ফটিকছড়িতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত

34

ফটিকছড়িতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। টানা এক সপ্তাহ ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে হালদার বেড়িবাঁধে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ১১ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার অন্তত অর্ধশত গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এসব গ্রামের প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এছাড়া গহিরা-হেঁয়াকো সড়কে সেতু ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এবং নাজিরহাট-কাজীরহাট ও নানুপুর-বিবিরহাট সড়কে কোমর পানি হওয়ায় যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। সেখানে লোকজনকে নৌকা করে চলাফেরা করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এখনো উপজেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এতে উপজেলার রোসাংগিরী, সুয়াবিল, সমিতিরহাট, ভুজপুর, লেলাং, কাঞ্চননগর, হারুয়ালছড়ি, নারায়নহাট ও দাঁতমারা ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চলের সবকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গত শনিবার থেকে নতুন করে নাজিরহাট পৌরসভা ও ফটিকছড়ি পৌরসভার অন্তত ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের পরিবারগুলো পাশের বাড়ি কিংবা উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছে।
রোসাংগিরী ইউপি চেয়ারম্যান এস এম শোয়েব আল ছালেহীন বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম পানিতে ডুবে রয়েছে।
নারায়ণহাট ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ হারুন বলেন, গ্রামের অনেক নি¤œাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। কিছু কিছু এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামান্য ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।
সমিতিরহাট ইউপি চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে অন্তত দশ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। গত মঙ্গলবার আরবানিয়ায় হালদার ভাঙ্গনে সাতটি বসতঘর সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে।
লেলাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সরোয়ার হোসেন বলেন, ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম এখনো পানিতে থৈ থৈ করছে। গত শনিবার নতুন করে আরো কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুর্গতদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
কাঞ্চনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রশিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ইউনিয়নের নি¤œাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এলাকার চমুরহাট বাজারটি ধুরুং খালের ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লিটন দেন নাথ বলেন, প্রায় ৩৫০ হেক্টর আমন বীজতলা ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রায় এর বিরুপ প্রভাব পড়বে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সায়েদুল আরেফিন বলেন, এখনো পর্যন্ত অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রামের নি¤œাঞ্চল তলিয়ে রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে পানি বাড়ার সাথে সাথে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৫ মেট্রিক টন চাল, ৪০০ প্যাকেট শুকনা খাবার এবং ১ লাখ টাকা পেয়েছি। এসব ত্রাণ সহায়তা দুর্গতদের মাঝে সরবরাহ করা হচ্ছে।