বক্তপুর ইউপি ভবনের করুণ চিত্র

161

ফটিকছড়ির বক্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের পুরনো ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে ইউপি চেয়ারম্যান, সচিব ও সদস্যগণ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সব কাজ সম্পাদন করছেন। জানা গেছে, ১৯৭২ সালে বক্তপুর ইউনিয়ন আলাদা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। শুরুতে ইউনিয়নের শান্তিরহাট বাজারের কাছে একটি গুদাম ঘরে পরিষদের কার্যক্রম শুর হয়। পরবর্তীতে এলাকার দানশীল ব্যক্তি মো. নুরুচছাফা মুন্সি, মো. আবুল কাশেম, মো. করিমুল গণি ও মো. ওসমান গণি পরিষদ ভবনের জন্য ২৮.৫০ শতক জমি দান করেন। সে সময়ে পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইউসুফ আহাম্মদ মাস্টারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৯৮২ সালে জেলা পরিষদ চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ভবনের কাজ শুরু করেন। ১৯৮৩ সালের ৭ অক্টোবর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুস সাত্তার ভবনটির উদ্বোধন করেন। নিন্মমানের কাজের কারণে ভবনটি বেশিদিন টেকেনি। দুই দশকের মাথায় এটির ছাদ ঘেমে পানি পড়তে শুরু করে। ক্রমে জোড়াতালি দিয়ে চলে পরিষদের কার্যক্রম। বর্তমানে পুরো ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী। মোট ৪ কক্ষবিশিষ্ট ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ছাদের কিছু অংশের আস্তরণ প্রায় দিনই খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি ও কাগজপত্র ভিজে যায়। ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব বলেন, স¤প্রতি ছাদ খসে একটি অংশ টেবিলের উপর পড়ে। অল্পের জন্য আমি প্রাণে রক্ষা পাই। তিনি দাবি করেন, ভবনটি অনেক পুরোনো ও জরাজীর্ণ। এখানে বসে বিভিন্ন কাজ করতে ভয় লাগে। ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্যরা বলেন, এ ভবনটি এখন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা প্রয়োজন।
কখন ছাদ ধসে পড়বে, এ ভয় নিয়ে কার্যালয়ের কাজ করতে হয়। এলাকার শালিশ-বিচার মিলনায়তন কক্ষে ছাদের আস্তরন খসে খসে পড়ছে নিয়মিত। কয়েকজন ইউপি সদস্য বলেন, পরিষদের ভবনে বসে দীর্ঘদিন শালিশ-বিচার বা অন্য কোন কাজ করলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। তাছাড়া, শৌচাগারগুলো সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় রোগ বালাই হওয়ারও ঝূঁকি রয়েছে। পরিষদের চৌকিদার মো. আবদুল মালেক বলেন, পুরো ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী। বিভিন্ন কক্ষের ছাদের পলেস্তারা ধসে পড়ছে। তাছাড়া ইলেকট্রিক সুইচ ও যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। কার্যালয়ের চেয়ার, টেবিল, শৌচাগারসহ প্রতিটি উপাদনই অকার্যকর হতে চলছে। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম সোলাইমান বলেন, ভবনটি অনেক পুরোনো। স্যাঁতসেঁতে এবং ছাদ ঝুঁকিপূর্ণ। বর্ষা মৌসুমে ওই ভবনের কক্ষগুলোতে ছাদ থেকে পানি পড়ে। এটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখা হয়েছে। তিনি দাবী করেন, নিজস্ব উদ্যোগ ও অর্থায়নে পরিষদে চেয়ার-টেবিল, কম্পিউটার ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বসানো হয়েছে। যাতে এলাকার লোকজন আধুনিক মনষ্কা হবার সুযোগ পারেছন। তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে এখানে একটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স দাবি করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সায়েদুল আরেফিন বলেন, সেখানে কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা সরকারের আছে। পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে প্রস্তাব পাঠানো যাচ্ছে না। তবে, জায়গা খোজা হচ্ছে, পেলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হবে।