পেঁয়াজের বিকল্প হতে পারে ‘চিভ’ বলছে বারি

52

সারাদেশে পেঁয়াজের দামে লাগামহীন দৌড়ে মানুষের যখন নাভিশ্বাস, এর বিকল্প হিসেবে চিভ নামে সাইবেরিয়ান এক মশলার কথা বলছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। চিভের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সারা বছর চাষ করা যায়। একবার রোপণ করলে একই গাছ থেকে সারা বছর ফসল মেলে। গাজীপুরের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট- বারির মশলা গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. নূর আলম চৌধুরী বলেন, চিভের স্বাদ অনেকটা পেঁয়াজের মত। বাংলাদেশে এই মশলার চাষযোগ্য উচ্চফলনশীল জাত ‘বারি চিভ-১’ ইতোমধ্যেই অবমুক্ত করা হয়েছে। এর পাতা লিনিয়ার আকৃতির, ফ্ল্যাট, কিনারা মসৃণ, বাল্ব লম্বা আকৃতির। এর ফুল সাদা-পার্পল বর্ণের। এর বৈজ্ঞানিক নাম Allium tuberosum, এটি অ্যামারাইলিডেসি (Amaryllidaceae) পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এর উৎপত্তিস্থল সাইবেরিয়ান-মঙ্গোলিয়ান ও নর্থ-চায়না অঞ্চল।ড. আলম বলেন, চারা লাগানোর ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে ফসল সংগ্রহ শুরু হয়। এর পাতা, কান্ড ও কাঁচা ফুল মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। একবার পাতা-কান্ড কেটে নিলে আবার গজায়। বাড়ির আঙিনায় বা টবেও চাষ করা যায়। বগুড়াসহ কয়েকটি এলাকায় কৃষকদের মাধ্যমে এর চাষ সম্প্রসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চাষি ও ভোক্তাদের মধ্যে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। খবর বিডিনিউজের
বাংলাদেশের পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকা পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, মাগুরা, বগুড়া ও লালমনিরহাট এলাকায় চিভ চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানান ড. আলম। তিনি বলেন, যেহেতু একবার রোপণ করলে একই গাছ থেকে সারা বছর ফসল মেলে, সেজন্য তারা বাংলাদেশে এর চাষযোগ্যতার গবেষণায় নামেন। গবেষণা সহযোগী ছিলেন ড. মোস্তাক আহমেদ, ড. আলাউদ্দিন খান ও মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান। গবেষণায় সাফল্য আসে। ২০১৮ সালে আমরা বারি চিভ-১ অবমুক্ত করি। এখন চাষ সম্প্রসারণের পর্যায়ে রয়েছে।
বাংলাদেশে বছরে ১৭ লাখ মেট্রিকটনের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় জানিয়ে তিনি বলেন, আরও প্রায় পাঁচ লাখ মেট্রিটনের বেশি ঘাটতি রয়েছে। চিভ সেই ঘাটতি মেটাতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এটি একটি জনপ্রিয় মশলা। চিভের গুণাগুণ সম্পর্কে ড. আলম বলেন, এটা হজমে সাহায্য করে, রোগ নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া এতে ক্যান্সার প্রতিরোধী গুণাগুণ রয়েছে। আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-২, নায়াসিন, ক্যারোটিন ও খনিজ উপাদান।