পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে পাঁচ ইউনিয়ন কমিটি

57

কর্ণফুলী উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার উদ্যোগ নিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। ২০১৬ সালের মার্চে পাঁচ ইউনিয়নের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম প্রকাশ করে ২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর তিন মাসের মধ্যে কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগ উদ্যোগ না নেয়ায় দুই সদস্যের উপর ভর করে গত সাড়ে ৩ বছর ধরে পরিচালিত হচ্ছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিগুলো।
এছাড়া ছিল না ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কোন কার্যক্রম। এ কারণে নতুন নেতৃত্বের সৃষ্টি হয়নি। তৃণমূল পর্যায়ে ঝিমিয়ে পড়ে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম। এরই মাঝে সাড়ে ৩ বছর পর ইউনিয়ন কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগ। সে লক্ষে ওয়ার্ড কমিটিগুলো গঠন করা হচ্ছে।
তবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটিতে যারা বর্তমানে সভাপতি এবং সাংধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন তারা স্বপদে বহাল থাকবেন। ইউনিয়ন কমিটিতে স্থান পাওয়া সদস্যদের সমন্বয়ে ইউনিয়ন কমিটির অন্যপদগুলো পূরণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ অক্টোবর সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমদের স্থলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরীকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির অধীনে ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন কমিটি গঠনের উদ্যোগের পর কর্ণফুলী উপজেলায় নেতাকর্মীদের মাঝে চাঙ্গাভাব বিরাজ করছে। পদ পেতে চলছে লবিং আর তদবির।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক পদে হায়দার আলী রনি নির্বাচিত হন। আর ২০১০ সালে গঠন করা হয় পাঁচ ইউনিয়নে আহবায়ক কমিটি। এসব কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়া ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ২০১৪ সালের ১২ অক্টোবর থানা ও ইউনিয়নের সকল কমিটি বিলুপ্ত করে থানা এডহক কমিটি ঘোষণা করে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। এরপর দেড় বছর পর ২০১৬ সালের মার্চ মাসে পাঁচ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।
গত ২০১৬ সালে ঘোষিত ৫ ইউনিয়নের কমিটিতে শিকলবাহায় সভাপতি পদে দিদারুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক পদে আবদুল করিম ফোরকান, চরপাথরঘাটা ইউনিয়নে সভাপতি পদে সৈয়দ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে জসিম উদ্দিন, চরলক্ষ্যা ইউনিয়নে সভাপতি পদে রফিক আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ, জুলধা ইউনিয়নে সভাপতি পদে আমির আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে রফিক আহমদ চেয়ারম্যান এবং বড় উঠান ইউনিয়নে সভাপতি পদে আমজাদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক পদে আবদুল মন্নান খাঁনকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
এর মধ্যে চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন মারা গেছেন। তার স্থলে কামাল উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়েছে।
কর্ণফুলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটিগুলো দীর্ঘ সময় ধরে গঠন না হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হয়নি। ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কোন কর্মকান্ড নেই। ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠনের কথা বাইরে শুনেছি। তবে আমরা উপজেলা কমিটিতে থাকলেও ফোরামে বা আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি।
তিনি বলেন, দলীয় কর্মকান্ডে গতিশীলতা আনতে যেভাবে হোক ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটিগুলো দ্রুত গঠন জরুরি।
কর্ণফুলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী বলেন, দলীয় কর্মকান্ডে গতিশীলতা আনতে ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সে লক্ষ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ জন করে যাচাই বাছায়ের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এলাকার প্রবীণ, নিবেদিত প্রাণ ও নতুন একনিষ্ট নেতাকর্মীদের বাছাই করার জন্য। এরপর তালিকা প্রণয়নের পর সেখানে স্থান পাওয়াদের তথ্য যাচাই শেষে ওয়ার্ড কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করা হবে। আগামী ১ মাসের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এরপর ইউনিয়ন কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে।
ইউনিয়ন কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ করার ক্ষেত্রে তিন মাসের স্থলে সাড়ে তিন বছর সময় লেগেছে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন ঝামেলার কারণে সময় নষ্ট হয়েছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে ওয়ার্ড কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি আদৌ হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন হবে। এজন্য ওয়ার্ড পর্যায়ে যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাদের সেভাবে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।