প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দিয়ে ফেসবুকে ভিডিও বার্তা

98

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুমকি দিয়ে ফেসবুকে ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন এক রোহিঙ্গা যুবক। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরই এ নিয়ে তোলপাড় চলছে সর্বত্র। হুমকিদাতা রোহিঙ্গা যুবক দামি জামা এবং অলঙ্কারে শোভিত অবস্থায় একটি গাড়িতে বসে আরাকানি ভাষায় ‘পরিণতি খারাপ হবে’ বলে হুমকি দেন প্রধানমন্ত্রীকে। একই সাথে বাংলাদেশের যত উঁচু দালান-কোঠা স্থাপনা আছে, সবই ধ্বংস করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন, ফলে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে দ্রুত চলে যেতে হতে পারে- এটাই মূলত তাদের মাথাব্যথার কারণ, যা ওই যুবকের ভিডিও বক্তব্যে স্পষ্ট।
রোহিঙ্গা যুবক বলেন, রোহিঙ্গাদেরকে যেন বাধ্য করা না হয়। তারা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সংগঠিত হচ্ছে। এখানে থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চায়।
হুমকিদাতা যুবক ‘বাংলাদেশের মুসলমান সম্প্রদায়কে’ তাদের প্রতি সহনশীল হওয়ারও আহবান জানিয়ে বলেন, মুসলমান হয়ে যেন তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান না নেয়, তাতে পরিণতি ভালো হবে না।
গতকাল শুক্রবার রোহিঙ্গা নেতাদের সাথে কথা বলে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের ডা. জাফর আলম ডিপু তার পরিচয় নিশ্চিত করে জানান, হুমকিদাতা রোহিঙ্গার নাম আব্দুল খালেক। তিনি সপরিবারে মালয়েশিয়া অবস্থান করছেন। তার পিতা আব্দুস সালাম মিয়ানমারের বলীবাজার ধুমবাই এলাকার হুয়াক্কাট্ট (চেয়ারম্যান) ছিলেন। এখন তার পিতা-মাতা কেউ বেঁচে নেই। তবে তারা ৮ ভাই, তাদের মধ্যে ৬ ভাই থাকেন উখিয়ার ৩টি ক্যাম্পে। থাইংখালী তাজনিমারখোলা ক্যাম্পে থাকেন আলী আহাম্মদ ও আলী হোসেন, বালুখালী ১নং ক্যাম্পে রয়েছেন মো. হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম এবং বালুখালী ২নং ক্যাম্পে রয়েছেন মো. ফয়সাল ও মো. হাছান। আর ১ ভাই থাকেন থাইল্যান্ডে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, ভিডিওটি আমি দেখেছি। তার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। তবে যতটুকু জানতে পেরেছি তিনি বাংলাদেশে থাকেন না। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনা-বিজিপির নির্যাতনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন সময় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১১ লাখ। বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার কারণে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ উপাধিতে ভূষিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।