প্রমাণভিত্তিক প্রচারণায় উত্তর জেলা যুবদল

23

কেন্দ্রের নির্দেশনা মতো পালন করা হয় কর্মসূচি। সে কর্মসূচি পালনের প্রমাণও রাখতে হয়। এজন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা ছাড়াও ভিডিও ধারণ করে রাখা হয়। আর এমন প্রমাণভিত্তিক প্রচারণায় নিয়োজিত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদল। নিজেদের কার্যক্রম সম্পর্কে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই এটা করা হয় বলে দাবি নেতাদের। অবশ্য সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রমে না থেকে এসবকে লোক দেখানো কর্মসূচি বলে দাবি একপক্ষের।
আন্দোলন-সংগ্রাম ও সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উত্তর জেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে ভেঙে দেয়া হয় ২০১১ সালে গঠন করা সাত সদস্যের আংশিক কমিটির কার্যক্রম। পূর্ণাঙ্গ কমিটি পাওয়ার পর কিছুটা গতিও চোখে পড়ে। একমাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার কথা থাকলেও সেটা তিনমাসে সম্পন্ন হয়। তবে কমিটি গঠনের পর যেন স্থিমিত হয়ে পড়ে কার্যক্রমে। অনেকটা কার্যক্রমহীন অবস্থায় উত্তর জেলা যুবদল দিনাতিপাত করছে বলে অভিযোগ আছে। শুধু কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিতে লোক দেখানো উপস্থিতি, আন্দোলন-সংগ্রামের কর্মসূচিতে নিরবতা এবং সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রমে না থাকার অভিযোগ আছে নেতাদের বিরুদ্ধে। অবশ্য সব কর্মসূচিতে সরব উপস্থিতির কথা জানালেন কমিটির নেতারা।
উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান মোহাম্মদ জসিম বলেন, জাতীয় যে কর্মসূচি আসলে সেগুলো আমরা যথাযথভাবে পালন করি। তাছাড়া আমরা বড় আকারের যুব সমাবেশ করেছি। বিশাল সমাবেশ হয়েছে। বিভাগীয় ঐক্যফ্রন্টের অধীনে সমাবেশ করেছি। সবগুলো কর্মসূচিতে আমরা ছিলাম। আমাদের ভিডিও করা আছে সব। ফেসবুকেও কার্যক্রমের ভিডিও আছে।
সাংগঠনিক কার্যক্রমের বিষয়ে তিনি বলেন, থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের কার্যক্রম কেন্দ্র থেকে স্থ’গিত রাখতে বলা হয়েছে। উপজেলা ও ওয়ার্ড নেতাদের সাথে যোগাযোগ চলছে। কেন্দ্র যখন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিবে তখনই কমিটি গঠন করা হবে। গতবছরের ১৪ জুন উত্তর জেলা যুবদলের ৫ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। এর তিনমাস পর ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে হাসান মো. জসিমকে সভাপতি, ইউসুফ চৌধুরীকে সিনিয়র সহসভাপতি, এসএ মুরাদ চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক, এইচএম নুরুল হুদাকে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও আওরঙ্গজেব মোস্তাফাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহসভাপতি পদে রাখা হয়েছে ২৮ জনকে, যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে ২৫ জনকে। এছাড়াও সহ সম্পাদক পদে রাখা হয়েছে ১৭ জনকে। সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে ১৮ জনকে। এছাড়া আরো ৪০ জনকে সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে। বড় আকারের কমিটি গঠন করা হলেও বড় কোনো কার্যক্রমে এখনো উত্তর জেলা যুবদলকে দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে কথা বলতে উত্তর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এসএ মুরাদ চৌধুরীর সাথে বারবার চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
একই বিষয়ে কথা হলে উত্তর জেলা যুবদলের সাবেক এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নতুন কমিটির মূল কাজ ছিলো সরকারবিরোধী আন্দোলন আরো চাঙ্গা করা। শহীদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়ন ও বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি থেকে মুক্ত করার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম বিস্তৃত করা। কিন্তু এসকল কার্যক্রমের কোনটিতেই বর্তমান কমিটি সক্রিয় নেই। দলের এ দুঃসময়ে উত্তর জেলা যুবদল পুরোপুরি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ফেসবুক মার্কা কার্যক্রম দিয়ে কোনো সুফল আসবে না।
বর্তমান কমিটির এক নেতাও নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রাজনৈতিক অবস্থা ঠিক নেই। এরমধ্যেও আমরা কার্যক্রমে সক্রিয় আছি। প্রতিটি কার্যক্রমের ভিডিওচিত্র করা আছে। সোস্যাল মিডিয়াতেও আমাদের কার্যক্রম দেখতে পাবেন। পরিস্থিতি অনুকূলে না আসলে বড় আকারের কার্যক্রম সম্ভব নয়। কারণ এখন পুলিশের অনুমতি ছাড়া কিছু করা যায় না।