প্রিয়জনের সাথে ঈদ উদযাপনে গ্রামে যাচ্ছে মানুষ নগরী প্রায় ফাঁকা

45

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বুধ বা বৃহস্পতিবার উদ্যাপিত হবে পবিত্র ঈদুল ফিতর। প্রিয়জনের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামে ছুটছেন সবাই। নাড়ির টানে ছুটছেন সবাই গ্রামের পানে। এ কারণে নগরী প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছে। বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশনে প্রচন্ড ভিড়। কয়েক মিনিট পর পরই বাস ছাড়ছে। তবে চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে এবার নেই যানজট। স্বস্তির ঈদ যাত্রার মধ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে সরকরি ছুটি। গতকাল সোমবার একদিন অফিস আদালত খোলা থাকলেও উপস্থিতি তেমন একটা ছিল না। অনেকে এদিন ছুটি নিয়েছেন। অধিকাংশ মানুষ ইতোমধ্যে কেনাকাটা সেরে নিয়েছেন।
গতকাল সকালে রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার যাত্রী অপেক্ষা করছেন। ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলায় তাদের গন্তব্য। ট্রেন আসা মাত্রই যাত্রীরা হুড়মুড় করে উঠে পড়ছেন। ছাদেও বিপজ্জনকভাবে ভ্রমণ করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে চাঁদপুরগামী ট্রেনের ছাদে অসংখ্য যাত্রী দেখা গেছে। দোহাজারী লাইনেও অনেকে ছাদে উঠে বাড়ি যাচ্ছেন। নির্ধারিত সব ট্রেনই স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছে। তবে কয়েকটি ট্রেন কিছুটা বিলম্বে ছাড়ছে। ফ্ল্যাটফর্ম, স্টেশনজুড়ে যাত্রীদের প্র্নড ভিড়। দাঁড়ানোর জায়গাও নাই।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দুই জোড়া বিশেষ ট্রেনসহ আটটি ট্রেনের ২২টি বগি চট্টগ্রামের রেলওয়ের কারখানার কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য দেয়া হয়েছে। রেলওয়ের সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম রেলওয়ের প্রায় দেড় হাজার কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বিনা ভাড়ায় এসব বগিতে করে বাড়ি যাচ্ছেন।
শুভপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গেছে, মানুষ আর মানুষ। তিল ধারণের ঠাঁই নাই। এই বাসস্ট্যান্ড থেকে ১৭টি জেলার বাস ছাড়ে। নারী-শিশুকে নিয়ে এসেছেন লোকজন। টিকেট আগেই করা আছে। অনেকে তাৎক্ষণিক করছেন। বাস আছে, আর যাত্রীরা উঠছেন। নিমিষেই পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে বাস। এ বাসস্ট্যান্ড যেন মানুষের মেলা। বাসস্ট্যান্ড ছাড়িয়ে পুরো এলাকাজুড়ে মানুষ আর মানুষ।
কে সি দে রোড, গরীবুল্লাহ শাহ মাজার বাস কাউন্টার, অলংকার মোড়, সিটি গেটে বাস স্টেশনেও একই অবস্থা। দূরপাল্লার বাসেও ভিড়। ঢাকাসহ বিভিন্ন দূরদুরান্তের জেলার মানুষগুলো নগর ছাড়ছে। কাউন্টারে টিকেটও নেই। আগেই টিকেট শেষ হয়ে গেছে।
বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল, অক্সিজেন মোড়, শাহ আমানত সেতু এলাকায় অসংখ্য যাত্রীর ভিড়। এসব বাসস্ট্যান্ডে হাজার হাজার যাত্রী দেখা গেছে। একের পর এক বাস ছাড়ছে আর যাত্রীরা উঠছেন।
এবার চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কে যানজট না থাকায় স্বস্তির ঈদ যাত্রাই হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষের চাপ কয়েক গুণ বেড়েছে। মানুষের চাপ সামাল দিতে সমহারে বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যাও। তবে সড়কের কোথাও যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। স¤প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতু উদ্বোধনের পরই মহাসড়কের দৃশ্য পাল্টে যায়। আগে এই তিন সেতু পার হতে প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা লেগে যেত। কিন্তু এখন এই সেতু পার হতে সময় লাগে মাত্র ১০-১৫ মিনিট। মূলত এ কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাধ্যমে এবার মানুষ স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারছে।