পুনঃনির্বাচন দাবি বিএনপি প্রার্থীর

61

বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম-আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান। গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানালেও নির্বাচন বর্জন না করে ভোটের মাঠেই ছিলেন।
নির্বাচন চলাকালে গতকাল সোমবার বিকেল সোয়া তিনটায় নগরীর নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আবু সুফিয়ান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, শেষপর্যন্ত ভোটে থেকে ইভিএমে কীভাবে কারচুপি করা হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করতে চাই। আবু সুফিয়ান বলেন, এই অথর্ব নির্বাচন কমিশনের অধীনে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে না। এই নির্বাচন প্রমাণ করেছে নিরপেক্ষ তত্ত¡াবধায়ক সরকার ছাড়া ভোটাধিকার আদায় করা যাবে না। এর আগে, দুপুর সোয়া একটায় সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, অনিয়মের জন্য ভোটগ্রহণ স্থগিত করে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পুনঃনির্বাচন চেয়েছেন তিনি। বিকেলের সংবাদ সম্মেলনেও সুফিয়ান একই দাবি করে বলেন, নির্বাচন স্থগিত করে পুনরায় দাবি করছি। তবে এখন নির্বাচন বর্জন করছি না।
তিনি আরও বলেন, ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। নৌকার সমর্থকদের হামলায় ৫০ জন আহত হয়েছেন।
আবু সুফিয়ান বলেন, প্রত্যেক কেন্দ্রের সামনে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা অবস্থান নিয়ে ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখিয়েছে। বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের নামে তামাশা করা হচ্ছে। ভোটের নামে মানুষের ট্যাক্সের টাকা খরচ করার কোনো মানে হয় না। কোনো পরিবেশ না পেয়ে নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
আবু সুফিয়ান বলেন, আমার নিজ কেন্দ্র সিডিএ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজেও খুব বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখেছি। আমি নিজেও অবরুদ্ধ হয়েছি। সিনিয়র আইনজীবী সিরাজুল ইসলামকে আঘাত করা হয়েছে। আরেকটি কেন্দ্রে যুবদলের কয়েকজনকে মারাত্মকভাবে মারধর করা হয়েছে। সিনিয়র অনেক নেতাকর্মীকে মারধর করা হয়েছে। এসব বিষয়ে সকাল ১১টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেননি তারা।
তিনি বলেন, পার্টি ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে আলোচনা করে সময় নিচ্ছি। ১৭০টি কেন্দ্রের মধ্যে অলমোস্ট সব কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের যেতে দেওয়া হচ্ছে না। গোপন বুথে ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা ভোট দিচ্ছেন। এ সব কারণে ভোট স্থগিত করে ফের ভোটের আবেদন করছি।
এ সময় নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে বলেছি। কিন্তু আমরা দেখেছি, প্রশাসনের চোখের সামনে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীরা সেখানে গিয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৫০০ থেকে ১০০০ লোক অবস্থান নিয়েছে। কিছু ছেলে লাইন ধরে ভোট দিচ্ছে। সেখানে বয়স্কদের দেখা যায়নি। ভোট সুষ্ঠু হচ্ছে দেখানোর জন্য এ পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সংসদ সদস্য জাসদ নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হওয়ায় উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ৬ জন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্ব›িদ্বতা হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ এবং বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ানের মধ্যে।