বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস শোককে শক্তিতে পরিণত করে জাতি এগিয়ে যাক

4

 

আজ জাতীয় শোক দিবস। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী। আজ থেকে ৪৬ বছর পূর্বে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কিছু পথভ্রষ্ট সেনা কর্মকর্তার নৃশংসতার শিকার হয়ে জাতির জনক, স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবার পরিজনসহ শাহাদাত বরণ করেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ইতোপূর্বে ঘটতে দেখা যায়নি। যা বাঙালি জাতির জন্য একটি কলঙ্কিত ইতিহাস হয়ে রয়েছে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন লালিত, স্বপ্ন ছিল বাংলার স্বাধীনতা, বাংলার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। জীবনের প্রতিটি ধাপে তিনি বাঙালির সার্বিক মুক্তির জয়গান গেয়েছেন। তিনি সোনার বাংলা গড়ে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছেন। তার উক্তি- ‘রাজনৈতিক স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যায়, যদি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না আসে, যদি দুঃখী মানুষ পেট ভরে ভাত খেতে না পারে, কাপড় পড়তে না পারে, বেকার সমস্যা দূর না হয়, তাহলে মানুষের জীবনে শান্তি ফিরে আসতে পারে না।’ বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারী, অকৃত্রিম বন্ধুকে স্বপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার এ শোক রাখার জায়গা বাঙালি কোথাও পাচ্ছে না। বঙ্গবন্ধুর আজীবনের স্বপ্ন ছিল বাঙালি জাতির মুক্তি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে তিনি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়ে বাঙালি জাতিকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাড় করানোর জন্য সকল কর্মসূচি ধীরে ধীরে বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় দেশদ্রোহী কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সেনা কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রের শিকার হন তিনি। যার ফলে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি একটা বড় ধরনের হোঁচট খায়। দীর্ঘদিন বঙ্গবন্ধুর আশা-আকাঙ্খা স্তব্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা জনগণের নিরঙ্কুশ রায় নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা লাভ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যান। যার ফলে দেশ এখন মধ্যআয়ের দেশ রূপান্তরিত হবার দৌড়ে অনেকখানি এগিয়ে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় থাকার কারণে আমাদের দেশ অর্থনীতিসহ সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের সবখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের জোয়ার নিয়ে আসতে সক্ষম হন। ২০২০ সালের মার্চ হতে দেশে বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ দেশে দেখা দিলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সময়োচিত সিদ্ধান্তের কারণে করোনা ভাইরাস দেশে ছড়ালেও দেশের অর্থনীতি ও উন্নয়নের চাকা স্তব্ধ হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপন বাবা, মা, ভাইদের এবং অনেক নিকট আত্মীয়কে হারিয়ে যে মহা শোকের মুখোমুখি হয়েছিলেন, সে শোককে শক্তিতে পরিণত করে তিনি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়নে নিরন্তর এগিয়ে যাচ্ছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকন্যা তার মহান পিতার স্বপ্ন, চেতনা ও আদর্শের বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে সমগ্র জাতিকে বিশ্বের দরবারে সম্মানজনক স্থানে নিয়ে আসতে সক্ষম হচ্ছেন। আজকের এই শোকদিবসে বঙ্গবন্ধুর যেসব খুনিকে শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হয়নি তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার ব্যাপারে জনগণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিজ্ঞকৌশলের দিকে অধীর আগ্রহে থাকিয়ে আছে। জনগণের বিশ্বাস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাঙালি জাতির এমন আশার প্রতিফলন ঘটাতে পারবেন। দেশের বাইরে থাকা হত্যাকারীদের শাস্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতি দায়মুক্ত হবে এমন আশা সমগ্র জাতির। জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে রূপান্তর করে দেশের সাবির্ক উন্নয়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।