পুলিশের কড়া নজরদারির মধ্যেও চলছে অবৈধ মাদক ব্যবসা

56

মাদক চোরাচালান বন্ধে সরকার জিরো টলারেন্স ঘোষণার পরও থেমে নেই অবৈধ মাদক ব্যবসা। পত্রিকার পাতা খুললেই ইয়াবাসহ মাদক ধরাপড়ার খবর যেমন পাওয়া যায় তেমনি অবৈধ দেশে তৈরি মাদকের খবরও কমে না। পুলিশ প্রশাসন বিচার বহির্ভূত হত্যা কাÐের পথ বেচে নিয়েও চেষ্টা করে দেখেছে মাদক মুক্ত দেশ গড়ার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে। কিন্তু তাতেও অবৈধ মাদক চোরা চালান বন্ধ হতে দেখা যায়নি। সামাজিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য অবৈধ মাদক ব্যবসার বিষদাঁত ভেঙে দেয়া খুবই জরুরি। ইয়াবা ব্যবসা বন্ধে ইয়াবার গড়ফাদারের ক্রস ফায়ারের আওতায়ও আনা হয়েছে। তাদের অনেককে হত্যা করাও হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি ‘যথাপূর্বং তথাপরং’। কি কারণে মাদক মুক্ত দেশ গড়া সম্ভব হয়ে উঠছে না তা ভালোভাবে খতিয়ে দেখা জরুরি। সরকারের নীতি নির্ধারক মহল বিজ্ঞতার সাথে নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে পারলে দেশে অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীদের নির্মূল করা সময়ের ব্যাপার মাত্র। সর্ষেক্ষেত্রে ভূতের প্রবাদ পরিবর্তন হচ্ছে না দেশে। অসাধু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর গুটি কয়জন সদস্য, তথাকথিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, প্রশাসনিক অসাধু মুষ্ঠিমেয় লোকের হটকারী আচরণের ফলে দেশটিতে অবৈধ মাদক চোরাচালন ও মরণঘাতি মাদক ইয়াবার অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করা যাচ্ছে না। অবাধ অবৈধ মাদক বন্ধ করা না গেলে দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি যুব সমাজের অবক্ষয় বন্ধ করা যাবে না। তার উপর সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বিদেশি মাদক ও ঢুকছে সমুদ্রে পথে। অবৈধ এসব ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তারা মোটা অঙ্কের উপঢৌকন দিয়ে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত ৬ জানুয়ারির দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, আনোয়ারা উপজেলার পারকি বাজার এলাকায় থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২৫২টি বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার করেছে। দু’জনকে আটকও করেছে পুলিশ। এজন্য আনোয়ারা থানার পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু তার পাশাপাশি এ কথাও বলতে হয় যে, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিংবা গুটিকয় অসাধু পুলিশের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে এরকম বহু অবৈধ মাদকের চালান ধরা পড়ছে না। ইয়াবা বিষয়েও বিজ্ঞজনদের একই মন্তব্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে আধুনিক ও জনবান্ধব করার পদক্ষেপের কথা বলেছেন, রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০২০ উদযাপন অনুষ্ঠানে। পুলিশকে জনবান্ধব করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পুলিশের মধ্যে শুদ্ধি অভিযানও চালানো প্রয়োজন বলে মনে করে আইন শৃঙ্খলা বিশেষজ্ঞরা।
মোদ্দা কথা হলো এদেশের সামাজিক অবস্থা স্বাভাবিক রাখতে অবাধ মাদক সেবন এবং অবৈধ মাদক পাচার বন্ধ করার কোন বিকল্প নেই। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে খুবই আন্তরিক। অথচ কি কারণে দেশে অবাধ-অবৈধ মাদক পাচার এখনো বন্ধ হয়নি তা জনগণের বুঝে আসে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাদক বিষয়ে জিরো টলারেন্স কেন ব্যথতায় পর্যবশিত হতে চলেছে তা সংশ্লিষ্টদের ভালোভাবে খতিয়ে দেখা জরুরি। কয়দিন কোন কোন অভিযান নিয়ে মাঠ গরম করে লাভ নেই। কার্যত দুর্নীতি থেকে শুরু করে মাদক বিরোধী অভিযান যেন ঝিমিয়ে না পড়ে এমন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সততা, আন্তরিকতা অব্যাহত থাকুত এমন আশা সমগ্র দেশের মানুষের।