পাসপোর্ট ছাড়া পাইলট কাতারে তদন্তে কমিটি

38

পাসপোর্ট ছাড়া পাইলটকে ইমিগ্রেশনে পার হওয়ার অনুমতি দেওয়ার ঘটনায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করবে ইমিগ্রেশন পুলিশ। এ ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, পাসপোর্ট ছাড়াই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ফজল মাহমুদের বিদেশযাত্রা এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের দায়িত্বে অবহেলার ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব গাজী তারিক সালমন স্বাক্ষরিত এক আদেশে বলা হয়, পাসপোর্ট ছাড়া পাইলট ফজল মাহমুদের দোহা ভ্রমণের কারণ অনুসন্ধান করবে কমিটি। একইসঙ্গে কমিটি শাহজালাল বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার কারণ নিরূপণ করবে। চিহ্নিত করবে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের ত্রুটি। কমিটি জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে। কমিটির আহবায়ক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা বেগম, সদস্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক-৪) মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী। কমিটির সদস্য সচিব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব (রাজনৈতিক-১) মো. জাহাঙ্গীর আলম।
ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্রে জানো গেছে, ইতোমধ্যে এই ঘটনায় চার থেকে পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এছাড়া, সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ইমিগ্রেশন পুলিশের অভিযোগ, বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় পাইলট ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করেননি। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানের পাইলট হওয়ায় ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাও তার বিষয়ে ছিলেন নমনীয়।
এক প্রশ্নের জবাবে ইমিগ্রেশন পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা তদন্ত শুরু করেছি। পাইলট যখন ইমিগ্রেশন পার হয়েছেন, তখন আসলে কি ঘটেছিল? ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা তার কাছে পাসপোর্ট চেয়েছিলেন কিনা? ওই সময়ে থাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাকে এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে’। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
ইমিগ্রেশন পুলিশের বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘ঘটনার পরপরই আমরা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আজ (৭ জুন) বিকালের মধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। আমরা তদন্তের জন্য সবকিছুই আমলে নিয়েছিলাম। তদন্ত প্রায় শেষ’। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
জানতে চাইলে ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ বলেন, ‘ঈদের দিন বিকেলে আমরা রওনা হই। ঈদের দিন হওয়ায় সবাই ফেস্টিভ্যাল মুডেই ছিলেন। ইমিগ্রেশনে আমার পাসপোর্ট দেখতে চাইলে এ ভুলটি আর হতো না। আমি তখনই পাসপোর্ট এনে ফ্লাইটে যেতাম। আসলে আমি যেমন ভুল করেছি, ইমিগ্রেশনও ভুল করেছে’।
প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় অনুসন্ধান করতে ইতোমধ্যে ইমিগ্রেশন পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘পাসপোর্ট ছাড়া কিভাবে পাইলট কাতার গেলেন, আমরা তা জানতে চেয়েছি। বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশকে ইতোমধ্যে এই বিষয়টি খুঁজে বের করার জন্য নির্দেশও দিয়েছি’।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন পাসপোর্ট ছাড়াই বিদেশ সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বিমানের বোয়িং ৭৮৭ উড়োজাহাজ নিয়ে যান ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ। পাসপোর্ট ছাড়া বিদেশ ভ্রমণে যাওয়ায় দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদকে আটকে দেয় কাতার ইমিগ্রেশন।