পাহাড়ে জুমের ফসল ঘরে তোলায় ব্যস্ত চাষিরা

29

পাহাড়ে এখন ঘরে উঠছে জুমের পাকা ফসল। ধুম লেগেছে পাকা কাটার। দীর্ঘ প্রায় ৯ মাসের পরিশ্রমের বিনিময়ে ফলানো ফসল ঘরে তুলছেন জুমচাষিরা। করোনার কারণে এবার মৌসুমে চাষাবাদে ব্যাহত না হলে ফলন আরও বিস্তর হতো। যতটুকু চাষাবাদ সম্ভব হয়েছে, তাতে ভালোই ফসল ফলেছে। তাই হাসি-খুশী চাষিরা। খোঁজ নিয়ে সরেজমিনকালে এসব তথ্য জানান চাষিরা। খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, বর্তমানে পার্বত্য এলাকায় জুমের পাকাধান কাটছেন জুম চাষিরা। এখন ফসল ঘরে তোলার ধুম।
প্রত্যেক বছর পার্বত্য তিন জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে বিস্তর জুমচাষ হয়। জুমচাষ পাহাড়িদের আদি পেশা। জীবিকার অন্যতম উৎস। এ বছর করোনার কারণে পার্বত্য তিনটি জেলায় জুম চাষে কিছুটা ব্যাহত হলেও চাষাবাদ ভালো হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। জুম চাষিরা পৌষ ও মাঘ মাসে পাহাড়ের ঢালে জঙ্গল সাফ করেন। রোদে শুকিয়ে ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে আগুনে পুড়িয়ে প্রস্তুত করেন জুমেক্ষেত। বৈশাখ ও জেষ্ঠ মাসে পোড়ানো জুমের মাটিতে সূঁচালো দা দিয়ে গর্ত খুঁড়ে একসঙ্গে ধান, তুলা, কাউন, ভূট্টা, ফুটি, চিনার, শিম, যব ইত্যাদি বীজ বপন করেন। জুমজুড়ে ছিটানো হয় তিল, মরিচ, ধনেপাতাসহ ইত্যাদি বীজ। প্রায় ৮-৯ মাস পরিশ্রম শেষে ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে ঘরে ওঠে পাকাধান। তার আগে আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসেই জুমের ফসল তোলা শুরু হয়। শুরুতে পাওয়া যায় মারফা, মরিচ, চিনার, ভূট্টো ইত্যাদি ফসল। ভাদ্র, আশ্বিন ও কার্র্র্র্তিক মাসের মধ্যে পাকা ধান কাটার পর শেষে তুলা, তিল, যব ঘরে তোলা হয় কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসে।
জুম চাষিরা জানান, জুমের পাকা ফসল ঘরে তোলার ভরা মৌসুম চলছে এখন। উপযুক্ত পরিবেশ, মাটির উর্বরাশক্তি ও অনুকুল আবহাওয়ার ফলে এ বছরও জুমে ধানসহ ফসলের ফলন ভালোই হয়েছে। তবে করোনার কারণে এ বছর চাষাবাদে কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় যুগযুগ ধরে চাষাবাদ হয়ে আসছে জুম। জুমে ধান ছাড়াও আবাদ হয় মারফা, চিনার, ফুটি, বেগুন, মরিচ, ধুন্দল, ঢেঁড়শ, কাকড়ল, কুমড়াসহ মিশ্রফসল।