ফিলিপাইনে অগ্ন্যুৎপাত ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

44

ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলার নিকটবর্তী একটি আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা নির্গমণ শুরু হয়েছে; ‘কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিনের মধ্যে’ এটি ‘বিপজ্জনক অগ্ন্যুৎপাতে’ পরিণত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ। ম্যানিল থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরের তাল আগ্নেয়গিরি থেকে রবিবার বিপুল ছাই নির্গত হওয়ার পর সোমবার ভোররাত থেকে লাভা নির্গমণ শুরু হয়। এর পরপরই আগ্নেয়গিরির ওই দ্বীপ ও সংলগ্ন এলাকা থেকে ১৬ হাজারেরও বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়।
সোমবার ম্যানিলার সব স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তালের নিকটবর্তী এলাকার ঘরবাড়ি, রাস্তা ও ক্ষেত আগ্নেয়গিরির ঘন ছাইয়ে ঢাকা পড়েছে বলে বিবিসির ফিলিপিন্স প্রতিনিধি জানিয়েছেন। আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের কারণে রবিবার ম্যানিলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সব ফ্লাইট চলাচল স্থগিত করে। পরে সোমবার দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ‘আংশিক বিমান চালাচল’ শুরু করা হচ্ছে বলে জানায়।
ফিলিপিন্সের স্টক এক্সচেঞ্জও সোমবার সব ধরনের ট্রেডিং বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। তাল আগ্নেয়গিরির সংলগ্ন ১৪ কিলোমিটার এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ। এই এলাকাটিতে সাড়ে চার লাখেরও বেশি লোক বাস করে বলে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা জানিয়েছে। আগ্নেয়গিরিটির ছাই আশপাশের যেসব এলাকায় এসে পড়েছে সেসব এলাকার লোকজনকে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে ম্যানিলার দোকানগুলো থেকে মাস্ক দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে মেট্রো ম্যানিলার এক বাসিন্দা বিবিসিকে জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে ফিলিপিন্সের আগ্নেয়গিরি ও ভূমিকম্প ইনস্টিটিউট (ফিভোক্স) বলেছে, “তাল আগ্নেয়গিরি চরম অস্থির একটি পর্বে প্রবেশ করেছে। এরই এক পর্যায়ে রাত ২টা ৪৯ মিনিট (স্থানীয় সময়) থেকে ৪টা ২৮ মিনিট পর্যন্ত ম্যাগমা উদ্গিরিত হয়। এই উদ্গিরণে দুর্বল লাভা নির্গমণের সঙ্গে বজ্রধ্বনি ও বজ্রের ঝলকানি ছিল।” ফিভোক্সের পরিচালক রেনাতো সোলিদুম সিএনএন ফিলিপিন্সকে জানিয়েছেন, “ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারেরও বেশি বেগে ছাই, পাথর, গ্যাস নির্গমণ শুরু না হওয়ায় অগ্ন্যুৎপাত এখনো বিপজ্জনক পর্যায়ে যায়নি।”
ফিভোক্স অগ্ন্যুৎপাতজনিত সতর্কতার মাত্রা ৩ থেকে বাড়িয়ে ৪ এ উন্নিত করেছে। এর মাধ্যমে আগামী কয়েক ঘণ্টা বা দিনের মধ্যে বিপজ্জনক অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে তারা। অগ্ন্যুৎপাতের পর ‘সুনামি’ দেখা দিতে পারে বলেও সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ। আগ্নেয়গিরির সময় উৎক্ষিপ্ত লাভা পানিতে পড়ে ঢেউ সৃষ্টি হলে এমন সুনামি দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। রবিবার আগ্নেয়গিরিটি থেকে বড় ধরনের একটি ছাইয়ের কুণ্ডুলি নিগর্ত হয়। এ সময় গর্জনের আওয়াজ ও মাটি কেঁপে ওঠে বলে জানা গেছে। ফিভোক্স জানিয়েছে, ৩২টি দুই মাত্রারসহ মোট ৭৫টি ভূমিকম্প হয়েছে।