পাকিস্তানে সিন্ধু নদের অববাহিকা পরিদর্শনে যাচ্ছে না ভারত

77

নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানে গিয়ে সিন্ধু নদের অববাহিকা পরিদর্শন কর্মসূচি স্থগিত করেছে ভারত। রবিবার নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। এ মাসেই ভারতীয় দলের পাকিস্তানে সিন্ধু অববাহিকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্ট পোস্টের প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।
গত বছর ২৯-৩০ আগস্ট লাহোরে স্থায়ী সিন্ধু কমিশনের ১১৫-তম বৈঠকে দু’দেশে গিয়ে অববাহিকা পরিদর্শনে রাজি হয়েছিলেন ভারত ও পাকিস্তানের কমিশনাররা। সে অনুযায়ী গত বছরের অক্টোবর মাসেই পাকিস্তানি দলের ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু জম্মু ও কাশ্মিরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের কারণে সেই সফর বাতিল হয়ে যায়। অবশেষে গত জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে চন্দ্রভাগা অববাহিকার বিভিন্ন প্রকল্পগুলি পরিদর্শন করে যায় পাকিস্তানি দলটি। উপদেষ্টাদের সঙ্গে নিয়ে নির্মাণাধীন পাকাল দুল, রাতলে, লোয়ার কালনাই ও বাগলিহর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ঘুরে দেখেন পাকিস্তানি সিন্ধু কমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ মেহের আলি শাহ ও ভারতীয় কমিশনার পি কে সাক্সেনা।
এরপর পাকিস্তানি কমিশনারের আমন্ত্রণে ভারতীয় দলটির এ মাসেই প্রতিবেশী দেশে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যেই গত ১৪ ফেব্রæয়ারি পুলওয়ামায় ভারতের আধা সামরিক বাহিনীর ওপর পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ ই মোহাম্মদের হামলাকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এই উত্তেজনার মধ্যে ভারতীয় দলের পাকিস্তান সফর সম্ভব নয় বলে ফার্স্ট পোস্টকে জানিয়েছেন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। তবে সফরটি একেবারে বাতিল করা হচ্ছে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। সরাসরি দিনক্ষণের কথা উল্লেখ না করে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের মার্চ মাসের মধ্যে সিন্ধু অববাহিকা পরিদর্শনে পাকিস্তানে যাবে ভারতীয় দল।
উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তির আট নম্বর ধারা অনুযায়ী, দুই দেশের কমিশনারদের প্রতি পাঁচ বছরে একবার নদী অববাহিকা পরিদর্শন করা বাধ্যতামূলক। এবার সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২০ সালের মার্চ মাসে। তাই আরও এক বছর সময় রয়েছে ভারতের হাতে। এছাড়া চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের কমিশনারকেই বছরে একবার ভারত, আরেকবার পাকিস্তানে বৈঠকে মিলিত হতে হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী, পূর্ব দিকের তিনটি নদী ইরাবতী, বিপাশা এবং শতদ্রুর জল ভারতের জন্য সংরক্ষিত। সিন্ধু, চন্দ্রভাগা ও বিতস্তা নদীর জলে অধিকার রয়েছে পাকিস্তানের।