ফটিকছড়িতে ইউপি সদস্য হত্যার ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ গ্রেফতার ২

34

ফটিকছড়িতে ঈদের দিন ইউপি সদস্যকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় খিরাম ইউপি চেয়ারম্যানসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২৬ মে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন মুহাম্মদপুর এলাকা থেকে এ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন সৌরভকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান হাটহাজারী সার্কেলের এডিশনাল এসপি আবদুল্লাহ আল মাসুম। তিনি আরো বলেন, নিজ ইউপি সদস্য হত্যাকাÐের পর চেয়ারম্যান সৌরভ পালিয়ে নগরীর পাঁচলাইশে তার এক বন্ধুর বাসায় আত্মগোপন করেছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোরে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং রাতে খিরাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আবুল বশর কোম্পানিকেও গ্রেফতার করা হয়। তাদের ফটিকছড়ি থানায় দায়ের হওয়া ইউপি সদস্য হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, গত ২৫ মে ফটিকছড়ির নবগঠিত খিরাম ইউনিয়নের চৌমুহনী বাজারের পূর্বে নিজ বাড়ির পেছনে ইউপি সদস্য জব্বার আলীকে (৪২) গুলি করে খুন করে দুর্বৃত্তরা। নিহত জব্বার খিরাম ইউপির ৫নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত সদস্য। তিনি ওই ওয়ার্ডের আলবেলা বাপের বাড়ির আবুল কাশেমের দ্বিতীয় পুত্র। নিহত মেম্বারের মা সবুজ খাতুন জানান, গত সোমবার ঈদের নামাজ শেষে ঘরেই অবস্থান করছিল আমার পুত্র জব্বার। এ সময় কে যেন আমার পুত্রকে ফোন করে বাড়ী ঘেরাও করার কথা জানায়। এ খবর পেয়ে আমার পুত্র ঘরের পেছন দিয়ে বেরিয়ে একশ গজ দুরে জমিতে পৌঁছামাত্র চেয়ারম্যান সৌরভের অনুসারী বাহাদুর ও সালাউদ্দীন গুলিতে হত্যা করে আর দাড়িয়ে থেকে আমার ছেলের মৃত্যু নিশ্চিত করে চেয়ারম্যানের ছোটভাই মামুন। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, চেয়ারম্যান সৌরভ ও মেম্বার জব্বারের সঙ্গে বিরোধের সূত্রপাত হয় মূলত ২০১৯ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব মুহাম্মদ শহীদুল আলম। মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয় ছাত্রলীগ নেতা সোহরাব হোসেন সৌরভ। মাত্র ৩ ভোটে নৌকার প্রার্থী শহীদুল আলমকে পরাজিত করে বিজয়ী হয় ছাত্রনেতা সৌরভ। ওই নির্বাচনে নিহত ইউপি সদস্য জব্বার ছিল নৌকার প্রার্থী শহীদুল আলমের অনুসারী।
ফলে সব সময় চেয়ারম্যানের রোষানলে ছিল নিহত মেম্বার জব্বার। নবগঠিত এ খিরাম ইউপির প্রথম নির্বাচনের পর থেকে চেয়ারম্যান সৌরভ ও পরাজিত শহীদুল আলমের অনুসারীদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে একাধিক মামলাও হয়েছে। গত ২০ মার্চ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় চেয়ারম্যান সৌরভ গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। সে ঘটনায় জব্বার মেম্বার; নৌকার প্রার্থী শহীদুল আলমের ঘরসহ তার অনুসারীদের কয়েকটি বাড়ী-ঘর পুড়িয়ে দেয় চেয়ারম্যান অনুসারীরা সংক্ষুব্দ জনতা। এদিকে নিহত ইউপি সদস্য জব্বার আলীর ময়না তদন্ত উত্তর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৫টায় তার নামাজে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।