ফেনীর বিপক্ষে জিতে আঞ্চলিক ফাইনালে উজ্জীবিত চট্টগ্রাম

75

মাঠ ছিল পাথরের মত শক্ত, ছিল না কোন অ্যাম্বুলেন্স, একজন হাতুড়ে ছাড়া ছিল না কোন ফিজিও, ম্যাচ কমিশনারের সামনে রেফারিকে শাসালো স্বাগতিক দলের কর্মকর্তা, প্রচন্ড চাপের মুখে রেফারিদের অনেকগুলো সিদ্ধান্ত গেল চট্টগ্রামের বিপক্ষে। তারপরও জিততে পারেনি ফেনী জেলা। ড্রও করতে পারে নি তারা। রেফারির কল্যাণে পেনাল্টি পেয়েও উপরে মেরে নষ্ট করে তারা। ফেনী জেলাকে তাদের হোমগ্রাউন্ডে ২-০ গোলে হারিয়ে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আয়োজিত বঙ্গবন্ধু জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের আঞ্চলিক ফাইনালে উঠেছে চট্টগ্রাম জেলা। গতকাল ফেনী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সেমিফাইনাল খেলার অ্যাওয়ে ম্যাচে চট্টগ্রাম ২-০ গোলে স্বাগতিক ফেনী জেলা দলকে হারিয়ে ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।
এর আগে নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত প্রথম লেগের খেলায় ফেনীর সাথে গোলশূন্য ড্র করেছিল চট্টগ্রাম। ফলে ফেনীতে দ্বিতীয় লেগের খেলায় জয়লাভ ছাড়া চট্টগ্রামের জন্য বিকল্প ছিল না। আবার ফেনীর মাঠে ফেনীর বিপক্ষে আতংকও ছিল চট্টগ্রামের জন্য। কেননা চট্টগ্রামে ফেনী জেলা দল স্বাগতিকদের চাইতে ভালোই খেলেছিল। কিন্তু নিজেদের মাঠের চাইতে ফেনীর মাঠে গিয়ে চট্টগ্রাম তুলনামুলক ভালোই ক্রীড়া নৈপুন্য দেখিয়েছে। ফলে চট্টগ্রামের ফুটবলাররা জয় নিয়ে ফিরতে সক্ষম হয়। প্রথম পর্বে বান্দরবানের বিপক্ষেও নিজেদের মাঠে ড্র করে অ্যাওয়ে ম্যাচে বান্দরবানে জিতে সেমিফাইনালের টিকিট পায় চট্টগ্রাম।
গতকাল ফেনী স্টেডিয়ামে খেলার প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম জেলা দল ১-০ গোলে এগিয়ে থাকে। খেলার ৪২ মিনিটে এ গোলটি করেন চট্টগ্রামের ইয়াসিন। এক গোলের লিড নিয়ে চট্টগ্রাম দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নামে। এ অর্ধেও চট্টগ্রাম আধিপত্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের ২০ মিনিটে আরো একটি গোল করে চট্টগ্রাম নিজেদের জয় সুনিশ্চিত করে নেয়। এ সময় বোরহান অনেকটা একক প্রচেষ্টায় ডি বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের তীব্র শটে চট্টগ্রামের পক্ষে দ্বিতীয় গোল করেন (২-০)। এ গোলের সাথে সাথে চট্টগ্রাম জেলা দলের খেলোয়াড়দের সাথে চিফ দ্য মিশন মাহবুব, ম্যানেজার মসিউল স্বপন, চিফ কো-অর্ডিনেটার কাজী জসিম, দুই কোচ শামসুদ্দিন ও নাজুর সাথে প্যাভিলিয়ন ভর্তি চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া দর্শকের আনন্দ ধ্বনিতে অনন্য এক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এ সময় ফেনী স্টেডিয়ামকে মনে হচ্ছিল চট্টগ্রামেরই কোন মাঠ। টিম ম্যানেজার মসিউল আলম স্বপনের পৃষ্ঠপোষকতায় মর্ণিং ফিটনেস জোনের বিশাল এক বহর ছাড়াও চট্টগ্রাম থেকে সিডিএফএ সেক্রেটারি আ ন ম ওয়াহিদ দুলালসহ বিপুল সংখ্যক ক্রীড়া সংগঠক-ফুটবলামুদে দর্শক গতকাল ফেনী স্টেডিয়ামে ছিলেন চট্টগ্রাম দলকে উৎসাহ ও সাহস যোগাতে। টিম ম্যানেজার স্বপনও খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করতে ঘোষণা করেছিলেন ‘বোনাস’। সব মিলিয়ে গতকাল চট্টগ্রাম টিম ছিল দারুণ উজ্জীবিত। মাঠেও তার পরিচয় মিলেছে খেলোয়াড়দের পরিশ্রম এবং খেলায়। সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে এ যাবৎকালের সেরা পারফর্ম্যান্স দেখিয়েছে চট্টগ্রামের ফুটবলাররা।
আঞ্চলিক ফাইনালে চট্টগ্রামের প্রতিপক্ষ কক্সবাজার জেলা দল। কক্সবাজার গতকাল ৫-০ গোলে খাগড়াছড়িকে পরাজিত করে ফাইনালে উঠে। হোম এন্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে এ ফাইনাল খেলায় আগামী ৩১ জানুয়ারি এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ৩ ফেব্রূয়ারি এই দু’দলের মধ্যে ফিরতি পর্বের ফাইনাল খেলা হবে কক্সবাজার স্টেডিয়ামে।