পাহাড় কাটা চক্রকে রুখো

75

অবাধে চলছে পাহাড় কাটা। শহরাঞ্চল থেকে শুরু করে সর্বত্র চলছে পাহাড় কাটার মহোৎসব। পাহাড় সাবাড় করে একদিকে বাড়ি-ঘর নির্মিত হচ্ছে। অন্যদিকে ইট ভাটার পেটে যাচ্ছে পাহাড়-টিলা। কিছুতেই পাহাড় কাটা থামানো যাচ্ছে না। এসব চলছে প্রশাসনের নাকের ডগায়, প্রকাশ্য দিবালোকে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি সংস্থাগুলো ট্রাক প্রতি চাঁদা পাচ্ছে এমন অভিযোগও শোনা যায়। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হলে একটু থামলেও পরবর্তীতে আবারও শুরু হয়। এতে করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারি পাহাড় টিলা, গাছ-গাছালি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ হারাচ্ছে ভারসাম্য। চলছে বায়ু দূষণ ও রোগ বালাই।
সাতকানিয়া ও বাঁশখালী সীমান্তে বিস্তীর্ণ এলাকায় পাহাড়-টিলা সাবাড় করে তৈরি হচ্ছে ইটভাটা। পাহাড়ের মাটি দিয়ে তৈরী হচ্ছে লক্ষ লক্ষ ইট। গত পরশু ওই এলাকায় প্রশাসন অভিযান চালিয়ে তার প্রমাণ পেয়েছে। চূড়ামনি ও লটমনি মৌজায় চলছে এই ধ্বংসযজ্ঞ। প্রশ্ন হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা এ ধ্বংসযজ্ঞ কেন এর আগে প্রশাসনের দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। তাই বলা যায় ‘ডালমে কুচ কালা হ্যায়’। এই কুচ কালাই আমাদের দেশের সর্বনাশ ডেকে আনছে। একটি বিশাল চক্র এই পাহাড় কাটার সাথে জড়িত। তারা নজরদারি সংস্থা ও জনপ্রতিনিধিদের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে এসব আকাম অব্যাহত ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা ও পরিবেশ অধিদপ্তর মাঝে মধ্যে যে অভিযান চালায় তাকে লোক দেখানো বলে সন্তব্য স্থানীয় বাসিন্দাদের। পাহাড়কাটা চক্রের হাত বহু দীর্ঘ। তাদের রয়েছে সন্ত্রাসী বাহিনী ও এলাকার বড় ভাই তথা গড ফাদার। পাহাড় থেকে ট্রাকে ট্রাকে মাটি চলে যাচ্ছে, বসতিতে যাচ্ছে ইট। এগুলো কোথা থেকে যায় তার হদিস নিতে হবে। ইট ভাটাগুলোর ধোঁয়ায় এলাকায় দূষণ বাড়ছে। সৃষ্টি হচ্ছে রোগ। দেখার কেউ নেই। এভাবে চলতে দিলে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে সমস্ত দেশ। সময় থাকতে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নিতে হবে। অবৈধ ইটভাটাগুলো নানা ছাড়পত্র জুটিয়ে নেয় এবং বিদ্যুৎ-গ্যাস সংযোগও পেয়ে যায়। তাই জবাবদিহিতা বাড়াতে আর কার্পণ্য করা যাবে না। আমরা নিজেরা নিজেদের পরিবেশ বিষাক্ত করছি। একটা সময় আসবে পরিবেশ ঠিকই বিগড়ে যাবে। তখন দুর্যোগ মোকাবেলার আর সুযোগ থাকবে না।