পার্বত্যাঞ্চলে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে গাইডলাইন তৈরি হচ্ছে

44

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে নতুনভাবে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে একটি গাইড লাইন তৈরির কাজ চলছে। জন নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে যেখানে প্রয়োজন সেখানে পুলিশ ও বিজিবি সদস্য বৃদ্ধি করে সেবা দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ি রামগড়ে নবনির্মিত থানা ও চারতলা বিশিষ্ট ব্যারাক ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি এসব কথা বলেন।
থানা ভবন উদ্বোধন শেষে জেলা পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান পিপিএম-সেবা এর সভাপতিত্বে রামগড় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ আয়োজিত মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসীরা যদি ভুল স্বীকার করে আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দেয় তাহলে আমরা ভেবে দেখবো। পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে আমরা সব উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। সুন্দরবনের জলদস্যুরা ক্ষমা চেয়ে আত্মসমর্পণ করেছে। যারা করেনি তাদের নির্মম পরিণতি হয়েছে।
দেশে মাদকের ভয়াবহতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, দেশে ৮০ লক্ষ মাদকসেবী রয়েছে। আমাদের দেশে মাদক এখন যুব সমাজকে ধ্বংস করছে। মাদকমুক্ত সমাজ গড়া সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খাগড়াছড়ি আমার প্রিয় একটি জেলা। এখানে অনেকবার এসেছি। পাহাড়ের অপার সৌন্দর্যমন্ডিত এমন এলাকা খুব কমই দেখেছি। কিন্তু এই পাহাড়ে কেন এত অশান্তি, কেন এত বিভ্রান্তি তা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাঙ্গামাটিতে যে বৈঠক হবে সেখান থেকে বিস্তারিত জানবো। পাহাড়ে কী নেই, কীসের অভাব। সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। তারপরও কেন রক্তের হোলি হবে, অশান্তি হবে, তা খতিয়ে দেখবো।
তিনি আরো বলেন, ঐতিহ্যবাহী রামগড় জেলা বাস্তবায়নের দাবি যৌক্তিক। আপনারা প্রধানমন্ত্রীর নিকট আসেন আমি সুপারিশ করবো।
রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ফরহাদ এর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, খাগড়াছড়ির উপজাতীয় শরনার্থী ট্রাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ বাসন্তী চাকমা, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, রামগড় উপজেলা চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী, রামগড় পৌর মেয়র শাহজাহান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন আহব্বায়ক কাজী নুরুল আলম আলমগীর, রামগড় পুলিশিং কমিটির সভাপতি মংপ্রু চৌধুরী সহ প্রমুখ।
ভবন উদ্বোধন কালে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. শাফিনুল ইসলাম, গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শাহরিয়ার জামান। এসময় পুলিশ ও বিজিবি’র উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র, হেডম্যান-কার্বারী, জনপ্রতিনিধি, জেলা ও উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, পাজেপ সদস্য পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল, জুয়েল চাকমা, শতরূপা চাকমাসহ দলীয় নেতাকর্মীরা এতে অংশ নেয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর বিগত সরকারের মেয়াদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন আসাদুজ্জামান খান এমপি রামগড় থানা কাম ব্যারাক ভবনের ভিক্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। গণপূর্ত বিভাগের বাস্তবায়নে ৭ কোটি ৩৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা ব্যয়ে চলতি বছরের জুনে নির্মাণ কাজ শেষ করে সংশ্লিষ্টদের নিকট হস্তান্তরের পর গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।