বঙ্গবন্ধুর ওপর জাতিসংঘের ডাকটিকিট

61

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করলো জাতিসংঘ। শান্তিরক্ষীদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য জাতিসংঘের পোস্টাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এই উদ্যোগ। গত শুক্রবার (২৯ মে) শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে এটি অবমুক্ত করা হয়।
ডাকটিকিটে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, মুজিববর্ষের লোগো ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ছবি। এছাড়া আছে জাতিসংঘের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নিয়োজিত বাংলাদেশের দুই নারী হেলিকপ্টার পাইলটের প্রতিকৃতি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
জাতিসংঘ সদর দফতরে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করার স্মরণীয় মুহূর্তে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘জাতির পিতার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং শান্তির মতবাদের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি এটি। তার দেখানো শান্তির মতবাদের ভিত্তির ওপর গড়ে উঠেছে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি। এর মাধ্যমে তুলে ধরা হলো জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আমাদের প্রতিশ্রূতি। এছাড়া আমাদের বীর ও নিঃস্বার্থ শান্তিরক্ষীদের প্রতি সম্মানের নিদর্শন এই ডাকটিকিট।’ খবর বাংলা ট্রিবিউনের
জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বছরব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন। তারই অংশ এই স্মারক ডাকটিকিট। রাবাব ফাতিমার কথায়, এটি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের সুদীর্ঘ ও গৌরবময় অংশগ্রহণের স্বীকৃতি। এর শিকড় প্রোথিত রয়েছে ১৯৭৪ সালে সাধারণ পরিষদে বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত ভাষণের কালজয়ী ঘোষণায়। তার নীতি-আদর্শ ছিল, ‘মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি একান্ত দরকার’ এবং ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’।
শান্তিরক্ষী দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে বøু হেলমেটের অধীনে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের স্মৃতির উদ্দেশে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ। যেসব শান্তিরক্ষী বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিবেদিতভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন তিনি।
পরবর্তী সময়ে জাতিসংঘ সদর দফতরে একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতিসংঘ মহাসচিব ২০১৯ সালে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গ করে দেওয়া ৮৩ জন শান্তিরক্ষীকে মরণোত্তর দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেলে ভূষিত করেন। তাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশের কনস্টেবল মোহাম্মদ ওমর ফারুক ও সৈনিক আাতিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির একটি বার্তা দেখানো হয়। এ সময় আরও ছিলেন সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্থায়ী প্রতিনিধিরা।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৮ সালে। শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম দেশ বাংলাদেশের ১ লাখ ৭০ হাজার ২২১ জন শান্তিরক্ষী ৪২টি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে ৯টি মিশনে ৬ হাজার ৫৪৩ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী কর্মরত আছেন।