‘প্রয়োজনে গাড়ি পাঠিয়ে ধান আনা হবে’

51

বান্দরবানে কৃষকদের থেকে নায্য মূল্যে সরকারি ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। এই কার্যক্রম চলবে আগামী বছরের ফের্রুয়ারী মাস পর্যন্ত। জেলার সাতটি উপজেলায় এবার ১ হাজার ৩৬১ জন কৃষকের কাছ থেকে ১৪শ ২৯ মে:টন ধান সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট তিনটি বিভাগ। এতে ১৩শ ৬১ জন কৃষক নির্বাচিত করা হয়। এর মধ্যে নাইক্ষ্যংছড়ি ৪২৭, আলীকদম ১৬২, বান্দরবান সদর ৩২০, লামা ৩৯১, রোয়াংছড়ি ৫২, থানচি ৫ ও রুমা উপজেলা থেকে ৪জন কৃষকের নাম নির্বাচিত করা হয়েছে। খাদ্য বিভাগ তালিকাভুক্ত এসব কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি কেজি ২৬ টাকা দামে কিনবে ধান। মঙ্গলবার দুপুরে ধান সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গবেষণা পরিচালক মো. হাজিকুর ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা নয়ন জ্যোতি চাকমা, সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. ওমর ফারুক, প্রেসক্লাবের সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনু, জেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হাসান প্রমুখ। এদিকে সদর উপজেলা গোয়ালিয়াখোলার নির্বাচিত কৃষক আবুল বশর জানান, আমন ধান বিক্রির জন্য কৃষকদের সুবিধা দিতে স্থানীয় বাজার দরের থেকে বেশি সুবিধা দিচ্ছেন সরকার।কিন্তু খাদ্য গুদাম না দিয়ে মাঠ পর্যায়ে স্থানীয় ভাবে ধান সংগ্রহ করা হলে কৃষকরা উপকৃত হতো। তার মতে, যেসব কৃষকদের নির্বাচিত করা হয়েছে তারা ধান পরিবহণ ও মজুদ রাখার পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেনা। কৃষকদের মতে, গোয়ালিয়াখোলায় প্রায় ১শত জনের মত কৃষক রয়েছে তার মধ্যে ৬ জনের নাম তালিকা করা হয়েছে। বেশির ভাগই বাদ পড়েছে। সেই হিসেবে জেলায় উৎপাদনের চেয়ে সরকারি ভাবে এই সংপ্রহ খুবই নগণ্য। এই সংগ্রহের পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বাড়ালে ধান উৎপাদনে কৃষকের ক্ষতি অনেকাংশে কমে আসবে। বর্তমানে ধান সংগ্রহ অভিযানে কৃষকদের মাঝে কিছুটা হলেও হতাশা দেখা দিয়েছে। বান্দরবান জেলা খাদ্য গোদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেছেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে লটারীর মাধ্যমে কৃষকের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বান্দরবান পাহাড়ী এলাকা হওয়ায় সঠিক সময়ে ধান গোদামে আসেনি। মঙ্গলবার থেকে ধান সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রচার প্রচারণার বিষয়ে তিনি আরো বলেন, গত বছরের চেয়ে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য একটু দেরীতে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। দূর্গম এলাকায় পর্যাপ্ত কৃষক থাকলে প্রয়োজনে গাড়ি পাঠিয়ে ধান আনা হবে বলে জানান তিনি। জেলা কৃষি সম্প্রসার বিভাগের উপ পরিচাল ড.এ কে এম নাজমুল হক জানান,সরকারী ভাবে ধান সংগ্রহে জেলার সাতটি উপজেলা থেকে কৃষিকদের তালিকা করা হয়েছে। কৃষকদের তালিকার মধ্যে থেকে ১৪শ ২৯ মেট্রিক ধান ক্রয় করা হবে।তবে অতিরিক্ত কৃষক হলে লটারীর মাধ্যমে আরো কৃষক নির্বাচিত করে ধান সংগ্রহ করা হবে। তিনি আরো জানান,আমাদের চাষীদের মধ্যে যারা আমন ধান চাষ করেছেন তার মধ্যে বড় চাষী, মাঝারী চাষী এবং ক্ষদ্র প্রান্তিক চাষী রয়েছে সবাই থেকে সরকারী নিধারীত মূল্যে ধান সংগ্রহ করা হবে। তবে বান্দরবানে ধান কাটা দেরিতে হয় যার কারণে মঙ্গলবার থেকে সদরে ধান ক্রয় শুরু হয়েছে এবং কৃষকরা ধান বিক্রি করছেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা নয়ন জ্যোতি চাকমা জানান, জেলার সাতটি উপজেলা থেকে আমন ধান সংগ্রহ শুরু করা হয়েছে। কৃষকরা যাতে লাভবান হন সে জন্য প্রতিবছরই ধান কেনার পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। নির্দিষ্ট মান নিয়ন্ত্রণ করে সরকার কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান কিনছে। সাতটি উপজেলা থেকে ১৩শ ৬১ জন কৃষক নির্বাচিত করা হয়েছে। আশা করি সংগ্রহ সীমা (ফেব্রæয়ারী) মাসের মধ্যে ধান সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্য মাত্রা অর্জিত হবে। এতে দুশ্চিতার কোন কারন নেই।
কৃষি দপ্তর কর্তৃক সরবরাহকৃত তালিকার মধ্য থেকে লটারীর মাধ্যমে ধান সরবরাহ করা হবে। অত্যান্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংগ্রহ সময় সীমার মধ্যে সম্পূর্ণভাবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যাবে বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।