প্রসবের পরই জীবিত কন্যাশিশুকে জঙ্গলে ফেলে দিলেন মা

18

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় শিরিন বেগম নামের এক প্রসূতির বিরুদ্ধে প্রসবের পরই সদ্যোজাত কন্যাশিশুকে জীবিত অবস্থায় জঙ্গলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের ঠাকুরকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সদ্যোজাতকে জীবিত অবস্থায় জঙ্গলে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন শিরিন।’-খবর বাংলা ট্রিবিউনের
শিরিন বেগম ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের ঠাকুরকান্দি গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন প্রধানের স্ত্রী। এ দম্পতির তিন বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিরিন প্রসব ব্যথা অনুভব করলে তার শাশুড়ি গ্রামে ধাত্রীকে খুঁজতে বের হন। এ সময় শিরিনা বাথরুমে যান। পরে সেখানেই তার এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, এর কিছুক্ষণ পরই ওই কন্যাশিশুকে বাড়ির পাশে জঙ্গলে এক গর্তে ফেলে দেন শিরিন।
সূত্র আরও জানায়, পরে বাড়ি ফিরে ঘটনাটি বুঝতে পারেন শিরিনের শাশুড়ি। তখন শিরিন সব কথা স্বীকার করেন। শাশুড়ির চিৎকার ও কান্নাকাটিতে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে ঘটনাটা জানাজানি হয়।পরে স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে খবর পেয়ে ছুটে আসে পুলিশ এবং মৃত নবজাতক ও তার মা শিরিনকে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গোলাম নবী খোকন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই মহিলার প্রসব বেদনা শুরু হয়। এ সময় শাশুড়ি ধাত্রী খুঁজতে যান। পরে তিনি ঘরে এসে বউকে বাথরুমে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেন। এ সময় শাশুড়ি নবজাতকের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে শারমিন জানান, জন্ম নেওয়ার পরই শিশুকে জঙ্গলে ফেলে দিয়ে এসেছেন।’
তিনি আরও দাবি করেন, ‘শারমিন জীবিত অবস্থায় বাচ্চাকে জঙ্গলে ফেলে দিয়েছেন। এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, ওই নারীর (শিরিন) মানসিক সমস্যা আছে। এ কারণেই তিনি এমন কাজ করে থাকতে পারেন। পরে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা।’
মতলব উত্তর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সালাউদ্দিন বলেন, ‘সেদিন (বৃহস্পতিবার) রাতেই শিরিন ও তার মৃত শিশুটিকে থানায় নিয়ে আসা হয়।’
একই থানার ওসি নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি (শিরিন) জানিয়েছেন, বাথরুমে ঢুকে পড়ে গিয়ে প্রচন্ড আঘাত পান। এ সময় সেখানেই তার সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। এতে নাভি ছিঁড়ে যায় এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। বাচ্চা প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়লে তাকে জঙ্গলে বাঁশঝাড়ে রেখে আসেন। পরে আমরা খবর পেয়ে নবজাতকসহ ওই নারীকে থানায় নিয়ে আসি এবং তাকে (শিরিন) মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।’
ওসি আরও বলেন, ‘বাচ্চাটি জীবিত না মৃত হয়েছিল, তা জানতে ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ মর্গে পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়া গেলে অনেক কিছু জানা যাবে।’