ফেনী নদীর ‘খুব সামান্য’ পানি যাবে ত্রিপুরায়

50

ফেনী নদী থেকে যে পরিমাণ পানি প্রত্যাহার করে ভারত ত্রিপুরা রাজ্যের সাব্রুম শহরে নেবে, তার পরিমাণ ‘খুব সামান্য’ উল্লেখ করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রতিবেশী হিসেবে মানবিকতার বিবেচনায় এতে সায় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে এই সমঝোতা স্মারক সইয়ের পর তা নিয়ে আলোচনার মধ্যে একদিন পর রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চুক্তিটির ব্যাখ্যা দেয় মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশের বহুল কাক্সিক্ষত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক জটিলতায় প্রায় দশককাল ধরে আটকে থাকার মধ্যে ভারতকে ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহারের সুযোগ দেওয়া হয়।
স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় ফেনী নদীর ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করতে পারবে ভারত; ওই পানি তারা ত্রিপুরা সাব্রুম শহরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পে ব্যবহার করবে।
দেশের উত্তরাঞ্চলের প্রধান নদী তিস্তায় শুষ্ক মৌসুমে পানির নিশ্চয়তা না পাওয়ার মধ্যে পূর্বাঞ্চলের ফেনীর পানি প্রত্যাহারের সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে দেশের স্বার্থহানি ঘটেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। খবর বিডিনিউজের
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শুধু পানের জন্য বিধায় মানবিকতা ও প্রতিবেশীসুলভতাকে বিবেচনা করে তাতে সম্মতি দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পানির পরিমাণ উল্লেখ করে এতে বলা হয়, পানির পরিমাণ হল ১.৮২ কিউসেক, যা কিনা পরিমাণে খুব সামান্য, যেখানে ১ কিউসেক সমান ২৮.৩২ লিটার।
মন্ত্রণালয় বলেছে, শুকনা মৌসুমে ফেনী নদীর পানির গড় পরিমাণ ৭৯৪ কিউসেক এবং বার্ষিক পানির গড় পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৮৭৮ কিউসেক।
তাহলে দেখা যায়, ফেনী নদীর ১.৮২ কিউসেক করে পানি প্রত্যাহার শুষ্ক মৌসুমের গড় পানি প্রবাহের ০.২৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত রেখা হয়ে অনেক দূর প্রবাহিত হয়ে ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার পাশ দিয়ে ফেনী নদী বাংলাদেশে ঢুকে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে।
খাগড়াছড়ি সীমান্তবর্তী ত্রিপুরার সাবরুম শহরে ফেনীর পানি প্রত্যাহারের আলোচনাটি ২০১০ সাল থেকে আলোচনায় বলে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকায় ‘ডিসকাশন অব ওয়াটার রিসোর্স’ শিরোনামে বাংলাদেশ ও ভারত দু’দেশের সেক্রেটারি লেভেল মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এ মিটিং এর গৃহীত সিদ্ধান্তপত্রের ৯ নং আর্টিকেলে বলা হয় টেকনিক্যাল লেভেল মিটিং এর সুপারিশের ভিত্তিতে ফেনী নদীর ১.৮২ কিউসেক পানি পানের জন্য দেয়া যেতে পারে মর্মে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।”
ওই বছর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকেও পানি দেওয়ার পক্ষে সম্মতি আসে বলে জানায় মন্ত্রণালয়।