পাল্টে গেছে রাঙ্গুনিয়ার চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কের দুই পাশের দৃশ্য

108

কাপ্তাই ও রাঙ্গামাটি সড়কের রাঙ্গুনিয়া অংশে সড়কের ফুটপাত দখল করে নির্মানাধীন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে অভিযানে নামলেন উপজেলা প্রশাসন। গত ১৫ দিনে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে নির্বাহী হাকিম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান কাপ্তাই ও রাঙ্গামাটি সড়কের রাঙ্গুনিয়া অংশের ১০ স্থানে দুইশ টি অবৈধ কাঁচা ও পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করেছেন। ভেঙ্গে দিয়েছেন অন্তত ৬০ টি সাইনবোর্ড। ফলে র্দশ্যমান হয়েছে দীর্ঘদিন দখলে থাকা অবৈধ ফুটফাত। সড়কের দুই পাশ এখন খালি জায়গা। যানজট মুক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কের গুরত্বপূর্ণ স্থান। যা এতদিন জন ভোগান্তি ছিল চরমে। এ ধরনের উচ্ছেদ হবে কেউ ভাবেনি। সড়করে দুই পাশ দখলেনিয়ে বছরের পর শত শত নানা স্থাপনা গড়ে তুলে প্রভাবশালীরা ভোগ দখল করে আসছে। সড়কের দুই পাশে পাকা স্থাপনা গড়ে তুলে পাকা দালান করেছে অনন্ত দেড়শ প্রভাবশালী ভূমি দস্যু। এদের দখলে থাকা দোকান স্থাপনার কারণে সড়কে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হতো। জনজীবনে নেমে আসে সিমাহীন দুর্ভোগ। সরকার আসে সরকার যায় রাঙ্গুনিয়ার গুরুর্ত্বপূর্ণ সমস্যা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে কখনও এভাবে ব্যবস্থা নেয়নি। প্রসাশন কঠোর অবস্থানের ফলে রাঙ্গুনিয়ার গুরুর্ত্বপূর্ণ সমস্যা নিরসন হতে চলেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে রাঙ্গুনিয়ায় দখলবাজ ভূমি দুস্যুরা সরকারি জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মান করতে সাহস পাবেনা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক সমাজসেবী জানান, উচ্ছেদ কৃত জায়গা আবার যেন দখলে না যায় সেদিকে প্রশাসনকে সজাগ থাকতে হবে। দখলকারীরা বলে বেড়াচ্ছেন কয়েকদিন পর আবারো স্থাপনা হবে। আমাদের জায়গা আমরা আবার দখলে নেব।
অপর দিকে একেবারেই নিরব রয়েছে সড়ক ও জনপথ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড। তাদের জায়গায় উচ্ছেদ অভিযান হলেও উচ্ছেদ অভিযানে তাদেরকে দেখা যায়নি। বছরের পর বছর তাদের নিরবতার কারণে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের দুই পাশ দখল করার সাহস পায় এলাকার পরিচিত ভূমিদস্যুরা। চন্দ্রঘোনা লিচুবাগান ফেরিঘাট সড়কের দুই পাশ ভুমিদস্যুরা দখল নিয়ে শত শত অবৈধ স্থাপনা পাকা দালান করেছে দীর্ঘদিন ধরে। এসব জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ডর পরিত্যক্ত কোটি কোটি টাকার মূল্যবান জায়গায় দখল করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডর সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিদের কোন হস্তক্ষেপ নেই। এছাড়াও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২শত কোটি টাকার মুল্যবান জায়গা দখলে নিয়েছে ব্রিকফিল্ড বস্তি ও পরিত্যাক্ত ব্রিকফিল্ড এলাকা। লিচুবাগানে দুটি মাছ বাজার। মাছ বাজার দুটি সিন্ডকেট করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় দোকান নির্মান করে লাখ লাখ টাকার দোকান থেকে ভাড়া ও দোকানীদের থেকে অগ্রিম ছালামী টাকা ভোগ করে আসছে। এখানে লাখ লাখ মুল্যে সরকারি জায়গা দিন দুপুরে বিক্রি করে আসছে এলাকার পরিচিত ৩০/৩৫ জন ভূমিদস্যু। ওয়ান ইলাভেনের সময় এসব স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও ওয়ান ইলেভেন সরকার চলে যাওয়ার পর আবারও দখলবাজরা জায়গা দখলে নিয়ে নানা স্থাপনা গড়ে তুলেছে। সময় এসেছে এসব সরকারি জায়গা উচ্ছেদ করে নিয়ন্ত্রনে আনার। চট্রগাম বাস মিনিবাস চালক সমিতির সভাপতি আবদুর কুদ্দুছ জানান, সড়কের দুই পাশ দখল মুক্ত হওয়ায় এখন আর ভয়াবহ যানজট হবেনা। যে কোন যানবাহন চলাচলে সহজ হবে। ফুতফাত যেন আবার দখলে না যায় সেদিক দেখতে হবে প্রশাসনকে। গত সোমবার ১১ ফেব্রæয়ারি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাপ্তাই সড়কের চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের লিচু বাগান, মরিয়ম নগর চৌমুহনী ও রোয়াজারহাট এলাকায় নির্মিত ও নির্মানাধীন ৪০টি স্থাপনা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেন ইউএনও।
এ সময় হাইওয়ে আইনে ৭টি দোকানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গত ১৫ দিনে কাপ্তাই সড়কের শান্তির হাট, ইছাখালী, গোডাউন, রোয়াজারহাট, মরিয়ম নগর চৌমুহনী, চন্দ্রঘোনা লিচু বাগান বাস ষ্টেশন, রাঙ্গামাটি সড়কের রাজা নগর ও ইসলামপুর ইউনিয়নে দুইশটি নির্মানাধীন, ফুটপাত দখল করা কাঁচা ও পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করেন। আদালতকে সহযোগিতা করেন নির্বাহী হাকিম ও সহকারি কমিশনার(ভূমি) পূর্বিতা চাকমা ও রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ। ইউএনও মো. মাসুদুর রহমান বলেন, সড়ক দখল করে দোকানের মালামাল বিক্রি করার দায়ে হাইওয়ে আইনে চন্দ্রঘোনা লিচু বাগানে মো. ফজলুর রহমান, মো. হাছান ও মো. লোকমানকে ৫ হাজার টাকা করে ১৫ হাজার টাকা, মো. ইউনুছ, মো. এনাম ও মো. ফরিদকে ১০ হাজার টাকা করে ৩০ হাজার টাকা ও মরিয়ম নগর চৌমুহনী এলাকায় মো. বাদশা নামে এক দোকানদারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সড়কে যানজটের মূল কারন হচ্ছে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠা অস্থায়ী দোকান ও স্থাপনা। এসবের কারনে সড়কে শৃঙ্খলা নেই। জনকল্যানে প্রতিটি সড়কের ফুটপাত দখল করে নির্মানাধীন স্থাপনা উচ্ছেদ করতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।