প্রাকৃতিক বিপর্যয়রোধে গাছপালা অপরিহার্য

41

নগরবাসীকে গাছ লাগাতে উৎসাহী করতে আয়োজন করা হয়েছে ‘সবুজ মেলা’র। কাজীর দেউড়ির আউটার স্টেডিয়ামে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে ১৫ দিনব্যাপী এই মেলা। তিলোত্তমা চট্টগ্রামের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এই ‘সবুজ মেলার’ আয়োজন করে। মেলা আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন মেলা সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। গতকাল বিকেলে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন। পরে তিনি স্টল পরিদর্শন করেন।
এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, গাছপালা ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকার কোনো উপায় নাই। মানুষ না থাকলে গাছের কোনও অসুবিধা হতো না। কিন্তু গাছ না থাকলে এই পৃথিবীতে মানুষের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেত। গাছ যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৃদ্ধিকারক, তেমনি আবার পরিবেশ সংরক্ষণেরও সজিব প্রতীক। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রতিরোধে বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। মানবসৃষ্ট কর্মকান্ডের বিরূপ প্রভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে দেশে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ¡াস, বন্যা ও খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। এই দুর্যোগ থেকে উত্তরণের জন্য প্রত্যেক নাগরিককে বৃক্ষ রোপণ ও পরিচর্যায় আন্তরিক হওয়ার আহব্বান জানান সিটি মেয়র।
নগরবাসীকে বেশি বেশি গাছ লাগানো ও ছাদবাগান করার আহব্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, ছাদবাগানে আমাদের পরিবেশ মানসম্পন্ন হবে। অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় চাহিদা, সেগুলো পূরণ হবে। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য যে অক্সিজেন প্রয়োজন হয় তা আমরা পাব। মেয়র বলেন, আমাদের এ মেলা তখনই সফল হবে যদি মেলার মাধ্যমে এ নগরের বসবাসকারীদের সচেতন করতে পারি, উদ্বুদ্ধ করতে পারি। নগরবাসী প্রত্যেকে যদি নিজের আঙিনায় বা কারখানার পাশে বৃক্ষরোপণ করে তাহলেই আমাদের আয়োজনটা সফল হবে।
সবুজ মেলার আহব্বায়ক কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জেরিন আকতার ও বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. মাহবুবুর রহমান।
ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়নমেন্ট সায়েন্সের অধ্যাপক ড. জেরিন আকতার বলেন, দেশের ২৫ ভাগ বনভূমি দরকার ভারসাম্য রক্ষার জন্য। একসময় সবুজ বৃক্ষরাজি ছিলো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় বৃক্ষরোপণ বেড়েছে। এখন দেশের প্রায় ১৯ ভাগ অংশে বনভ‚মি। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বিশ্বস্ত হাতিয়ার বনায়ন।
ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, সবুজ মেলার উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষকে বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করা। সরকারি বনভূমির পাশাপাশি সামাজিক বনায়ন ও গ্রামীণ বনভূমি সৃষ্টি হচ্ছে। পাহাড়ধস রোধে বায়ো ইঞ্জিনিয়ারিং দরকার। বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের শতাধিক উদ্ভাবনী প্রযুক্তি রয়েছে। বনভূমি রক্ষার পাশাপাশি জীবনমান উন্নয়নে টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে।
শুরুতে কবিগান পরিবেশন করেন কবিয়াল কল্পতরু ভট্টাচার্য। স্বাগত বক্তব্য দেন চসিকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ একেএম রেজাউল করিম।