বঙ্গবন্ধুর নামে করার প্রস্তাব নওফেলের

46

দেশের লাইফ লাইন খ্যাত কর্ণফুলী নদীর তলদেশের টানেলটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
গতকাল সোমবার (২১ জানুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনোত্তর গঠিত মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে এ প্রস্তাব দেন তিনি। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ প্রস্তাব সমর্থন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে প্রস্তাবটি নোট করার নির্দেশনা দেন।
সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভার প্রথম সভায় নিজের পরিচয় পর্ব শেষ করার পর কর্ণফুলী টানেল প্রসঙ্গ আনেন শিক্ষা উপমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণের প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, যেহেতু চট্টগ্রামে সর্বসাধারণের ব্যবহারযোগ্য তেমন বড় কোনো স্থাপনা নেই, তাই দেশের প্রথম টানেলটি বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ করা যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে যে টানেল হচ্ছে সেটি ইতিহাসের অংশ। বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাসের জায়গা হচ্ছে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতারা, কর্মীরা এবং সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন সবসময়। একই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের প্রতিও। খবর বাংলানিউজের
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে সর্বসাধারণের ব্যবহারযোগ্য বড় কোনো স্থাপনা বঙ্গবন্ধুর নামে নেই। তাই কর্ণফুলী নদীর তলদেশের টানেলটি বঙ্গবন্ধুর নামে হতে পারে। এটি বাংলাদেশের শুধু নয়, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে নদীর তলদেশে প্রথম টানেল।
৩০ শতাংশ কাজ শেষ টানেলের : ‘ওয়ান সিটি অ্যান্ড টু টাউন’ মডেলে দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কে সংযুক্তিসহ ৭টি উদ্দেশ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কর্ণফুলী নদীর তলদেশে চার লেনের সড়ক টানেল নির্মাণ করছে।
দুইটি টিউবের ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ মূল টানেল হবে। টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ রোড এবং ৭২৭ মিটার ওভারব্রিজ আনোয়ারা উপজেলাকে চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে সংযুক্ত করবে।
গতকাল সোমবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) হারুনুর রশিদ চৌধুরী জানান, ইতোমধ্যে টানেল নির্মাণ প্রকল্পের ৩০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফেব্রæয়ারির মাঝামাঝিতে চীন থেকে সংগৃহীত টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) দিয়ে নদীর তলদেশে মূল খনন কাজ শুরু করা হবে।
সূত্র জানায়, টানেল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৫৫ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৮ হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ৩৫০ মিলিয়ন ডলার এবং চীন সরকার ৭০৫ দশমিক ৮০ মিলিয়ন ডলার দেবে। মূল টানেল নির্মাণব্যয় শতভাগ বহন করছে চীন সরকার। ইতিমধ্যে ৩৮৩ একর ভূমির মধ্যে ২৩২ একর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডকে (সিসিসিসি) হস্তান্তর করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাউন্ট ডাউন শুরু হয়েছে। পাঁচ বছরের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।