পানির অভাবপূরণ ও মাছচাষে লামায় পতিত পুকুর খনন

35

পাহাড়ি এলাকায় পানির অভাব পূরণ ও মাছ চাষের আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষে বান্দরবানের লামা উপজেলায় পতিত পুকুর পুনঃখননের উদ্যোগে নিয়েছে বেসরকারি সংস্থা কারিতাসের এগ্রো ইকোলজি প্রকল্প। উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি দরদরী, তেলিভিটা ও শীলেরতুয়া এলাকায় তিনটি পুকুর পুনঃখনন ও একটি বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি। এসব পুকুর পুনঃখনন হলে এলাকায় মাছের অভাব, কৃষিকাজ ও দৈনন্দিন গৃহস্থলীর কাজে ব্যবহৃত পানি সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, সাধারণত বছর জুড়ে পাহাড়ি এলাকায় পানি সংকট থাকে। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে ঝিরি, ঝর্না, পুকুর, নদীর পানি শুকিয়ে যায়। এ কারণে পাহাড়ি এলাকায় পানি সংকট আরো তীব্র আকার ধারণ করে। ফলে পানির জন্য স্থানীয়দেরকে দিকবিদিক ছুটাছুটি করতে হয়। তাই পানি সংকট নিরসনে রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পতিত পুকুর পুনঃখননের উদ্যোগ নেয় কারিতাসের এগ্রো ইকোলজি প্রকল্প।
এ জন্য গঠন করা হয় পাঁচ বছর মেয়াদি প্রতি পুকুর ভিত্তিক ১৫ সদস্য বিশিষ্ট ৩টি মৎস্যচাষি দলও। এ সদস্যগণ পুকুরে মাছ ও হাঁস চাষের মাধ্যমে আগ্রহ সৃষ্ট্রি পাশাপাশি নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলতে পারবেন। ইতিমধ্যে দুইটি পুকুর পুনঃখননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে তেলিভিটা পুকুর পুনঃখনন কাজ চলছে। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা আনুষ্ঠানিকভাবে এ পুকুর খনন উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রকল্পের কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলেন, ইতিমধ্যে পুনঃখননকৃত পুকুরের উপকারভোগীদের মাছ ও হাঁস চাষের ওপর প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।
তেলিভিটা পতিত পুকুরের মালিক শাহ আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার পুকুরটি অকেজো পড়েছিল। বর্ষা মৌসুমে পুকুরে পানি থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে মোটেও পানি থাকতনা। আশপাশে আর কোন পুকুর কিংবা জলাশয় না থাকায় এলাকার মানুষকে তীব্র পানি সংকটে ভুগতে হত।
পরে এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে কারিতাসের এগ্রো ইকোলজি প্রকল্প কর্মকর্তারা পুকুরটি পুনঃখননের উদ্যোগ নেন। আশা রাখি পুকুরটি খননের পর মৎস্য চাষিদল সদস্যের পাশাপাশি এলাকার শতশত মানুষ এর সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এ বিষয়ে রুপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা বলেন, পাহাড়ি এলাকায় তিনটি পুকুর পুনঃখনন ও একটি বাঁধ নির্মাণ করা হলে এলাকায় কিছুটা হলেও পানি সংকট নিরসন হবে। কারিতাসের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
পতিত পুকুর পুনঃখননের সত্যতা নিশ্চিত করে প্রকল্পের উপজেলা মাঠ কর্মকর্তা মো. মামুন সিকদার বলেন, তিনটি পুকুর পুনঃখননের পর ১৫ জন দরিদ্র মানুষ দিয়ে দল গঠন করে পাহাড়ের পাদদেশ বাঁধ স্থাপনের মাধ্যমে পানি অভাব পূরন ও মাছ চাষে আগ্রহ তৈরির লক্ষ্যে একটি বাধ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে।