ফটিকছড়িতে বিএনপির প্রার্থীর ওপর হামলা আহত ২৫

59

ফটিকছড়িতে নির্বাচনী প্রচারণাকালে ধানের শীষ প্রার্থী কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক বিচারপতি ফয়জীর উপর হামলা করেছে প্রতিপক্ষ নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা। এতে অন্তত ২৫ নেতা-কর্মী আহত হন।
গতকাল রবিবার দুপুরে দক্ষিণ ফটিকছড়ির মুহাম্মদ তকিরহাট বাজারে নির্বাচনী প্রচারণার সময় হামলার ঘটনা ঘটে বলে বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী জানান।
জানা যায়, গতকাল রবিবার সকালে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার তার নির্বাচনের প্রধান সমন্বয়কারী বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক বিচারপতি ফয়সল মাহমুদ ফয়জীসহ অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে দক্ষিণ ফটিকছড়িতে গণসংযোগে বের হন। দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটে দক্ষিণ ফটিকছড়ির মুহাম্মদ তকিরহাট বাজারে তারা পৌঁছলে ১০-১২ জন নৌকার সমর্থক কিরিচ-লাঠি নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে হামলে পড়ে। লাঠির আঘাতে প্রার্থীর মাথা ফেটে যায়, বিচারপতি ফয়জীর বাম হাত ভেঙে যায় ও ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলাম টিটুর মাথা ফেটে যায়। এছাড়া সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল আজমসহ অন্তত ২৫ নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন।
আহত অন্যদের মধ্যে উত্তর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আজম খান, যুবদল নেতা আহমদ রশীদ চৌধুরী, আমিন তালুকদার, ফয়েজ তারেক, ছাত্রদল নেতা মোরশেদ হাজারী, মোহাম্মদ মাসুদ, গিয়াস উদ্দীন, মোহাম্মদ সোহেল, আলাউদ্দীন কাজল, মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মাওলানা নুরুল আলম, মাহিন, এনাম, রায়হানের নাম জানা গেছে।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়। হামলার খবর পেয়ে ফটিকছড়ি ইউএনও মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জানে আলমসহ বিজিবি ও পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং বিএনপি প্রার্থী আজিম উল্লাহ বাহারসহ আহতদের হাসপাতালে দেখতে যান। এ সময় ইউএনও বলেন, প্রকৃত ঘটনা তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপি প্রার্থী আজিম উল্লাহ বাহার বলেন, নৌকার প্রার্থী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমার উপর আক্রমণ করিয়েছেন। আমাকে ভয় দেখানোর জন্যই এ আক্রমণ। আমি সোলজার, আক্রমণকে ভয় পাই না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গণসংযোগ করছিলাম। ধানের শীষের স্লোগান দিয়ে লিফলেট বিতরণকালে নৌকার সন্ত্রাসীরা আমার উপর আক্রমণ করে।
এ ব্যাপারে নৌকার প্রার্থী সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, বিএনপি প্রার্থী আজিম উল্লাহ বাহার অসত্য কথা বলছেন। তিনি আমার প্রতিদ্ব›দ্বী, প্রতিপক্ষ নন। তিনি ফটিকছড়িতে জামায়াত-শিবির প্রতিষ্ঠিত করতে মাঠে নেমেছেন। শিবির কর্মীদের নিয়ে প্রচারণায় নেমেছেন। তার দু’ভাই শিবির ক্যাডার। তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তিনি ক’দিন ধরেইতো নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। কই কোথাও তো সমস্যা হয়নি। আমি তাকে ওয়াদা দিয়েছি- কেউ কাউকে আক্রমণাত্মক কথা বলবো না। কিন্তু তার লোকজন আমাকে ও আমার জোটনেত্রীকে উদ্দেশে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেছেন। আমার নির্বাচনী ক্যাম্পে আক্রমণ করে ভাংচুর চালিয়েছে। তিনি ভদ্র মানুষ, তার কাছ থেকে এ ধরনের মিথ্যা কথা আশা করি না। আমি চাই না কোন অশান্তি সৃষ্টি হোক। আমি তার সাথে বসতে চাই- এক সাথেই নির্বাচনী প্রচারণা করতে চাই। তিনি তার ভোট চাইবেন, আমি আমার ভোট চাইব। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে।
এদিকে এ ঘটনার পর পুরো ফটিকছড়িজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আহত কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহর সমর্থকরা গতকাল বিকেলে নাজিরহাট বাজারে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়।
ফটিকছড়ি থানার সেকেন্ড অফিসার রিদুওয়ানুল হক জানান, স্থানীয় ঝংকার মোড়ে নৌকা প্রতীকের মাইকিংকালে একটি সিএনজি ট্যাক্সি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় পুলিশ ৬-৭ জন বিএনপি কর্মীকে আটক করেছে।
এ ভাংচুরের ঘটনায় সন্ধ্যায় নজিবুল বশরের সমর্থকরাও নাজিরহাট বাজারে পাল্টা লাঠি মিছিল বের করে। পরিস্থিতি থমথমে হয়ে উঠেছে।