প্রবাসীদের ভোটার করতে চালু হচ্ছে রেজিস্ট্রেশন

44

বিদেশে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে দেশে ভোটার হিসেবে নথিভুক্ত হতে পারেন, সেজন্য অচিরেই একটি পদ্ধতি চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। গতকাল বৃহস্পতিবার দিল্লিতে একটি সেমিনারে এ কথা বলে তিনি।
মেকিং আওয়ার ইলেকশনস মোর ইনক্লুসিভ অ্যান্ড অ্যাকসেসিবল’ শীর্ষক এক সেমিনারে যোগ দিতে সিইসি নূরুল হুদা ভারত সফরে এসেছেন। দু’দিনব্যাপী এই সেমিনারের আয়োজক ভারতীয় জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
ওই সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নূরুল হুদা প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ‘ভোটার রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমে’র কথা জানান। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তিনি তুলে ধরেন এই সিস্টেমের নানা দিক।
যেসব দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেশি, নতুন সিস্টেমের আওতায় সেসব দেশে ‘বাংলাদেশের নির্বাচন বিশেষ কার্যালয়’ চালু করা হবে বলেও তিনি জানান।
এই ভোটার রেজিস্ট্রেশন অফিস চালু করা হবে সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, কুয়েত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য (ব্রিটেন), যুক্তরাষ্ট্র (আমেরিকা), ইতালি, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার মতো বিভিন্ন দেশে। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
সিইসি’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১৫৭টি দেশে এই মুহূর্তে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করছেন, দেশের নির্বাচনে যাদের ভোট দেওয়ার অধিকার আছে।
কিন্তু তাদের অনেকেরই জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, বা তারা ভোটার তালিকায় নাম তুলতে পারেননি। একারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা যে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি, সে কথাও সিইসি স্বীকার করেন।
এই সমস্যার প্রতিকারেই প্রবাসীদের জন্য চালু করা হচ্ছে বিশেষ এই ভোটার রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি। এর ‘ফিজিবিলিটি স্টাডি’ করার জন্য টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন দেশে সফর করবেন বলেও সিইসি জানান।
তিনি দিল্লিতে যে সেমিনারে এই পরিকল্পনার রূপরেখা তুলে ধরেন, সেখানে ভারত ছাড়াও নেপাল, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, ভুটান, কাজাখস্তান, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নির্বাচনি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও ছিলেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা আলোচনা সভায় ‘কী নোট অ্যাড্রেস’ বা মূল বক্তব্য পরিবেশন করেন।
বাংলাদেশে গত ৩০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের পর এটাই ছিল প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার প্রথম বিদেশ সফর।
দিল্লিতে এদিন তিনি আরও দাবি করেন, বাংলাদেশে সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তারা দেশকে একটি ‘ইনক্লুসিভ’ নির্বাচন উপহার দিতে পেরেছেন।
ওই নির্বাচন ‘সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ’ ছিল বলে জানিয়ে সিইসি আরও জানান, ১৬০ জন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক এবং স্থানীয় পর্যায়েও ৮১টি সংস্থার ২৫ হাজার পর্যবেক্ষক সম্পূর্ণ বিনা বাধায় নির্বাচনি পরিস্থিতি ঘুরে দেখেছেন তাদের কোথাও কোনও অসুবিধা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ভারতের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলকে বাংলাদেশের ভোট পর্যবেক্ষণে পাঠানো হয়েছিল। তারাও জানিয়েছিলেন, যেভাবে নির্বাচন হয়েছে তা দেখে তারা সন্তুষ্ট।