পাহাড়ে মৌসুমী ফলের ‘উৎসব’

116

আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, জামরুল, আনারস ইত্যাদি মৌসুমী ফল পাকতে শুরু করেছে। খাগড়াছড়ির পাহাড়ি এলাকায় রসালো এসব ফলের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। সিঁধুরে আম, লিচু, কাঁচাসোনা রঙের কাঁঠালের সমারহ পাহাড়ি জীবনকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে।
প্রখর তাপের মাঝেও হরেক রকম ফলের সমাহার গ্রামীণ জীবনে উৎসবের আমেজ নিয়ে এসেছে। মধু মাস জৈষ্ঠের শুরুতেই হরেক রকম ফলের সমাহার ঘটেছে পাহাড়ি হাট-বাজারগুলোতে। দামে কম হওয়ায় বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে এসব মৌসুমী ফলের।
খাগড়াছড়িতে এবার মৌসুমী ফলের ফলন সন্তোষজনক। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ফলন আরও বেশি হত বলে জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা।
জেলার মৌসুমী ফলের বাজার গুইমারা বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন আকারের একশত আনারস ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, কাঁঠাল ২ থেকে ৪ হাজার টাকা, লিচু ১০০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে এসব ফল কিনে শহরে নিয়ে চড়া মূল্যে বিক্রি করছে।
কাঁঠাল ও আনারসের পাশাপাশি খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলায় এবার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের আম চাষ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি গ্রামেই আম চাষের প্রতিযোগিতা দেখা গেছে। নিজস্ব উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগেও এবার গড়ে উঠেছে আম, লিচুসহ মিশ্র ফলের বাগান। এবছর আম ও লিচুর ফলন ভাল হলেও কলার ফলন সন্তোষজনক নয়। তাই কলার দাম অনেক বেড়ে গেছে।
গুইমারা উপজেলার বড়পিলাক গ্রামের আম চাষি মো. আসাদ গাজী জানান, এবছর খরা হওয়া সত্তে¡ও তার বাগানের ফলন সন্তোষজনক। চলতি বছরে তার বাগান থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার আম বিক্রির প্রত্যাশা করছেন তিনি।
হাফছড়ি এলাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ৪০একর টিলা ভ‚মিতে গড়ে তোলা গ্রীন টার্চ এগ্রো ফার্ম বাগানের মালিক মো. শাহাজ উদ্দিন জানান, এবার তার বাগান থেকে প্রায় ১০০টন আম পাওয়া যাবে। যার আনুমানিক মূল্য ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা। তিনি আরও জানান, এবার ঢাকা শহরের ৪টি স্থানে এই বাগানের আম বিক্রির জন্য স্টল নেওয়া হয়েছে। বাগান থেকে সরাসরি আম নিয়ে এই স্টলগুলোতে খুচরা বিক্রি করা হবে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিম জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মৌসুমী ফলের ফলন ভালো হয়েছে। দেশে ফলের চাহিদার দুই-তৃতীয়াংশ ফল উৎপাদন হয় পার্বত্য অঞ্চলে। বিগত সময় সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হতো। বর্তমানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে পূর্বের তুলনায় ফসল উৎপাদনের মাত্রা কয়েকগুণ বেড়েছে।