পুলিশে চাকরি দেয়ার নামে আটকে রেখে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২

41

পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়া কথা বলে এক পোশাককর্মীকে আটকে রেখে তিন দিন ধরে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার এবং ধর্ষিতা তরুণীকে (২১) উদ্ধার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, মহব্বত আলী (২৮) ও শাহাদাত হোসেন রাজু (৩১)।
গতকাল মঙ্গলবার ভোরে ডবলমুরিং থানার ঝর্ণাপাড়া এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করেছে ডবলমুরিং থানা পুলিশ।
ঘটনার শিকার তরুণীর বাড়ি রাঙামাটি জেলায়। তিনি নগরীর কর্ণফুলী ইপিজেডে একটি কারখানায় কাজ করেন বলে জানিয়েছেন নগরীর ডবলমুরিং জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আশিকুর রহমান। তিনি জানান, ধর্ষিত তরুণীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহির হোসেন জানান, ধর্ষিত তরুণীর সঙ্গে এক পুলিশ কনস্টেবলের বিয়ে হয়েছিল। পরে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়। আনুমানিক দুই মাস আগে তরুণীর সঙ্গে শাহাদাতের পরিচয় হয়। তারা একসঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় বেড়াতে যায়। শাহাদাত তরুণীকে জানান, তার সঙ্গে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের পরিচয় আছে। তরুণীকে তিনি পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাইয়ে দেবেন। এতে তাকে আর পোশাক কারখানায় চাকরি করতে হবে না। তার লাইফস্টাইল পাল্টে যাবে।
জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে শাহাদাত তরুণীটিকে নিয়ে নগরীর জেল রোডে আমানত শাহ মাজারে যান। সেখানে শাহাদাত কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাকে জানান, তার স্ত্রী মারা গেছে। মা-হারা দুই সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে আছেন। এজন্য শাহাদাতকে বিয়ে করার জন্য তরুণীটিকে অনুরোধ করেন। শাহাদাতের কান্না দেখে তরুণী রাজি হন। গত ৪ জুলাই শাহাদাত তরুণীটিকে নিয়ে নগরীর চৌমুহনী এলাকায় হক টাওয়ার নামে একটি হোটেলের ৪০৬ নম্বর কক্ষে ওঠেন। সেখানে ৭ জুলাই পর্যন্ত আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করেন।
তিনি আরো জানান, ৭ জুলাই তরুণী শাহাদাতকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। তখন শাহাদাত হোটেলে মহব্বতকে ডেকে আনে এবং তরুণীকে তার বাসায় নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে তরুণীকে বিয়ে করবে বলে প্রতিশ্রæতি দেন। মহব্বত নগরীর ডবলমুরিং থানার মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় একটি বাসায় তরুণীকে নিয়ে যান। সেখানে তরুণীকে একাধিকবার তিনি যৌন হয়রানি করেন। তরুণী ৭ জুলাই রাতে কৌশলে ওই বাসা থেকে পালিয়ে নগরীর চকবাজারে নিজের বাসায় যান।
সোমবার সকালে তরুণী মহব্বতের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার ফেলে আসা পোশাক ফেরত দিতে বলেন। মহব্বত তাকে ডবলমুরিং থানার ঝর্ণাপাড়া এলাকায় যেতে বলেন। সোমবার সন্ধ্যার পর তরুণী গেলে তাকে নিয়ে ঝর্ণাপাড়ায় নাহার বিল্ডিংয়ের নিচতলায় একটি বাসায় ওঠেন। স্থানীয় লোকজন তাদের পরিচয় জানতে চাইলে মহব্বত তরুণীকে তার স্ত্রী পরিচয় দিয়ে নতুন বাসা ভাড়া নিয়েছেন বলে জানান। তরুণীকে বাসায় রেখে মহব্বত বাইরে যান।
এই ফাঁঁকে তরুণীটি পুরো বিষয় বাসার আশপাশের লোকজনকে জানান। তখন স্থানীয়রা ডবলমুরিং থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে। ঝর্ণাপাড়া এলাকায় নিজ বাসা থেকে মহব্বতকেও আটক করে। রাতে মহব্বতের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শাহাদাতকে একই এলাকা থেকে আটক করা হয়।