পুলিশ হেফাজতে শিক্ষকের মৃত্যুর পর উত্তাল কাশ্মির

41

পুলিশ হেফাজতে এক শিক্ষকের মৃত্যুর পর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির। কাশ্মির পুলিশের দাবি, রিজওয়ান আসাদ পন্ডিত (২৯) নামে রসায়নের ওই শিক্ষককে সন্ত্রাসের মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে আটক করা হয়েছিল। মঙ্গলবার পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যুর খবর জানিয়ে কাশ্মির পুলিশের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে তারা। তবে রিজওয়ানের পরিবারের দাবি ঠান্ডা মাথায় তাকে খুন করেছে পুলিশ। এই ঘটনার জেরে কাশ্মিরের পুলওয়ামায় বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার মানুষ। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে। এছাড়াও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট সেবা। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় ভারতীয় আধা সামরিক বাহিনী সিআরপিএফ-এর গাড়িবহরে আত্মঘাথী হামলায় বাহিনীটির অন্তত ৪০ সদস্য নিহত হয়। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করে। এই ঘটনার জেরে ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢুকে বোমাবর্ষণ করলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ক্রমে উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে আসলেও অশান্ত রয়েছে কাশ্মির।
রিজওয়ানের ভাই মুবাশ্বির আসাদ বলেন, রবিবার গভীর রাতে অবন্তিপুর গ্রামের বাড়ি থেকে তার ভাইকে আটক করে পুলিশ। তিনি বলেন, তখন তারা বলেছিল শিগগিরই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। আমার ভাই কোনওকিছুতেই জড়িত না। এটা ঠান্ডা মাথায় খুন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, পুলওয়ামা হামলার ঘটনাতেই রিজওয়ানকে আটক করা হয়েছিলে। তিনি বলেন, সে বিস্ফোরক বানাতে জানতো বলে আমরা সামান্য কিছু তথ্য পেয়েছিলাম। আর সা¤প্রতিক হামলাতেও তার ভূমিকা ছিল বলে সন্দেহ ছিল। রিজওয়ানের মৃত্যুর পর ভারত-শাস্তি কাশ্মিরে অবরোধ ডেকেছে কাশ্মিরের স্বাধীনতাপন্থী নেতারা। ১৯৮৯ সালে কাশ্মিরে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরুর পর নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে হাজার হাজার কাশ্মিরি জনগনের মৃত্যুর দাবি করে থাকে মানবাধিকার গ্রুপগুলো। তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তা স্বীকার করে না। এমনকি এসব ঘটনাতে কাউকে বিচারের আওতায় আনারও নজির নেই বলে জানান মানবাধিকার কর্মী খুররাম পারভেজ।

ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশি ভারত ও পাকিস্তান তিন বার যুদ্ধে জড়িয়েছে। তার দুটিই কাশ্মিরকে নিয়ে। কাশ্মিরের বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর কেউ কেউ স্বাধীনতার দাবিতে সক্রিয়। আবার কেউ কেউ পাকিস্তানের অঙ্গীভূত হওয়ার পক্ষে।