তা করে যাচ্ছেন। আশা করি সামনেও কোনো সমস্যা হবে না।” দিল্লিতে জিতে আত্মবিশ্বাস পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। সিরিজ জেতার ভাবনা মনে এনে নিজেদের অহেতুক চাপে ফেলার কোনো কারণ তারা দেখছেন না। ঠিক রাখতে চান প্রক্রিয়া, এরপর দেখতে চান ফল। শুধরে নিতে চান আগের ম্যাচের ভুল। আগামী বৃহস্পতিবার রাজকোটে হবে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ।