বছরের শুরুতেই রাঙামাটিতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়

79

বছরের শুরুতেই রাঙামাটিতে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। পর্যটন শহর রাঙামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। ভ্রমণ পিপাসুদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে এখানকার পর্যটন কেন্দ্রগুলো। পাহাড়বেষ্টিত এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ কাপ্তাই লেকের দৃশ্য দেখে মন ভরে যায় পর্যটকদের।
রাঙামাটিতে ১১টি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর বসবাস। তাদের রয়েছে নিজ নিজ কৃষ্টি-সংস্কৃতি। রয়েছে নিজ নিজ মাতৃভাষা। তবে রাঙামাটিতে বেশীরভাগ জনগোষ্ঠী চাকমা, ত্রিপুরা ও মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন। জেলায় এখন পাহাড়ি-বাঙালির সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিদ্যমান। চাকমা ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা মাচাং ঘরে বসবাস করতে পছন্দ করে। তাই পাহাড়ের ঢালুতে পাহাড়িদের স্থাপনাগুলো দেখতে যান পর্যটকরা।
রাঙামাটিতে সরকারি-বেসরকারি অনেক পর্যটন স্পট গড়ে উঠেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ব্যাপক হারে পর্যটন স্পট তৈরী হওয়াতে প্রতি শুক্রবার ও শনিবার স্থানীয় পর্যটকদের উপস্থিতিও বেড়ে গেছে। শিশুরা বিনোদনের সুযোগ পাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটন মৌসুমে প্রচুর পর্যটক আসে।
গত এক সপ্তাহ ধরে পর্যটকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে রাঙামাটি। শহরসহ আনাচে-কানাচে বিনোদন ও দর্শনীয় স্পটগুলোতে এখন পর্যটকদের সরব উপস্থিতি লক্ষণীয়। প্রতি বছর বর্ষার পরপরই পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও এবার সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে শুরুর দিকে পর্যটকের আগমন ছিল কিছুটা কম।
রাঙামাটি পর্যটন ও হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, নির্বাচনের কারণে চলতি মৌসুম শুরুর দিকে পর্যটন কমপ্লেক্সে পর্যটকের আগমন কম হলেও এখন পর্যটনের ভরা মৌসুম। বর্তমানে প্রচুর সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটছে। রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সে এখন বুকিং থাকছে প্রায় শতভাগ।
চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসা ডা. আকতার উদ্দিন বলেন, ছেলেকে বান্দরবান ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি করিয়ে বন্ধের দিনে রাঙামাটি ঘুরতে এসেছি, অনেক ভাল লাগেছে। পুলিশ পলওয়েল পার্ক ও সেনাবাহিনীর আরণ্যক ঘুরে আনন্দ পেয়েছি। কাপ্তাই লেকের বিশাল জলরাশি মুগ্ধ করেছে।
শুক্রবার বিকালে ঘুরে দেখা যায়, কাপ্তাই হ্রদে নৌ-ভ্রমণ করছেন প্রচুর পর্যটক। রাঙামাটি সরকারি পর্যটন কমপ্লেক্স ছাড়াও সেখানকার মনোরম ঝুলন্ত সেতু, ডিসি বাংলো পার্ক, জেলা পুলিশের পলওয়েল ও লাভপয়েন্ট স্পট, সুবলং ঝরনা স্পট, আরণ্যক, পেদাটিংটিং, টুকটুক ইকোভিলেজ, বেড়ান্যে লেক, বড়গাং, মুন্সী আবদুর রউফ স্মৃতিসৌধ, সুখী নীলগঞ্জ, রাজবন বিহার, চাকমা রাজার বাড়িসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের সরব উপস্থিতি।
কাপ্তাইয়ের জাতীয় উদ্যান, নৌবাহিনী পর্যটন স্পট, শিলছড়ি স্পট, বিজিবি স্পট, বনশ্রী পর্যটন স্পটসহ বিভিন্ন জায়গায়ও ছুটছেন পর্যটকরা। পাড়ি জমাচ্ছেন ভারতের মিজোরাম সীমান্তবর্তী বাঘাইছড়ির সাজেক পর্যন্ত।
স্থানীয় আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী ‘হোটেল প্রিন্স’ এর মালিক নেছার আহমদ জানান, হোটেলে আগত পর্যটকদের টানা বুকিং চলছে। নির্বাচনের পরপরই বুকিং শুরু হয়েছে। আসছেন বিদেশী পর্যটকও।