প্রিয়া কিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে তদন্ত করা উচিত

29

এনজিওকর্মী প্রিয়া সাহা কীভাবে এবং কাদের প্রতিনিধি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গেলেন তা তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। একই সঙ্গে ট্রাম্পের কাছে প্রিয়া বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের যে অভিযোগ করেছেন তাতে তার দুদক কর্মকর্তা স্বামীর প্ররোচনা আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা উচিত বলে মত দিয়েছেন তিনি। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গতকাল রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘ধর্মীয় স্বাধীনতায় অগ্রগতি’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে ওয়াশিংটনে যাওয়া প্রিয়া সাহা গত ১৭ জুলাই হোয়াইট হাউজে এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ওই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নিখোঁজ হয়েছেন। তার ওই বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় দেশের বিভিন্ন মহলে। খবর বিডিনিউজের
প্রিয়া সাহা যে অভিযোগ করেছেন তার পেছনে মার্কিন দূতাবাসের ‘দুরভিসন্ধি’ রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
তাকে যারা যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে তাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেবেন কিনা- এই প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, অবশ্যই সেটি খোঁজ-খবর নেওয়ার বিষয়, খোঁজ-খবর নেওয়ার দাবি রাখে। কারণ তিনি কীভাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হলেন? যেখানে তার এই বক্তব্যের সঙ্গে বাংলাদেশের সমস্ত সংখ্যালঘুরা দ্বিমত পোষণ করছে, তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে, তিনি কীভাবে কাদের প্রতিনিধি হলেন সেটি অবশ্যই তদন্তের বিষয়।
এই ঘটনার সঙ্গে নোবেলজয়ী মুহম্মদ ইউনূসের যোগসাজোশ দেখছেন কি না- সেই প্রশ্নে হাছান বলেন, এটিও অবশ্যই তদন্তের দাবি রাখে। কারণ এই ধরনের একটা বক্তব্য, বিধ্বংসী বক্তব্য, দেশবিরোধী বক্তব্য, দেশের শান্তি-স্থিতি যেটি বিরাজ করছে সেটার বিপক্ষে এটা জঘন্য মিথ্যাচার। তাকে কারা সেখানে প্রতিনিধি হিসাবে পাঠাল, এর পেছনে কারা যুক্ত ছিল, এর উদ্দেশ্য কী- সমস্ত কিছুই তো তদন্তের দাবি রাখে।
তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কী করা হবে সেটি হচ্ছে অন্য প্রশ্ন। তবে তার বক্তব্য দেশের বিরুদ্ধে, দেশে যে উদাহরণযোগ্য সা¤প্রদায়িক-স¤প্রীতি স্থাপন করতে পেরেছি সেটার বিপক্ষে। সুতরাং এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করে নিশ্চয়ই সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি দেশে এলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাকে নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে। আমি মনে করি এটি দেশের বিরুদ্ধে এবং এই বক্তব্যের সঙ্গে দেশের শান্তি-স্থিতি বিনষ্ট করার কোনো চক্রান্ত কিনা- সেটি ভেবে দেখার বিষয়।
প্রিয়া সাহা দেশে না ফিরলে কীভাবে ব্যবস্থা নেবেন, সেই প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, তিনি যেহেতু বাংলাদেশের নাগরিক তিনি দেশে আসবেন, তিনি ভিসা নিয়ে যেহেতু গেছেন দেশে আসাটাই হচ্ছে স্বাভাবিক। তিনি না আসলে কী হবে সেটা বলার এখনও সময় আসেনি।
প্রিয়া সাহার স্বামী দুদকের সহকারী পরিচালক জানিয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না?
জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আইন যেটি বলে- স্বামীর অপরাধে স্ত্রী অপরাধী নয় বা স্ত্রীর অপরাধে স্বামী অপরাধী নয়। কিন্তু এই বক্তব্যের সাথে স্বামীর কোনো প্ররোচনা আছে কিনা- সেটি অবশ্যই তদন্তের বিষয় হতে পারে।
গণআন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা হবে বলে চট্টগ্রামে এক সমাবেশে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঘোষণা দিয়েছেন। এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া চান একজন সাংবাদিক।
হাছান মাহমুদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে গণরোষের কারণেই ইতোমধ্যে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক পতন হয়েছে। তারা যেভাবে তের, চৌদ্দ, পনের সালে অগ্নিসন্ত্রাস চালিয়েছে, দিনের পর দিন মানুষকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে, মানুষের উপর হামলা পরিচালনা করেছে এবং নির্বাচনকে পন্ড করার জন্য এত চেষ্টা চালিয়েছে, অর্থাৎ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করার চেষ্টা চালিয়েছে। সেই কারণে গণরোষের কারণেই ইতোমধ্যে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক পতন হয়েছে। বিএনপি এখন জনগণ কর্তৃক ধিকৃত একটি দল। আমি তাদেরকে অনুরোধ জানাব- জনগণকে বরং আস্থায় আনার জন্য তারা যেন কর্মসূচি গ্রহণ করে।