প্রশ্নফাঁস হবে না এসএসসির

40

প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে না বলেই তারা আশা করছেন।
মাধ্যমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়া পরীক্ষার্থীদের পরিসংখ্যান জানাতে গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
দীপু মনি বলেন, গত বছর যে পদ্ধতিটা অনুসরণ করা হয়েছিল সেই পদ্ধতি কার্যকর হয়েছিল এবং গত বছর কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। এ বছর আমরা সেই পদ্ধতিটিকে আরও জোরদার করেছি। কাজেই আমরা আশা করছি যে, এ বছর কোনো প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে না।
প্রশ্নফাঁস নিয়ে রটনার অনেকটাই গুজব মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এই পর্যন্ত পরীক্ষা করে দেখা গেছে ৮০ ভাগের উপরে হল গুজব। কিন্তু ওই যে কুড়িভাগ যেখানে সত্য হয়েছে, আমরা সেই কুড়িভাগের জায়গাও রাখতে চাই না।
গত কয়েক বছর ধরে পরীক্ষার আগের রাতে ফেসবুকের মাধ্যমে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হয়ে যায়। গত বছর এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের কোনো অভিযোগও ওঠেনি।
দীপু মনি বলেন, কেউ যদি (প্রশ্নফাঁসের) গুজব রটায় সেই গুজবে যেন কেউ কান না দেন। কেউ প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব রটাতে পারেন। সেই গুজবে কান দিয়ে পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা যেন প্রতারিত না হন, এ ব্যাপারে সবার কাছে উদাত্ত আহবান থাকল।

পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ, পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে প্রশ্নের সেট কোড জানানো, কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কারো মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞাসহ সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। খবর বিডিনিউজের
এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেবেন। এরমধ্যে ১০ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯২ জন ছাত্রী এবং ১০ লাখ ৭০ হাজার ৪৪১ জন ছাত্র।
দেশের তিন হাজার ৪৯৭টি কেন্দ্রে ২৮ হাজার ৬৮২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এবার মাধ্যমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসবেন। বিদেশের আটটি কেন্দ্রে ৪৩৪ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
এবারও বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র ছাড়া অন্য সব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রæতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। এ ধরনের প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেওয়া হবে।
এছাড়া অটিস্টিক ও ডাউন সিনড্রোম প্রতিবন্ধীরা অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময়ের পাশাপাশি শিক্ষক, অভিভাবক বা সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষা দিতে পারবেন বলেও জানান দীপু মনি।
২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ২২ লাখ ৮৮ হাজার ৩২৩ জন শিক্ষার্থী নিবন্ধন করলেও এদের মধ্যে এবার ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৭ জন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেবেন। এই হিসেবে নিবন্ধন করেও পরীক্ষায় বসছেন না ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৩৮৬ জন শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দীপু মনি বলেন, এটা ড্রপ আউট না। দুবছর আগে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। আগে টেস্ট পরীক্ষায় যারা ৩-৪ বিষয়ে ফেল করত তাদেরও পরীক্ষা দিতে দেওয়া হত।
গত কয়েক বছর থেকে বলা হচ্ছিল, টেস্টে যারা পাস করবে না তাদের যেন কেন্দ্রে পাঠানো না হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কড়াকড়ি করছে। গতবার থেকে দুদকও কড়াকড়ি করছে কোনো স্কুল যেন এটা না করে। সেজন্য সম্ভবত সংখ্যাটি কমেছে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।