পেপারবুক দুই থেকে চার মাসের মধ্যে : আইনমন্ত্রী

26

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের জন্য পেপারবুক তৈরিতে আরও দুই থেকে চার মাস লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ মামলার রায় ঘোষণার ১০ মাস পর ও ভয়াবহ ওই হামলার ১৫ বছরপূর্তির দিনে বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এটুকু বলতে পারি যে, এই মামলার পেপারবুক তৈরির জন্য যে আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম শুরু, সেটা শুরু হয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত পেপারবুক তৈরি করে মামলা প্রস্তুত করে কার্যতালিকায় এনে আপিল শুনানি শুরু করা’। এর মধ্যে ১০ মাস চলে গেছে স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেন, ‘এই সময়টুকু লাগে। আমি আপনাদেরকে বলতে পারি যে, দুই মাস থেকে চার মাসের মধ্যে আমার মনে হয় এটা প্রস্তুত হয়ে যাবে। এবছরের মধ্যে শুনানি শুরু হবে’।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে দলটিকে ‘নেতৃত্বশূন্য’ করার চেষ্টার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, তৎকালীন উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদন্ড দেয় বিচারিক আদালত। রায়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদন্ড।
এছাড়া এ মামলার আসামি ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেন ঢাকার এক নম্বর দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন। খবর বিডিনিউজের
বহুল আলোচিত এই মামলায় গত বছরের ১০ অক্টোবর দেওয়া রায়ে ৪৯ আসামির মধ্যে ১৯ জনের ফাঁসি, ১৯ জনের যাবজ্জীবন, ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড হয়। আসামিদের মধ্যে ১৬ জন রয়েছেন পলাতক। রায়ের পর ১০ মাস গড়াতে চললেও পেপারবুক তৈরি হয়নি।
আইনমন্ত্রী বলেন, মামলাটা ডেথ রেফারেন্স হিসাবে হাইকোর্ট বিভাগে চলে গেছে এবং যারা যাবজ্জীবন সাজা পেয়েছেন তারাও আপিল করেছেন। হাইকোর্ট বিভাগের নিয়ম হচ্ছে, ডেথ রেফারেন্স ও আপিল একসাথে শুনানি করা। সেক্ষেত্রে মামলার যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বিজিপ্রেসে পাঠানো হয়। পেপারবুক ছাপা হওয়ার পর মামলা শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়।
এই মামলার আইনজীবী হিসেবে নিজের পরিচয় উল্লেখ করে আনিসুল বলেন, ‘আমি এটুকু বলতে পারি, কাজটি শুরু হয়ে গেছে। আমরা প্রসিকিউশন থেকে দেখব যে, পেপারবুক তৈরিটা তাড়াতাড়ি সম্ভব- এটা যেন হয়’।
এ মামলায় ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৬১ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয় এবং ২০১৮ সাল পর্যন্ত আরও ১৬৪ জনের সাক্ষ্যসহ সর্বমোট ২২৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের তথ্য তুলে ধরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আর সওয়াল-জওয়াব তো আছেই। সব মিলিয়ে একটি বৃহৎ মামলা। আমরা যখন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা করেছি। ৬১ জনের সাক্ষীর পেপারবুক বড় ছিল। আর এ মামলার পেপারবুকতো আরো অনেক বড় হবে। দুই মাস থেকে চার মাসের মধ্যে আমার মনে হয় এটা প্রস্তুত হয়ে যাবে। এ বছরের মধ্যে শুনানি শুরু হবে’।
এ মামলার দন্ডপ্রাপ্ত পলাতকদের ফেরানোর বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সকল সাজাপ্রাপ্ত আসামি যারা বিদেশে আছে। তাদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছি এবং ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।