পুলিশের পকেট কাটতে সময় নিল ৪০ সেকেন্ড!

73

‘আমি মানুষের পকেট থেকে নগদে নিই। আর এতে আমার বিশেষ বাহাদুরি আছে। ধরা পড়লে নগদে মার খাই পাবলিকের। কিন্তু জ্বিনের বাদশা নই।’ জ্বিনের বাদশা হিসেবে পরিচিত নুরুল আমিন (৪৫) পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর এসব কথা বলেন। এ সময় পটিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার নাদিম মাহমুদের পকেট মেরে দেখান সে। নাদিম মাহমুদের পকেট থেকে একটি ৫শ টাকার নোট চুরি করতে তার সময় লাগে মাত্র ৪০ সেকেন্ড। নুরুল আমিন সাতকানিয়া উপজেলার ঢেমশা এলাকার মৃত আমির হোসেনের পুত্র।
উল্লেখ্য, গত রবিবার জ্বিনের বাদশা পরিচয়ে উপজেলার খরনা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রবাসী আবদুস শুক্কুরের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগমের (৩৬) কাছ থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণসহ প্রায় সাত লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। গতকাল শনিবার দুপুরে প্রবাসীর এক আত্মীয় চন্দনাইশ জেলা পরিষদ মার্কেট এলাকায় জ্বিনের বাদশা দলের এক সদস্যকে চিনতে পারেন। এ সময় কয়েকজন মিলে তাকে আটক করে পুলিশকে সোপর্দ করে। পরে চন্দনাইশ থানা পুলিশ পটিয়া থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করে। পটিয়া থানায় আনার পর তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় সে জ্বিনের বাদশা বা ওই দলের কেউ নয় বলে জানান। তবে জিজ্ঞাসাবাদে সে একজন পকেটমার বলে স্বীকার করেন। কেউ কেউ তাকে জ্বিনের বাদশা নামে ডাকে। তার প্রকৃত নাম নুরুল আমিন। পটিয়া থানায় সেকেন্ড অফিসার এসআই নাদিম মাহমুদের কাছে সে দক্ষিণ জেলায় কয়েকজন পকেট মারের তথ্য দেয়। থানায় সে কিভাবে গাড়িতে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা চুরি করে তা দেখান। সে নাদিম মাহমুদের পকেট থেকে ৪০ সেকেন্ডে একটি ৫শ টাকার নোট চুরি করে দেখান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নুরুল আমিন পটিয়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের ছিদ্দিকীয়া আবাসিক এলাকায় থাকত। গত রবিবার জ্বিনের বাদশা সেজে আমিন বিভিন্ন মহিলা ও পুরুষের কাছ থেকে স্বর্ণ ও নগদ টাকা হাতিয়ে নেন। এ কারণে স্থানীয় কাউন্সিলর গোফরান রানা গত সোমবার প্রথমে তাকে আটক করে পটিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। পরে পাওনাদারদের টাকা ও স্বর্ণ বুঝিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করায় তাকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। গতকাল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের এক সদস্য তাকে দেখতে পেয়ে আবারো পুলিশে তুলে দেয়।
পটিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই নাদিম মাহমুদ বলেন, নুরুল আমিনকে আটকের পর পটিয়া থানায় আনা হলে সে নিজেকে পকেটমার হিসেবে দাবি করেন। পকেটমার আমিন ছাড়াও চন্দনাইশ এলাকার আলমগীর ও পটিয়ার বুগাইয়্যা নামের আরো একজন রয়েছে। তারা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরকান সড়কের বিভিন্ন পরিবহনে ওঠে যাত্রীদের কাছ থেকে নানা কৌশলে দুই আঙ্গুলে টাকা নেন।